শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা নীতিমালা এবং পদ্ধতি (Disciplinary Action Policy and Procedure)


শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা নীতিমালা এবং পদ্ধতি 

(Disciplinary Action Policy and Procedure)

উদ্দেশ্যঃ 

শরীফ গ্রুপ সর্বদা বাংলাদেশ শ্রম আইনকে শ্রদ্ধা করে। কারন আমাদের কারখানার সমস্ত কার্যক্রম বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ অনুসারে পরিচালিত হয়। শ্রম আইন অনুযায়ী কারখানা পরিচালিত করে সকলের জন্য সুষম কাজের পরিবেশ নিশ্চিত কল্পে শরীফ গ্রুপ বদ্ধ পরিকর। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬, অনুযায়ী শরীফ গ্রুপ শৃংখলা মূলক ব্যবস্থা নীতিমালা এবং প্দ্ধতি প্রনয়ণ করেছেন। যার ভিত্তিতে শরীফ গ্রুপ শৃংখলা মূলক ব্যবস্থা নীতিমালা এবং পদ্ধতি অনুসারে শৃংখলা মূলক ব্যবস্থা পরিচালনা করে থাকেন। তাই কোন অবস্থাতে যেন কারও মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন না হয়, কেউ যেন কারও সহিত খারাপ আচরণ বা অসদাচরণ করতে না পারে সেই লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করা শরীফ গ্রুপ কর্তৃপক্ষের একটি প্রতিশ্রুতি। 

উদ্দেশ্যঃ 

শরীফ গ্রুপের প্রত্যেক কারখানার সুন্দর মনোরম কর্ম পরিবেশ রক্ষা, একতা, সহনশীলতা, বিশ্বস্থতা, ন্যায় পরায়ণতা, উৎপাদনশীল মানসিকতা এবং নিয়ম শৃংখলা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে শৃংখলা মূলক ব্যবস্থা নীতিমালা এবং প্রদ্ধতি প্রনয়ণ করেছেন। কারখানায় কর্মরত সকল শ্রমিক-কর্মচারীদের মাঝে অসন্তুষ্টি, ভুল বোঝাবুঝি বা পারষ্পরিক দ্বন্ধের অবসান ঘটিয়ে সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ আনয়ণ করা। কারখানায় সার্বক্ষনিক একটি আনন্দঘন কর্মমূখর পরিবেশ বজায় রাখা, যা উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সহায়ক ভ‚মিকা পালন করতে পারে, তা নিশ্চিত করা।  একটি কার্যকর ও প্রয়োগিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নীতিমালা এবং পদ্ধতি কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিক কর্মচারীদের মাঝে শৃংখলা মূলক কর্ম পরিবেশ বজায় রাখার  উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

নীতিমালাঃ 

শরীফ গ্রুপ কর্তৃপক্ষ যে কোন ধরনের অসদাচরণের দায়ে অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সমাধান করতে বদ্ধ পরিকর এবং বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬, অনুযায়ী শৃংখলা মূলক ব্যবস্থা পরিচালিত করে থাকেন। শৃংখলা মূলক ব্যবস্থা নীতিমালা এবং পদ্ধতি নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অনুসরণের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।

শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের পদ্ধতিঃ

প্রথম স্তরঃ 
[ কোন শ্রমিক, কর্মচারী বা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ লিখিত হতে হবে।
[ অভিযোগের একটি কপি অভিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রদান করতে হবে এবং জবাব দেওয়ার জন্য অন্তঃত     সাতদিন (৭) সময় দিতে হবে। 
[ শুনানীর সুযোগ দিতে হবে।
[ অভিযোগের সময়, তারিখ এবং স্থান সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।
[ অভিযোগের সুনির্দিষ্ট তথ্য উপাত্ত উল্লেখ থাকতে হবে।
[ অভিযোগকারীর স্বাক্ষর থাকতে হবে।
[ অভিযোগটি বিভাগীয় প্রধান কর্তৃক স্বাক্ষরিত হতে হবে।
[ তদন্তের পর তাহাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

দ্বিতীয় স্তরঃ 
অভিযোগের ক্ষেত্রে উপধারা ৪/খ অনুযায়ী নিম্নলিখিত কাজ বা বিষয়গুলি খারাপ আচরণ বা অসদাচরণ বলিয়া গণ্য হইবে- 
ক) উপরস্থের কোন আইনসংগত বা যুক্তিসংগত আদেশ মানার ক্ষেত্রে এককভাবে বা অন্যের সঙ্গে সংঘবদ্ধ  হইয়া ইচ্ছাকৃতভাবে অবাধ্যতা। 
খ) মালিকের ব্যবসা বা সম্পত্তি সম্পর্কে চুরি, প্রতারণা বা অসাধুতা।
গ) মালিকের অধীন তাহার নিজের বা অন্য কোন শ্রমিকের চাকুরী সংক্রান্ত ব্যাপারে ঘুষ গ্রহন বা প্রদান।
ঘ) বিনা ছুটিতে অভ্যাসগত অনুপস্থিতি অথবা ছুটি না নিয়া একসঙ্গে দশদিনের (১০) অধিক সময় অনুপস্থিতি।
ঙ) অভ্যাসগত বিলম্বে উপস্থিতি।
চ) প্রতিষ্ঠানে প্রযোজ্য কোন আইন, বিধি বা প্রবিধানের অভ্যাসগত লংঘন।
ছ) প্রতিষ্ঠানে উচ্ছৃংখল বা দাঙ্গা হাঙ্গামামূলক আচরণ বা শৃংখলা হানিকর কোন কর্ম।
জ) কাজে কর্মে অভ্যাসগত গাফিলতি।
ঝ) প্রধান পরিদর্শক কর্তৃক অনুমোদিত চাকুরী সংক্রান্ত শৃংখলা বা আচরণসহ যে কোন বিধির অভ্যাসগত লংঘন।
ঞ) মালিকের অফিসিয়াল রেকর্ডের  রদবদল, জালকরন, অন্যায় পরিবর্তন, উহার ক্ষতিকরণ বা উহা হারাইয়া ফেলা।

ধারা ২৩ অনুযায়ী অসদাচরণ এবং দন্ড প্রাপ্তির ক্ষেত্রে শাস্তিঃ
যদি কোন শ্রমিক/কর্মচারী/কর্মকর্তা কারখানায় উপরে বর্ণিত অসদাচরন বা খারাপ আচরণে লিপ্ত হয় তাহলে বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ২৩ ধারা অনুসারে নিন্মোক্ত নীতিমালা সমূহ অনুসরণ করে তাহার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়।
 
১. কোন শ্রমিককে বিনা নোটিশে বা নোটিশের পরিবর্তে বিনা মজুরীতে চাকুরী হইতে বরখাস্ত করা হয় না। যদি তিনি-
ক. কোন ফৌজদারী অপরাধের জন্য দন্ডপ্রাপ্ত হন অথবা
খ. ধারা ২৪ এর অধীনে অসাদাচরনের অপরাধে দোষী সাব্যস্থ হন ।

২. অসাদাচরনের অপরাধে দোষী সাব্যস্থ কোন শ্রমিককে উপধারা (১) এর অধীনে চাকুরী হইতে বরখাস্তের পরিবর্তে বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নিম্নলিখিত যে কোন শাস্তি প্রদান করা হয়। যথা -
(ক) অপসারন
(খ) নীচের পদে, গ্রেডে বা বেতন ষ্কেলে অনধিক ১ বৎসর পর্যন্ত আনয়ন
(গ) অনধিক ১ বৎসরের জন্য পদোন্নতি বন্ধ।
(ঘ) অনধিক ১ বৎসরের জন্য মজুরী বৃদ্ধি বন্ধ।
(ঙ) জরিমানা।
(চ) ধারা ২৪/২ অনুসারে অনধিক ৬০ দিন পর্যন্ত সাময়িক বরখাস্ত কালীন খোরাকী ভাতা পাইবে। 
(ছ) ভৎসনা ও সতর্কীকরন।

৩. উপধারা-১ এর অধীনে বরখাস্তকৃত অথবা উপধারা-২(ক) এর অধীনে অপসারিত কোন শ্রমিককে যদি তাহার চাকুরীর মেয়াদ অন্যুন এক বৎসর হয়, শরীফ গ্রুপ কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরন বাবদ প্রত্যেক সম্পূর্ন চাকুরীর বৎসরের জন্য ১৪ দিনের মজুরী অথবা গ্রাচ্যুইটি, যদি প্রদেয় হয় যাহা অধিক হইবে তাহা প্রাদান করে থাকে ।

তবে শর্ত থাকে যে, কোন শ্রমিক উপধারা (৪) (খ) এর অধীনে অসদাচরনের জন্য বরখাস্ত করা হইলে কোন ক্ষতিপূরন পাইবে না ।

৪. উপধারা (১) এর অধীন বরখাস্তকৃত কোন শ্রমিক যদি আপীলে খালাস পান, তাহা হইলে তাহাকে তাহার পূর্বতন পদে বহাল করা হয়, অথবা নতুন কোন উপযুক্ত পদে তাহাকে নিয়োগ করা হয়। যদি ইহার কোনটিই সম্ভব না হয়, তাহা হইলে তাহাকে ডিসচার্জকৃত কোন শ্রমিককে প্রদেয় ক্ষতিপূরনের সমান হারে ক্ষতিপূরন প্রদান করা হয়, তবে বরখাস্ত হওয়ার কারনে ইতিমধ্যে প্রাপ্ত ক্ষতিপূরনের টাকা ইহা হইতে বাদ যাইবে ।

বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ সনের ২৪ ধারা অনুসারে শাস্তির পদ্ধতিঃ
ধারা ২৩ এর অধীনে কোন শ্রমিকের বিরুদ্ধে শাস্তির আদেশ প্রদান করা হয় না, যদি না-
(ক) তাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ লিখিতভাবে করা হয় ।
(খ) অভিযোগের একটি কপি তাহাকে দেওয়া হয় এবং ইহার জবাব দেওয়ার জন্য অন্তঃত সাতদিন সময় দেওয়া হয়।
(গ) তাহাকে শুনানীর সুযোগ দেওয়া হয় ।
(ঘ) তদন্তের পর তাহাকে দোষী সাব্যস্থ করা হয় ।
(ঙ) কর্তৃপক্ষ বা ব্যবস্থাপক বরখাস্তের আদেশ অনুমোদন করেন।

এছাড়া বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা  ২০১৫ অনুসারে  অসদাচরণ এবং দন্ড প্রাপ্তির ক্ষেত্রে শাস্তির নিম্নোক্ত পদ্ধতি সমূহ অনুসরণ করা হয়-

(১) কোন শ্রমিকের কোন আচরণ বা কাজ অসদাচরণ কিনা উহা যাচাই করিবার উদ্দ্যেশ্যে মালিক বা তৎকর্তক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা যদি ধারা ২৪ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) অনসারে কোন প্রকার কৈফিয়ত তলব করেন এবং তদ্প্রেক্ষিতে শ্রমিক কর্তক প্রদত্ত জবাব- 

কারন দর্শানো বা ব্যাখ্যাঃ
প্রত্যেক শ্রমিক, কর্মচারী এবং কর্মকর্তাগণের উচিত কোম্পানীর নিয়ম শৃংখলা মেনে চলা। যদি কেহ কোম্পানীর নিয়মশৃংখলার বাহিরে গিয়ে অসদাচরণের দায়ে অভিযুক্ত হন, তাহলে তাহার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উল্লেখপূর্বক কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তি নোটিশের সুনির্দিষ্ট জবাব লিখিতভাবে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরন করবেন। 

তবে শ্রমিক কর্তৃক প্রদত্ত জবাব কর্তৃপক্ষ কর্তৃক
(ক) সন্তোষজনক হইলে অভিযোগ নিষ্পত্তি হইয়াছে বলিয়া গণ্য  হইবে এবং এই বিষয়টি শ্রমিকের পরবর্তী চাকরির ক্ষেত্রে কোন প্রকার প্রভাব ফেলিবে না ; 
(খ) সন্তোষজনক না হইলে মালিক শাস্তি প্রক্রিয়া অনসরণের জন্য ব্যবস্থাপক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তাকে তদন্ত কমিটি গঠনপূর্বক তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করিয়া তাহার নিকট ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করিতে নির্দেশ প্রদান করিবেন।   

তদন্তঃ 
অভিযুক্ত ব্যাক্তির কারন দর্শানোর নোটিশের জবাবের প্রেক্ষিতে যদি কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট না হন , সেক্ষেত্রে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তদন্ত কার্যে উভয় পক্ষ থেকে সমসংখ্যক সদস্যের মাধ্যমে তদন্ত কমিটি গঠন করবেন। যেমন-
১. অনধিক ৬ জন সদস্য সমন্বয়ে উক্ত তদন্ত কমিটি গঠিত হইবে। 
২. তদন্ত কমিটি উপ-কমিটি গঠন করিতে পারিবে।  
৩. উপ-কমিটির রিপোর্ট চ‚ড়ান্তকরণের জন্য তদন্ত কমিটির নিকট পেশ করিবে।  
৪. তদন্ত কমিটি উহার তদন্ত প্রতিবেদন প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্তের জন্য কর্তপক্ষের বরাবরে প্রেরণ করিবে।  
৫. তদন্ত কমিটিতে মালিক পক্ষের প্রতিনিধি মালিক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক উক্ত কারখানা বা প্রতিষ্ঠান হইতে মনোনীত হইবেন।  
৬. তদন্ত কমিটিতে শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি, অভিযুক্ত শ্রমিকের লিখিত প্রস্তাবক্রমে উক্ত কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্য হইতে মনোনীত হইবেন: 
 তবে শর্ত থাকে যে, অভিযুক্ত ব্যক্তির নিম্নোক্ত কাউকে প্রতিনিধি মনোনয়ন করা যাইবে না:

আরও শর্ত থাকে যে, ধারা ২৩ এর উপ-ধারা (৪) এর দফা (খ) ও (ছ) এর অধীন কোন শ্রমিক বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনীত হইলে অভিযুক্ত শ্রমিক বা কর্মচারী ইচ্ছা করিলে তাহার প্রতিনিধি হিসাবে প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণকারী কমিটির কোন শ্রমিক প্রতিনিধিকে তাহার প্রতিনিধি হিসাবে মনোনয়ন করিতে পারিবে।

সাময়িক বরখাস্তঃ
১. কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬, ধারা ২৪ (২) অনুযায়ী  অসদাচরেণর অভিযোগে অভিযুক্ত কারখানায় কর্মরত যে কাউকে সাময়িক বরখাস্ত  করতে পারেন, যদি না বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন থাকে। এই সাময়িক বরখাস্তের মেয়াদ সর্বচ্চো ষাট দিনের অধিক হইবে না। 
২. তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ সাময়িক বরখাস্তকালে মালিক তাহাকে গড় মজুরীর অর্ধেক খোরাকী ভাতা হিসাবে এবং অন্যান্য ভাতা সম্পূর্ণহারে প্রদান করবেন।
৩. উল্লেখ্য যে, কারন দর্শানো নোটিশ বা সাময়িক বরখাস্তের নোটিশ যদি কোন অভিযুক্ত ব্যাক্তি গ্রহন না করেন, তাহলে উক্ত নোটিশ প্রেরন করা হয়েছে বলে গন্য হইবে, যদি নোটিশের একটি কপি অভিযুক্ত ব্যাক্তির স্থায়ী ঠিকানায় রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে প্রেরন করা হয় এবং আর একটি কপি কারখানার নোটিশ বোর্ডে টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়।

বরখাস্তঃ
যদি অভিযুক্ত ব্যাক্তি তদন্ত কার্যে দোষী সাব্যস্ত হন। তাহলে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬, অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ব্যাক্তিকে বরখাস্ত করতে পারবেন। তবে অভিযুক্ত ব্যাক্তিকে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬, অনুযায়ী বরখাস্তের ক্ষেত্রে যাবতীয় প্রাপ্য পাওনাদী পরিশোধ করবেন।

ছাঁটাইঃ
বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬, 
ধারা ২০ (১) অনুযায়ী কোন শ্রমিককে প্রয়োজনের অতিরিক্ততার কারণে কোন প্রতিষ্ঠান হইতে ছাঁটাই করা যাইবে।
(২) কোন শ্রমিক যদি কোন মালিকের অধীনে অবিচ্ছিন্নভাবে অন্যুন এক বৎসর চাকুরীদে নিয়োজিত থাকেন, তাহা হইলে তাহার ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে মালিককে 
ক) তাহা ছাঁটাইয়ের কারণ উল্লেখ করিয়া এক মাসের লিখিত নোটিশ দিতে হইবে, অথবা নোটিশ মেয়াদের পরিবর্তে মজুরী প্রদান করিতে হইবে;
খ) নোটিশের একটি কপি প্রধান পরিদর্শক অথবা তৎকর্তৃক নির্ধারিত কোন কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করিতে হইবে, এবং আরেকটি কপি প্রতিষ্ঠানের দর কষাকষি প্রতিনিধিকে যদি থাকে দিতে হইবে; এবং 
গ) তাহাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ তাহার প্রত্যেক বৎসর চাকুরীর জন্য ত্রিশ দিনের মজুরী বা গ্রাচুইটি যদি প্রদেয় হয়, যাহা অধিক হইবে, প্রদান করিতে হইবে।
(৩) উপধারা (২) এ যাহা কিছুই বলা থাকুক না কেন, ধারা ১৬(৭) এর অধীন ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে উপধারা (২) (ক) এ উল্লেখিত কোন নোটিশের প্রযেজন হইবে না, তবে ছাঁটাইকৃত শ্রমিককে উপ-ধারা (২) (গ) মোতাবেক প্রদেয় ক্ষতিপূরণমূলক বা গ্রাচুইটির অতিরিক্ত হিসাবে আরও পনের দিনের মজুরী দিতে হইবে।

বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬, ধারা ২১ অনুযায়ী ছাঁটাইয়ের এক বৎসরের মধ্যে পুনরায় মালিক শ্রমিক নিয়োগ করিলে সেক্ষেত্রে মালিক ছাঁটাইকৃত শ্রমিকের সর্বশেষ জানা ঠিকানায় নোটিশ প্রেরণ করিয়া তাহাকে চাকুরীর জন্য আবেদন করিতে আহŸান জানাইবেন এবং এই আহŸানে সাড়া দিয়া কোন শ্রমিক পূনরায় চাকুরী পাইবার জন্য আবেদন করিলে তাহাকে নিয়োগের ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেওয়া হইবে এবং এ রকম একাধিক ছাঁটাইকৃত শ্রমিক প্রার্থী হইলে তাহাদের মধ্যে পূর্বের চাকুরীর জষ্ঠ্যেতার ভিত্তিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হইবে। 

চাকুরী হইতে ডিসচার্জঃ
বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬, ধারা ২২ (১) অনুযায়ী কোন শ্রমিককে, কোন রেজিষ্টার্ড চিকিৎসক কর্তৃক প্রত্যায়িত, শারিরিক বা মানসিক অক্ষমতা বা অব্যাহত ভগ্ন স্বাস্থ্যেও কারণে চাকুরি হইতে ডিসচার্জ করা যাইবে।
(২) ডিসচার্জকৃত কোন শ্রমিক অন্যুন এক বৎসর অবিচ্ছিন্নভাবে চাকুরী সম্পূর্ণ করিলে তাহাকে মালিক তাহার প্রত্যেক বৎসর চাকুরীর জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে ত্রিশ দিনের মজুরী অথবা গ্রাচুইটি, যদি প্রদেয় হয়, যাহা অধিক হইবে, তাহা প্রদান করিবেন। বাংলাদেশ শ্রমবিধি ২০১৫ এর বিধি ২৮(২) রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রদান করা প্রত্যয়নে শ্রমিক অথবা মালিক সন্তুষ্ট না হইলে তিনি উহা প্রাপ্তির ১০ (দশ) দিনের মধ্যে পুনরায় পরীক্ষা করিবার জন্য সরকারি মেডিকেল কলেজের অন্যূন সহকারী অধ্যাপকের পদমর্যাদা সম্পন্ন কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিকট পেশ করিতে পারিবেন এবং উক্ত পুনঃপরীক্ষার খরচ আবেদনকারীকে বহন করিতে হইবে।

জরিমানা সম্পর্কে বিশেষ বিধানঃ
কর্তৃপক্ষ অসদাচরনের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যাক্তিকে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬, ধারা ২৩(২) অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে জরিমানা আরোপ করতে পারবেন। তবে ধারা ২৫ অনুযায়ী জরিমানার পরিমান কোনক্রমেই প্রদেয় মজুরীর একদশমাংশের বেশি হবে না এবং পনের বৎসর বয়সের নিচে কাউকে জরিমানা আরোপ করা যাবে না। 
আরোপিত জরিমানা কিস্তিতে বা উহা আরোপের তারিখ হইতে ষাটদিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর আদায় করা যাইবে না। কোন জরিমানা যে অপরাধের জন্য আরোপিত হইয়াছে, সেই অপরাধ সংঘটনের তারিখ হইতে আরোপিত হয়েছে বলে গন্য হইবে।

বরখাস্ত; ইত্যাদী ব্যতিত অন্যভাবে মালিক কর্তৃক শ্রমিকরে চাকুরীর অবসানঃ
বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ২৬ (১) এই অধ্যায়ের অন্যত্র বিধৃত কোন পন্থা ছাড়াও মালিক-
ক) মাসিক মজুরীর ভিত্তিতে নিয়োজিত শ্রমিকের ক্ষেত্রে একশত বিশ দিনের,
খ) অন্য শ্রমিকের ক্ষেত্রে ষাট দিনের,
লিখিত নোটিশ প্রদান করিয়া কোন স্থায়ী শ্রমিকরে  চাকুরীর অবসান করিতে পারিবেন।
(২) এই অধ্যায়ের অন্যত্র বিধৃত কোন পন্থা ছাড়াও মালিক-
ক) মাসিক মজুরীর ভিত্তিতে নিয়োজিত কোন শ্রমিকের ক্ষেত্রে, ত্রিশ দিনের,
খ) অন্য শ্রমিকের ক্ষেত্রে চৌদ্দ দিনের, লিখিত নোটিশ প্রদান করিয়া কোন অস্থায়ী শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করিতে পারিবেন, যদি না এই অবসান যে অস্থায়ী কাজ সম্পাদনের জন্য শ্রমিককে নিযুক্ত করা হইয়াছে উহা সম্পূর্ণ হওয়া, বন্ধ হওয়া, বিলুপ্ত হওয়া বা পরিত্যাক্ত হওয়ার কারণে হয়।
(৩) যে ক্ষেত্রে মালিক বিনা নোটিশে কোন শ্রমিকের চাকুরীর অবসান চান সেক্ষেত্রে, তিনি উপ-ধারা (১) অথবা (২) এর অধীন, প্রদেয় নোটিশের পরিবর্তে নোটিশ মেয়াদের জন্য মজুরী প্রদান করিয়া ইহা করিতে পারিবেন।
(৪) যে ক্ষেত্রে এই ধারার অধীন কোন স্থায়ী শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করা হয় সেক্ষেত্রে, মালিক শ্রমিককে তাহার প্রত্যেক বৎসরের চাকুরীর জন্য ক্ষতিপূরন হিসাবে ত্রিশ দিনের মজুরী, অথবা গ্রাচুইটি, যদি প্রদেয় হয়, যাহা অধিক হইবে, প্রদান করিবেন এবং এই ক্ষতিপূরন এই আইনের অধীন শ্রমিককে প্রদেয় অন্যান্য সুবিধার অতিরিক্ত হইবে। 

শ্রমিক কর্তৃক চাকুরীর অবসানঃ
বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬, ধারা ২৭ (১) কোন স্থায়ী শ্রমিক মালিককে ষাট দিনের লিখিত নোটিশ প্রদান করিয়া তাহার চাকুরী হইতে ইস্তেফা দিতে পারেন। কিন্তু কোন শ্রমিক বা কর্মচারী ত্রিশ দিনের লিখিত নোটিশ প্রদান করিয়া  ইস্তেফা দিলে কর্তৃপক্ষ তাহা গ্রহন করেন।
(২) কোন অস্থায়ী শ্রমিক-
ক) মাসিক মজুরীর ভিত্তিতে নিয়োজিত শ্রমিকের ক্ষেত্রে, ত্রিশ দিনের,
খ) অন্য শ্রমিকের ক্ষেত্রে চৌদ্দদিনের, লিখিত নোটিশ মালিকের নিকট প্রদান করিয়া তাহার চাকুরীর হইতে ইস্তফা দিতে পারিবেন।
(৩) যে ক্ষেত্রে শ্রমিক বিনা নোটিশে চাকুরী হইতে ইস্তফা দিতে চান সে ক্ষেত্রে, তিনি উপ-ধারা (১) অথবা (২) এর অধীন প্রদেয় নোটিশের পরিবর্তে নোটিশ মেয়াদের জন্য মজুরীর সমপরিমান অর্থ মালিককে প্রদান করিয়া ইহা করিতে পারিবেন।
(৪) যে ক্ষেত্রে এই ধারার অধীন কোন স্থায়ী শ্রমিক চাকুরী হইতে ইস্তফা দেন সেক্ষেত্রে, মালিক উক্ত শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ হিসাবে তাহার প্রত্যেক সম্পূর্ণ বৎসরের চাকুরীর জন্য-
ক) যদি তিনি পাঁচ বৎসর বা তদূর্দ্ধ, কিন্তু দশ বৎসরের কম সময় মালিকের অধীন  অবিচ্ছিন্নভাবে চাকুরী করিযা তাহা হইলে, চৌদ্দ দিনের মজুরী;
(খ) যদি তিনি দশ বৎসর বা তদূর্দ্ধ সময় মালিকের অধীনে অবিচ্ছিন্নভাবে চাকুরী করিয়া থাকেন তাহা হইলে ত্রিশ দিনের মজুরী;
অথবা গ্রাচুইটি, যদি প্রদেয় হয়, যাহা অধিক হইবে, প্রদান করিবেন। এবয় এই ক্ষতিপূরণ এই আইনের অধীন শ্রমিককে প্রদেয় অন্যান্য সুবিধার চেয়ে অতিরিক্ত হইবে।

শ্রমিকের অবসর গ্রহনঃ 
বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬, ধারা ২৮(১) এ অধ্যায়ে অন্যত্র যাহা কিছুই উলে­খ থাকুক না কেন, কোন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কোন শ্রমিকের বয়স ৫৭ (সাতান্ন) বৎসর পূর্ণ হইলে তিনি চাকুরী হইতে স্বাভাবিক অবসর গ্রহন করিবেন।
(২) এ ধারার উদ্দেশ্য বয়স যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের সার্ভিস বইয়ে লিপিবদ্ধ জন্ম তারিখ উপযুক্ত প্রমান হিসাবে গন্য হইবে।
(৩) ধারা ২৬ (৪) এর বিধান অনুসারে কিংবা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব চাকুরী বিধি অনুযায়ী অবসর গ্রহনকারী শ্রমিকের প্রাপ্য পাওনাদী পরিশোধ করিতে হইবে। 
(৪) অবসর গ্রহনকারী কোন শ্রমিককে কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত মনে করিলে পরবর্তিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে পারিবেন।

পরিশেষে শরীফ গ্রুপের কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬, কে সম্মান প্রর্দশন পূর্বক তারই আলোকে  শৃংখলা মূলক ব্যবস্থা নীতিমালা এবং প্রদ্ধতি পরিচালনা করে থাকেন। তবে শর্ত থাকে যে, শরীফ গ্রুপের কর্তৃপক্ষ যে কোন সময় বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬, এর আলোকে শৃংখলা মূলক ব্যবস্থা নীতিমালা এবং প্দ্ধতি এর উল্লেখিত বিষয়গুলি পরিবর্তন, পরিবর্ধন এবং সংশোধন করার ক্ষমতা রাখেন। 
এভাবে একজন শ্রমিক যদি খারাপ আচরণ বা অসদাচরনের কারণে দোষী সাব্যস্থ হয় তাহলে উপরোক্ত পদ্ধতির অবলম্বন করে সেই সমস্যা সমাধানে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়।

-------


 

No comments

Powered by Blogger.