মানব সম্পদ নীতিমালা (Human Resource Policy)



সূচী পত্র

১। শ্রম ও শিল্প আইনের উদ্দেশ্যে 
২। আমাদের প্রত্যশা
৩। আমাদের অঙ্গীকার
৪। আমাদের নীতিসমূহ
৫। আমাদের উদ্দেশ্য
৬। প্রত্যাশা পুরনে ও অঙ্গীকার রক্ষায় আমাদের উদ্দ্যোগ
৭। নিয়োগ নীতিমালা 
৮। অদক্ষ কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ পদ্ধতি
৯। অবেক্ষাকাল
১০। নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারদের করনীয় বিষয় সমুহ
১১। কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের দায়িত্ব
১২। মজুরী/বেতন ও অন্যান্য সুবিধাদি সমুহ
১৩। অতিরিক্ত কাজ ও কাজের মজুরী নির্ধারন পদ্ধতি
১৪। কাজের সময়সূচী ও হাজিরা লিপিবদ্ধ করন 
১৫। মোট কর্মদিবস ও সাপ্তাহিক ছুটি
১৬। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নীতিমালা 
১৭। পরিবেশগত নিরাপত্তা
১৮। নিরাপত্তা সংক্রান্ত নীতিমালা 
১৯। ভাঙ্গা নিডল সংরক্ষন নীতিমালা
২০। অগ্নি থেকে নিরাপত্তা
২১। বৈষম্যহীন আচরন নীতিমালা
২২। হয়রানী ও নির্যাতন প্রতিকার নীতিমালা 
২৩। প্রসূতি কালীন ছুটি
২৪। মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগের যোগ্যতা, মেয়াদ এবং গুরুত্বপূর্ন অন্যান্য নিয়মাবলী
২৫। প্রসূতি ভাতা সংক্রান্ত আইন
২৬। সকল ছুটির আবেদনের নিয়মাবলী
২৭। শ্রমিক কর্তৃক অভিযোগ/অসন্তোষ উত্থাপনের বিভিন্ন পদ্ধতি তথা অসন্তোষ নিরসন প্রক্রিয়া 
২৮। অসদাচরন 
২৯। অসদাচরনের শাস্তি /শৃংখলামূলক ব্যবস্থা
৩০। চাকুরী হতে অবসান
৩১। চাকুরী হতে অব্যাহতি
৩২। চাকুরী হতে বরখাস্ত
৩৩। চাকুরী হতে পদত্যাগ
৩৪। হাজিরা লিপিবদ্ধকরন
৩৫। উৎসব বোনাস
৩৬। গ্র্যাচুয়িটি
৩৭। প্রভিডেন্ট ফান্ড
৩৮। হাজিরা বোনাস
৩৯। উৎসব বোনাস
৪০। বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধি
৪১। বিশেষ বেতন বৃদ্ধি
৪২। খাদ্য ভাতা
৪৩। টিফিন ভাতা
৪৪। নৈশ ভাতা
৪৫। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কার্যভাতা/ক্ষতিপূরণ
৪৬। পরিবহন সুবিধা
৪৭। শিক্ষাবৃত্তি (শ্রমিক ও কর্মচারীদের মেধাবী সন্তানদের জন্য)
৪৮। গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স
৪৯। বাৎসরিক চিত্তবিনোদন/ পিকনিক
৫০। কল্যাণ নীতি


মানব সম্পদ নীতিমালা 
(Human Resource Procedure)
(Management Policies & Practice on Compliance and HRD)

একটি প্রতিষ্ঠানের সাফল্য নির্ভর করে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের প্রতি নিষ্ঠা, আন্তরিকতা, মমতা ও কাজ সম্পন্ন করার  দক্ষতার উপর। এই প্রচেষ্টাকে সুষ্ঠু, সুন্দর ও সুচারুরূপে পালন করার জন্য প্রয়োজন হয় একটি মানব সম্পদ নীতিমালার। সুনির্দিষ্ট নিয়ম নীতি ও উদ্যমী উন্নত কর্মপরিবেশ সৃষ্টিতে মানব সম্পদ নীতিমালা কোম্পানীর একটি গুরুত্বপূর্ন দলিল। এই মানব সম্পদ নীতিমালা তৈরী হয় দেশের প্রচলিত শ্রম আইন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আই.এল.ও) রীতিনীতির ভিত্তিতে এবং এর মাধ্যমে মালিক ও নিয়োগীর মধ্যে সু-সম্পর্ক বজায় রাখে।
অত্র প্রতিষ্টানের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের জ্ঞাতার্থে মানব সম্পদ নীতিমালায় উল্লে¬খিত চাকুরির সুযোগ সুবিধা সমূহ উলে¬খ করা হল। সম্পূর্ন মানব সম্পদ নীতিমালা অত্র প্রতিষ্টানের সকল প্রশাসন বিভাগে ও পলিসি বোর্ডে সংরক্ষিত থাকবে। যে কোন কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক প্রয়োজনে উক্ত মানব সম্পদ নীতিমালা দেখতে পাবেন।

০১। শ্রম ও শিল্প আইনের উদ্দেশ্যঃ-
শ্রম ও শিল্প আইনের উদ্দেশ্য হল প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, কল্যাণ, সঠিক কর্ম ঘন্টা, আইনানুগ ছুটি, নিয়োগ পদ্ধতি,চাকুরি হতে অব্যাহতি/বরখাস্ত/ছাঁটাই পদ্ধতি সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা সমূহ নিশ্চিত করা যায় সে সমস্ত বিষয়ে বিশদ ভাবে এই পুস্তিকায় উল্লেখ করা হয়েছে। এই পুস্তিকা পাঠে সংশ্লি¬ষ্ট কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকগন তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে অবগত হবেন এবং  অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে পারবেন।এই নির্দেশাবলীর মধ্যে যে গুলো কর্মক্ষেত্রে সচরাচর প্রয়োগ হয় তার গুরুত্বপূর্ন কিছু কিছু এই নীতিমালায় বর্ণিত হয়েছে। সংশি¬ষ্ট সকলে যতœ সহকারে এই নীতিমালাটি পড়ে কার্যক্ষেত্রে তা প্রয়োগে সচেষ্ট হবেন বলে আশা করা যায়। সকলে সচেতন এবং নিয়ম শৃংখলার প্রতি শ্রদ্বাশীল হলে সার্বিক ভাবে তা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। মনে রাখা দরকার ”শৃংখলাই জীবন”। 

০২। আমাদের প্রত্যাশাঃ- 
ক্রেতার পূর্ন সন্তুষ্টি বিধানের জন্য ব্যবসায়িক নৈতিকতা অনুসরণ, সর্বোৎকৃষ্ট পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিত করে সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রতিপালনের মাধ্যমে আমরা হতে চাই একটি বিশ্বস্ত ও বিশ্বমানের বৃহৎ প্রস্তুতকারকের স্থান অর্জন এবং তা বজায় রাখা।

০৩। আমাদের অঙ্গীকারঃ-
সকল কাজে উৎকর্ষতা, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নতুনত্বের প্রবর্তন ও নিরবিচ্চিন্ন উন্নতির জন্য নতুন কর্মদ্যোগ গ্রহণ করে ক্রেতার সন্তুষ্টি বিধানের নিমিত্তে সর্বোৎকৃষ্ট পণ্য উৎপাদনে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ।

০৪। আমাদের নীতি সমূহঃ-
ক। সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক এবং ক্রেতা/ ভোক্তা ও সরবরাহকারীর সঙ্গে খোলাখোলি ভাবে মমতা, আন্তরিকতা, সততা ও নিষ্ঠার সাথে যথাযথ আচরণ করা ।
খ। দূর্নীতি যখন যেখানেই সংগঠিত হয় তা প্রতিরোধ করা।
গ। প্রত্যেকের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া ও অন্যকে  অবদান রাখতে সহযোগীতা করা।
ঘ। প্রত্যেকের জন্য সমসুযোগ নিশ্চিত করা ও সকল ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক আচরণ প্রতিরোধ করা।
ঙ। সর্বদা প্রাপ্ত সম্পদের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করা।

০৫। আমাদের উদ্দেশ্যঃ-
        ক। শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
খ। দক্ষ জনবল ব্যবহার করা।
গ। সর্বোৎকৃষ্ট মানের পণ্য সামগ্রী উৎপাদন ও ক্রেতার চাহিদা পূরন।
ঘ। শতভাগ সরবরাহ যথা সময়ে নিশ্চিতকরন।
ঙ। শতভাগ কোয়ালিটি প্রথম বারেই নিশ্চিতকরন।
চ। শতভাগ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা।
ছ। শত ভাগ সম্পদের ব্যবহার নিশ্চিত করা।
জ। ১৮ বছরের নিচে কোন শ্রমিক নিয়োগ না দেওয়া।
ঝ। গর্ভাবস্থার ধারণা পাওয়া যেতে পারে এমন কোন প্রশ্ন তাকে না করা।

০৬। প্রত্যাশা পুরনে ও অঙ্গীকার রক্ষায় আমাদের উদ্যোগঃ-
ক। সকল কাজে উৎকর্ষতা অর্জনের জন্য সকল স্তরে মেধাবী ও দক্ষ লোক নিয়োগ করা।
খ। সঠিক কর্মপদ্ধতি, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা।
গ। প্রশাসনিক স্বচ্ছতা, উন্নত পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সেবা, প্রতিযোগীতামূলক কর্ম পরিকল্পনা, মেধা ও দক্ষতার মূল্যায়ন নিশ্চিত করা।
ঘ। দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য আধুনিক পদ্ধতির প্রবর্তন, প্রশিক্ষন এবং কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের অনুপ্রাণিত করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
ঙ। গুনগত মান বৃদ্ধির জন্য নিরবিচ্ছিন্ন গবেষনা কাজ চালিয়ে যাওয়া এবং সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকের অন্তর্নিহিত শক্তি বিকাশের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
চ। সামাজিক দায়বদ্ধতার নিয়ম প্রতিপালন করা।

০৭। নিয়োগ নীতিমালাঃ-
কর্তৃপক্ষ সকল প্রকার জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বিশ্বাস,গোত্র, লিঙ্গ নির্বিশেষে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক নিয়োগ করে থাকে। নতুন লোক বাছাই ও নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ নিম্নলিখিত পদ্ধতি সমূহ অনুসরণ করে থাকে।
[ শূন্য পদে নিয়োগের জন্য অন লাইন, নোটিশ বোর্ডে বা পোষ্টারের মাধ্যমে এবং পত্রিকার মাধ্যমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা হয়।
[ নতুন শ্রমিক বাছাই করার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ নিয়োগ কমিটি গঠন করা হয়।
[ নতুন শ্রমিক বাছাই বা নিয়োগের ক্ষেত্রে অত্র কোম্পানীতে কর্মরত কোন লোক বা বাছাই কমিটির লোকজন বা বাহিরের কোন লোক যাতে কোন চাকুরী প্রার্থীর কাছ থেকে কোন প্রকার টাকা পয়সা বা চাঁদা না নিতে পারে কর্তৃপক্ষ তা সম্পূর্ণ নিশ্চিত করে থাকেন।
[ প্রার্থীকে আবেদন পত্রের সংগে নিম্নে উল্লেখিত কাগজ পত্র অবশ্যই সংযুক্ত করতে হবেঃ
(ক) পূর্ণ জীবন বৃত্তান্ত সহ পাসপোর্ট সাইজের ০৩ (তিন) কপি রঙ্গীন ছবি।
(খ) পরিচয় পত্র তৈরীর জন্য ষ্ট্যাম্প সাইজের ০১ (এক) কপি রঙ্গীন ছবি।
(গ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/ সিটি কর্পোরেশন অথবা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত বয়স সংক্রান্ত/ নাগরিকত্ব সনদপত্র। পরীক্ষা গ্রহণের দিন পর্যন্ত কারো বয়স ১৮ (আঠার) বছরের নীচে হলে, উক্ত ব্যক্তি স্বাভাবিক নিয়মেই নিয়োগ প্রাপ্তিতে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
(ঘ) শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র এবং অভিজ্ঞতার সনদপত্র (যদি থাকে)। 
[ শ্রমিদের সাধারণতঃ তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করে নিয়োগ করা হয়।
(ক) দক্ষ শ্রমিক।
(খ) অর্ধদক্ষ শ্রমিক।
(গ) অদক্ষ (শিক্ষানবিশ) শ্রমিক।
[ দক্ষ ও অর্ধদক্ষ শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষা, দক্ষতা, ও অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে আবেদনপত্র বাছাই করা হয়।
[ বাছাইকৃত শ্রমিকদেরকে সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠিয়ে বাস্তব কাজের পরীক্ষার মাধ্যমে তার দক্ষতার মূল্যায়ন করা হয় এবং মূল্যায়ন ফরম পূরণ করে তা সংগ্রহ করা হয়।
[ দক্ষতা এবং ইন্টারভিউ পর্যালোচনা করে প্রাথমিকভাবে যোগ্য ব্যক্তি নির্বাচন করা হয়।
[ শ্রমিক নিয়েগের ক্ষেত্রে শারীরিক যোগ্যতা ও বয়স যাচাইয়ের জন্য দেশের প্রচলিত শ্রম আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী প্রাথমিক ভাবে নির্বাচিত শ্রমিকদেরকে কারখানায় ডক্তারের নিকট মেডিক্যাল চেকআপ এবং বয়স নির্ণয়ের জন্য পাঠানো হয়।
[ চূড়ান্ত ভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদেরকে বেতন ভাতা এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধাদির বিস্তারিত বিবরণ সহ নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়।

০৮।  অদক্ষ কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ পদ্ধতিঃ-
[ অদক্ষ শ্রমিকদেরকে শিক্ষাগত যোগ্যতার উপর ভিত্তি করে আবেন পত্র বাছাই করা হয়।
[ বাছাইকৃত প্রার্থীদের ইন্টারভিউ ও আই.কিউ. চেষ্টা এর মাধ্যমে প্রাথমিক ভাবে নির্বাচন করা হয়।
[ শারীরিক যোগ্যতা ও বয়স যাচায়ের জন্য দেশের প্রচলিত আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী প্রাথমিক ভাবে নির্বাচিত শ্রমিকদেরকে কারখানায় ডাক্তারের নিকট মেডিক্যাল চেকআপ এবং বয়স নির্ণয়ের জন্য পাঠানো হয়।
[ নির্বাচিত প্রার্থীদেরকে বেতন ভাতা এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধাদির বিস্তারিত বিবরণ সহ নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়।
[ নিয়োগ পত্র প্রদানের পর দক্ষ ও অদক্ষ সকল শ্রমিকের জন্যই একটি সংক্ষিপ্ত ওরিয়েন্টেশন বা পরিচিতিমূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে ন্যায্য শ্রম নীতি, ক্রেতার আচরন বিধি, কোম্পানীর নিয়ম কানুন বিশদভাবে আলোচনা করা হয় এবং মানব সম্পদ নীতিমালা হ্যান্ডবুকের একটি কপি প্রদান করা হয়।
[ কোম্পানী শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিকদের নিয়োগ করে, ১৮বৎসরের কম বয়সী কোন শ্রমিককে নিয়োগ করে না ।
[ কোম্পানী কখনো বাধ্যতামূলক শ্রম ব্যবহার  করেনা এবং কাউকে এমন কোন শ্রমে নিয়োজিত থাকতে বাধ্য করেনা, যা সে সেচ্ছায় নিবেদন করেনি।
[ শরীফ গ্রুপ অব ইন্ডাষ্ট্রিজ সমসুযোগ প্রদান নিয়োগদাতা হবেন এবং নিয়োগ ও অন্যান্য কার্যাবলী নিরপেক্ষ নীতির ভিত্তিতে পরিচালিত করবে।
[ নিয়োগ প্রদান প্রার্থীর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, প্রদর্শিত দক্ষতা ও সক্ষমতা, বয়সের সপক্ষে সনদপত্র,  সুস্থ শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এর ভিত্তিতে করা হয়।
[ বেতন, পদোন্নতি, পুরস্কার, নিয়ম শৃংখলা ও চাকুরীচ্যুতি সম্পূর্ণরূপে কাজের মূল্যায়ন ও যোগ্যতার ভিত্তিতে হবে। 
[ সর্বোৎকৃষ্ট মানব সম্পদ নিয়োগে কোম্পানী সর্বদা সচেষ্ট থাকবে যা এ দেশে সহজলভ্য/প্রাপ্য।
[ নিয়েগের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচিত প্রার্থীকে তার পরিচয় পত্র প্রদান করা হবে।
 
০৯। অবেক্ষাকালঃ-
[ শুরুতে একজন কর্মী শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজে যোগদান করবেন। শিক্ষানবিশকাল তিন মাস এবং প্রয়োজনে আরো তিন মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যেতে পারে। কেরানী-সংক্রান্ত কাজে নিযুক্ত কোন শ্রমিকের শিক্ষানবীশকাল কাল ছয় মাস হবে।
[ শিক্ষানবিশকালে কোন কর্মী এবং কোম্পানী, উভয় পক্ষই যে কোন সময়ে যে কোন কারণে মাত্র ত্রিশ দিনের নোটিশে  শিক্ষানবিশকালের অ¯হায়ী নিয়োগ বাতিল করতে পারবে ।
[ তিন/ছয় মাসের শিক্ষানবিশকালের মধ্যে ও যদি প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে ব্যর্থ হয়, তাহলে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে কর্মীর অ¯হায়ী নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন ।
[ প্রত্যেক কর্মীর দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ তার চাকুরী তিন/ছয় মাস পূর্ণ হলে ¯হায়ী করবেন ।
[ সাফল্যজনকভাবে শিক্ষানবিশকাল শেষ হওয়ার পর শিক্ষানবিশকালের সময়কাল সামগ্রীক চাকুরীর সময়কাল হিসেবে গনণা শুরু হবে 
[ শিক্ষানবিশকালীন সময়ে নিম্নলিখিত বিষয়ে একজন কর্মীর কাছ থেকে উন্নয়ন আশা করা হয়ঃ
        ক. কর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট আচরন এবং শৃংখলা রক্ষা করা ।
        খ. সহকর্মীদের সংগে সুসম্পর্ক রক্ষা করে নির্ধারিত কাজ সম্পন্ন করা ।
        গ. এই নির্দেশিকাতে উল্লেখিত কোম্পানীর সাধারণ নিয়মাবলী মেনে চলা।
        ঘ. কঠোর পরিশ্রম করে ন্যাস্ত দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালনের মানসিকতা ।
        ঙ. ব্যক্তিগত কোন আচরণ বা অভ্যাসের মাধ্যমে কারো বিরক্তির উদ্রেক না করা।

১০। নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের করণীয় বিষয় সমূহঃ-
[ নির্বাচিত প্রার্থী সকাল ৮.০০ ঘটিকার পূর্বে নিয়োগপত্রে উল্লখিত নির্দিষ্ট তারিখে অবশ্যই কোম্পানীর মানব সম্পদ বিভাগে উপস্থিত হবেন।
[ মানব সম্পদ বিভাগে উপস্থিত হওয়ার পরে কর্মীদের নিম্ন লিখিত বিষয় সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরিচিতি দেওয়া হবেঃ-
(ক) কোম্পানীর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং পণ্য।
(খ) বেতন/মজুরী ও সুবিধাদি সমুহ।
(গ) নিয়োগ সম্পর্কিত নিয়ম নীতি, পরিবেশ, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে।
(ঘ) শৌচাগার, ক্যান্টিন, অগ্নি নির্গমন পথ, মেডিক্যাল সেন্টার, ইত্যাদি সহ কারখানার অবস্থান ঘুরিয়ে দেখানো।
(ঙ) পরিচিতির পর প্রত্যেক কর্মীকে মানব সম্পদ বিভাগ হতে নিম্ন লিখিত জিনিস পত্রাদি প্রদান করা হবে।
[ বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত কর্মী সহায়িকা। 
[ পরিচয় পত্র।
[ মাস্ক, গামবুট, হ্যান্ড গ্লোভস, ইয়ার প্লাগ ইত্যাদি ।
(চ)  উপরোল্লেখিত জিনিসপত্র কর্মীকে নিজ নিজ দায়িত্বে রক্ষনাবেক্ষন এবং নিরাপদে সংরক্ষন করতে হবে।
(ছ) কর্মী ইনডাকশনের পর নিজ নিজ বিভাগে উপ¯িহত হবেন ।
[ কোম্পানীর নিয়ম শৃংখলা মেনে চলা।
[ অফিসে/ কারখানায় ধুমপান সম্পূর্ণরূপে নিষেধ। এছাড়া টয়লেট বা বাথরুমেও ধুমপান করা যাবে না।
[ প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকে কর্তব্যরত নিরাপত্তা কর্মীদের জিজ্ঞাসা বা তল্লাশিকাজে সহায়তা করতে হবে।
[ যে যন্ত্রে বা মেশিনে আপনাকে নিয়োজিত করা হবে সে মেশিনের সঠিক ব্যবহার ও নিজের নিরাপত্তার বিষয় গুলি নিজ দায়িত্বে প্রারম্ভেই সরাসরি নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তার নিকট হইতে অবশ্যই অবহিত হইবেন। 
[ কোন অসুবিধা, অভিযোগ বা চাহিদা নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তার মাধ্যমে সমাধান না হলে ফ্লোরে কর্তব্যরত ইনচার্জ / কর্মকর্তার মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজরে আনতে হবে।
কোন অভিযোগ ও পরামর্শ থাকলে তা অফিস/কারখানা ফ্লোরে রক্ষিত বক্স্রে লিখিত ভাবে জমা দিয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করতে পারবেন। এছাড়া
যে কোন কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক অত্র কোম্পানীর মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদয় বরাবরে মোবাইলে সরাসরি ফোন করে তার কোন অভিযোগ ও পরামর্শ থাকলে তা জানাতে পারবেন।

১১। কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের দায়িত্ব :
সঠিক সময়ে কাজে উপস্থিত হওয়া ।
উৎপাদন প্রক্রিয়ায় পুর্নভাবে অংশ গ্রহণ ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ।
বিনা অনুমতিতে কাজে অনুপস্থিত না থাকা ।
পরিস্কার পরিচ্ছনতা বজায় রাখা ।
টয়লেট, কমোড এবং বেসিন ব্যবহারে যতœবান হওয়া এবং এগুলো পরিস্কার রাখা যাতে পরের জন বিনা অসুবিধায় ব্যবহার করতে পারে ।
কেন্টিনে খাবার সময় পরিস্কার পরিচ্ছন্নভাবে খাবার গ্রহণ এবং কোম্পানীর আসবাবপত্রের ক্ষতি না করা ।
সুপারভাজার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আইনানুগ আদেশ নির্দেশ মান্য করা  ।
পরিচয় পত্র এবং মাস্ক ব্যবহার করা ।
প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কাজ শেষে সুপারভাইজারের কাছে জমা দিবেন  ।
সিজার,ববিন কেইচ, সুতার ববিন, নিডেল বা অন্য কোন দ্রব্যাদি কারখানা থেকে অপসারন না করা ।
কাজ চলাকালীন সময়ে এক লাইন  থেকে অন্য লাইনে না যাওয়া এবং অপ্রয়োজনী কথা না বলা ।
সর্বোপরি কাজের প্রতি মনোযোগী হওয়া । 

১২। মজুরী/বেতন ও অন্যান্ন সুবিধাদি সমূহঃ-
মজুরী ও সুবিধাদি দেশের প্রচলিত আইন ও বি.জি.এম.ই.এ গাইড লাইন মোতাবেক সিদ্বান্ত নেওয়া হয়। 
সর্বমোট বেতন/মজুরী (এৎড়ংং) = মূল বেতন + বাড়ী ভাড়া (যা মূল বেতনের ৫০%) + চিকিৎসা ভাতা + খাদ্য ভাতা + যাতায়াত ভাতা একই সাথে মাসিক বেতন/মজুরী হিসাবে প্রদান করা হয়।
ক. সর্বেনিম্ন মজুরী ৮০০০/- (আট হাজার) টাকা।
খ. শ্রমিকদের প্রত্যেক মাসের মজুরী এবং অতিরিক্ত কাজের মজুরী একই সাথে পরবর্তী মাসের ০৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রদান করা হয়।
গ. বেতন/মজুরী ও ভাতাদি প্রদানের পূর্বে প্রত্যেক শ্রমিককে বিস্তারিত মজুরীরর হিসাব লিপিবদ্ধ করে প্রদান করা হয়।
ঘ. বেতন/মজুরী প্রদানের সময় প্রত্যেক শ্রমিককে পরিচয় পত্র দেখে বেতন/মজুরী প্রদান করা হয়।
ঙ. মাসের সকল কর্মদিবসে উপস্থিত থাকলে শ্রমিকদের হাজিরা বোনাস প্রদান করা হয়।

১৩। অতিরিক্ত কাজ ও কাজের মজুরী নির্ধারণ পদ্ধতিঃ-
যেহেতু কোন শ্রমিক অতিরিক্ত কাজ করবে কি না তা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত ব্যাপার, তাই কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাস করে যে, ”যে কোন পরিস্থিতিতেই অতিরিক্ত কাজ শ্রমিকদের জন্য বাধ্যতামূলক নয় বরং ঐচ্ছিক”। মূলত কর্তৃৃপক্ষ দৈনিক ০৮ (আট) ঘন্টা হিসাবে উৎপাদন পরিকল্পনা প্রস্তুত করে থাকে। অনেক সময় বিভিন্ন অনাকাঙ্খিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ শ্রমিদের ইচ্ছার ভিত্তিতে দৈনিক সর্বোচ্চ ০২ (দুই) ঘন্টা অতিরিক্ত কাজ করার জন্য অনুরোধ করতে পারেন, তবে কোন শ্রমিকের মোট সাপ্তাহিক কার্যকাল সর্বোচ্চ ৬০ (ষাট) ঘন্টার অতিরিক্ত এবং বৎসরে গড়ে সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৫৬ (ছাপ্পান্ন) ঘন্টার অতিরিক্ত করা হয় না।

১৪। কাজের সময়সূচী ও হাজিরা লিপিবদ্ধ করণঃ- 
ক. একজন শ্রমিক দৈনিক ০৮ (আট) ঘন্টা কাজ করে থাকেন এবং ০১ (এক) ঘন্টা মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতি ভোগ করতে পারেন।
খ. একজন শ্রমিক সপ্তাহে সর্বোচ্চ মোট ৬০ (৪৮ +১২) ঘন্টা কাজ করতে পারেন।
গ. কারখানার কার্য সময় সাধারণত :
জেনারেল শিফট সকাল ৮.০০ ঘটিকা হইতে বিকাল ৫.০০ ঘটিকা পর্যন্ত ।
এখানে উল্লেখ্য যে, সাময়িক ভাবে রমজান মাস ও অন্য কোন বিশেষ সময়ে প্রয়োজন বোধে উল্লেখিত কার্য সময় কর্তৃপক্ষ ও কর্মীদের  সম্মতিক্রমে পুণঃনির্ধারণ করা যাবে।
ঘ. প্রত্যেক শ্রমিকের প্রতিদিনের হাজিরা ও অতিরিক্ত সময় তাদের নিজস্ব হাজিরা খাতা ও টাইম কার্ডে  লিপিবদ্ধ করা হয় (কম্পিউটারে)।
ঙ. টাইম কার্ডে একজন শ্রমিকের কর্মস্থলে দৈনিক প্রবেশ ও বাহির সময় সঠিক ভাবে লিপিবদ্ধ করা থাকে।
চ. প্রবেশ ও বর্হিগমনের সময় হিসাব করে অতিরিক্ত কাজ সহ মোট কাজের সঠিক সময় লিপিবদ্ধ করা হয়।

১৫। মোট কর্মদিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিঃ-
শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তার স্বাভাবিক কর্মদিবস সপ্তাহে মোট ০৬ দিন,অর্থাৎ (প্রধান কার্যালয় ও গার্মেন্টস্ এর জন্য) শনিবার হতে বৃহষ্পতি বার, অত্র গ্রæপের বাকি সকল ইউনিট সমূহের জন্য সাইক্লিক সিষ্টেমে সাপ্তাহিক ছুটি ভোগ করে থাকে।

ছুটি ও ছুটির নীতিমালা সমূহঃ-
২০০৬ ইং সালের শ্রম ও শিল্প আইন মোতাবেক কারখানায় কর্মরত সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকগণ প্রতি ইংরেজী ক্যালেন্ডার বৎসরের হিসাব অনুযায়ী প্রতি বৎসর নিম্নোক্ত ছুটি ভোগ করে থাকেন। যার বিস্তারিত বিবরণ নিম্নে প্রদত্ত হলোঃ-
ছুটির প্রকারভেদ প্রাধিকার
পর্ব ছুটি প্রাধিকার ১১ দিন কিন্তু কোম্পানী কর্তৃক প্রদত্ত পর্ব ছুটি = ১৪ দিন (পূর্ণ বেতনে/ মজুরীতে)।
নৈমিত্তিক ছুটি = ১০ দিন (পূর্ণ বেতন/ মজুরীতে)।।
অসুস্থতা জনিত ছুটি ১৪ দিন (পূর্ণ বেতন/ মজুরীতে)।
অর্জিত ছুটি প্রাধিকার প্রতি ১৮ কার্যদিবসে ০১ দিন মোট=১৭ দিন (পূর্ণ বেতন/ মজুরীতে)। 
প্রসুতি কালীন ছুটি = ১৬ সপ্তাহ   (১১২ দিন) সন্তান প্রসবেব দিন পর্যন্ত ৮ সপ্তাহ এবং সন্তান প্রসবোত্তর ৮ সপ্তাহ পূর্ন মজুরীতে।

(ক) পর্ব / উৎসব ছুটিঃ-
প্রত্যেক কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক পর্ব উপলক্ষে প্রতি বৎসরে নূন্যতম ১১ দিন পর্ব ছুটি ভোগ করার প্রাধিকার রাখেন। কিন্তু কোম্পানীর প্রচলিত বিধি মোতাবেক নিম্নোক্ত পর্ব ছুটি ভোগ করে থাকেনঃ
বাৎসরিক পর্ব/উৎসব জনিত ছুটি  মোট = ১৪ দিন যেমনঃ-
ক) একুশে ফেরুয়ারী = ০১ দিন।                   
খ) ২৬ শে মার্চ  = ০১ দিন।                 
গ) ঈদ-উল-ফিতর = ০৩ দিন।                 
ঘ) ঈদ-উল-আযহা = ০৩ দিন।                 
ঙ) শব-ই-বরাত = ০১ দিন।                 
চ) সব-ই- কদর = ০১ দিন 
ছ) ১লা মে =০১ দিন। 
জ) ১৬ ই ডিসেম্বর = ০১ দিন।
ঝ) ১লা বৈশাখ =০১ দিন।             
উপরে উল্লেখিত ছুটি সমুহের মধ্যে মুসলিম পর্বের ছুটি সমূহ চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল।

(খ) নৈমিত্তিক ছুটিঃ-
অত্র গ্রুপের প্রধান কার্যালয় সহ সকল অঙ্গ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক প্রতি পঞ্জিকা বৎসরে ১০ দিন পূর্ণ বেতনে/ মজুরী সহ নৈমিত্তিক ছুটি ভোগ করে থাকেন। নতুন কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের ক্ষেত্রে কাজে যোগদানের তারিখ থেকে ঐ বৎসরের বাকি দিন গুলোর আনুপাতিক হারে ছুটি ভোগ করতে পারবেন। সাধারণত একসাথে ০৩ (তিন) দিনের অতিরিক্ত নৈমিত্তিক ছুটি কেহ ভোগ করতে পারবেন না। তবে শুধুমাত্র বিবাহ উপলক্ষে নৈমিত্তিক ছুটি একসাথে ০৪ (চার) দিন ভোগ করতে পারবেন। শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটি জমা রেখে পরবর্তী বৎসরে উত্তরন করা যাবে না, তা তামাদি হয়ে যাবে। কিন্তু অত্র কোম্পানীর প্রচলিত বিধি মোতাবেক শুধুমাত্র কর্মকর্তা ও ষ্টাফদের অভোগকৃত নৈমিত্তিক ছুটি (সর্বোচ্চ ১০ দিন) নগদিকরণ করা যায়।

(গ) অসুস্থতা জনিত ছুটিঃ-
অত্র গ্রুপের  প্রধান কার্যালয় সহ সকল অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সমূহের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক বছরে পূর্ণ বেতন/মজুরীতে ১৪ (চৌদ্দ) দিন পূর্ন বেতন/মজুরীতে অসুস্থতা জনিত ছুটি ভোগ করতে পারবেন। নতুন কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের ক্ষেত্রে একই নিয়ম প্রযোয্য হবে।
কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের ক্ষেত্রে অসুস্থতা জনিত ছুটির মেয়াদ ০২ (দুই) দিনের অতিরিক্তের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার্ড চিকিৎসকের সনদপত্র ছুটির আবেদন পত্রের সাথে দাখিল করতে হবে। অসুস্থতা জনিত ছুটি জমা রেখে পরবর্তী বছরে উত্তরন করা যাবে না এবং এর পরিবর্তে কোন আর্থিক সুবিধা প্রদান করা হয় না। 

(ঘ) অর্জিত ছুটিঃ-
অত্র গ্রুপের সকল কর্মচারী ও শ্রমিক পূর্ণ এক বৎসর কাজ করার পর পূর্ববর্তী বার মাসের জন্য প্রতি ১৮ কার্যদিবসে ০১ (এক) দিন হারে পরবর্তী বৎসরের যে কোন সময়ে বেতন/মজুরী সহ ছুটি ভোগ করতে পারবেন। অর্জিত ছুটি সঞ্চয়করে পরবর্তী বৎসরে নেওয়া যাবে এবং কর্মী ও কোম্পানীর স্বার্থে নগদীকরনও করা যাবে। যে কোন কর্মচারী বা শ্রমিক অর্জিত ছুটি ভোগ না করতে চাইলে উক্ত ছুটি পরবর্তী বৎসরের ছুটির সাথে জমা করতে পারবেন, কিন্তু তা ৪০ দিনের বেশী জমা করা যাবেনা তবে আবেদনকৃত অর্জিত ছুটি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হলে উক্ত প্রত্যাখ্যাত ছুটি ৪০ দিনের অতিরিক্ত হিসাবে যোগ হবে। প্রত্যেক কর্মচারী ও শ্রমিকের ক্ষেত্রেই এই ছুটির হিসাব তার কাজে যোগদানের তারিখ হতে বিবেচিত হলেও শুধুমাত্র স্থায়ী করণের পর এবং এক বৎসর পূর্ণ হওয়ার পর তা কার্যকর হবে। এই ছুটি একত্রে ০৭ (সাত) দিন বা প্রয়োজনে তারও বেশী ছুটি একসাথে ভোগ করতে পারবেন। এখানে উল্লেখ্য যে, কোম্পানীর প্রচলিত বিধি মোতাবেক প্রতি বৎসরের জন্য  কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অর্ধেক ছুটি নগদিকরন করা যাবে। 

১৬। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নীতিমালাঃ-
স্বাস্থ্যনীতিঃ দেশের প্রচলিত  কারখানা আইন অনুসারে স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধির বিভিন্নদিক বিষদভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে হাসপাতাল, ডাক্তারের ব্যবস্থা, প্রাথমিক চিকিৎসা ও এ্যাম্বুলেন্স এর সুবিধাসহ সকল কারখানা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, নর্দমা পায়খানা বা অন্য জঞ্জাল থেকে উত্থিত গ্যাস থেকে মুক্ত রাখা, প্রতিদিন ঝাড়– দেয়া,  সপ্তাহে অন্ততঃ একবার জীবানুনাশক ব্যবহার করা, যথাযথ পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা, চুন কাম করা, রং বা বার্নিশ করা, পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা, যুক্তিসংগত তাপমাত্রা সংরক্ষণ, ধূলা ময়লা এবং ধূয়া বের করে দেয়ার ব্যবস্থা, কৃত্রিম আদ্রর্তা, অতিরিক্ত ভীর এড়ানো, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা, আলোকচ্ছতা নিবারণ, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা/প্রশাবখানার ব্যবস্থা করা, বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা করা, থু থু ফেলার পিকদানির ব্যবস্থা ইত্যাদি সম্পর্কে এ অধ্যয়ে বিধান করা হয়েছে। 

নিম্নে প্রত্যেকটি বিষয়ের উপর বিস্তাারিত আলোচনা করা হল-

(ক) প্রাথমিক চিকিৎসাঃ- ফ্যাক্টরীতে প্রতি ১৫০ জন শ্রমিকের জন্য একটি করে প্রাথমিক চিকিৎসা বাক্স থাকবে যাতে আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় প্রাথমিক  চিকিৎসা সরনজামাদি মজুদ থাকবে- 
প্রতিটি ফার্স্ট এইড বাক্সে প্রয়োজনীয় সরনজামাদির  সাথে তাদের ব্যবহার বিধি লেখা থাকবে। প্রতিটি বাক্সের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রাথমিক চিকিৎসায় পারদর্শী কম পক্ষে ২ জন শ্রমিকের নাম ও ছবি বাক্সের উপরে/ সুবিধাজনক স্থানে প্রদর্শিত হবে। ফ্যাক্টরীতে যে কোন অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনায় শ্রমিকদেরকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শ্রমিকরা প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করবে।

(খ) ডাক্তার, হাসপাতাল ও এ্যাম্বুল্যান্সের সুবিধাঃ- ফ্যাক্টরীতে যতক্ষণ কাজ চলবে ততক্ষণ একজন ডাক্তার সার্বক্ষণিকভাবে ফ্যাক্টরীর ডাক্তার রুমে অবস্থান করবেন। এই সময়ে যে কোন শ্রমিক ডাক্তারের পরামর্শের জন্য তার শরনাপন্ন হতে পারবেন এবং বিনা মূল্যে চিকিৎসা সেবা পাবেন। বিশেষ ভাবে অসুস্থ রোগীদের অধিকতর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য তাদেরকে ডাক্তারের পরামর্শ মত হাসপাতালে ভর্তিসহ যাবতীয় চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রয়েছে। এ জন্য কারখানায় সার্বক্ষনিক চিকিৎসক এবং একজন নার্স রয়েছে। অসুস্থ শ্রমিক/কর্মচারীদের চিকিৎসার প্রয়োজনে এ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা আছে । তবে বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে ফ্যাক্টরীর গাড়ী এ্যাম্বুল্যান্সের কাজে সংরক্ষিত থাকবে।

(গ) পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাঃ- কারখানা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং নর্দমা, পায়খানা বা অন্য কোন জঞ্জাল থেকে উত্থিত দূষিত গ্যাস থেকে মুক্ত রাখতে নিম্নোক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যকঃ
১) কারখানা ঘরের মেঝে, চলাচলের পথ, সিঁড়ি, বসার বেঞ্চ, কাজ করার কামরা প্রতিদিন ঝাড়– দিয়ে বা অন্য উপায়ে ময়লা ও আবর্জনা অপসারনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
২) কারখানার মেঝে কমপক্ষে একবার পানি দিয়ে অথবা প্রয়োজনবোধে জীবানুনাশক ঔষধ মিশিয়ে ধুতে হবে। 
৩) কারখানার স্বাভাবিক উৎপাদন প্রক্রিয়ার কারণে মেঝেতে যদি পানি জমে যায় তাহলে তা নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪) কারখানার ভিতরের দেয়াল, সিলিং বা ভেতরের ছাদ, সিঁড়ি ও যাতায়াতের পথ নিম্নোক্তভাবে রক্ষনাবেক্ষণ করতে হবে।
ক) রং বা বার্নিশ থাকলে ৫ বছর পর পর রং বা বার্নিশ করা।
খ) রং বা বার্নিশ করা থাকলে এবং বর্হিভাগ মসৃণ ও উন্নত থাকলে প্রতি ১৪ মাসে একবার নির্ধারিত উপায়ে পরিষ্কার করা।
গ)  চুন কামের ক্ষেত্রে ১৪ মাস পর পর চুন কাম বা রং করতে হবে।
ঘ) এ সকল কাজ যে তারিখে করা হয়েছে তা নির্দিষ্ট রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করে সংরক্ষণ করতে হবে।
              বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা ও তাপমাত্রা (ধারা-১৪)
১) কারখানার প্রতিটি কাজের ঘরে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা হিসাবে কারখানার জানালা খোলা রাখা।
২। শ্রমিকদের স্বাচ্ছন্দে থাকার উপযোগী তাপমাত্রার ব্যবস্থা করা।
৩। কাজের ঘরের ছাদ এবং দেয়াল এমন ভাবে তৈরি করা যাতে তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকে।
৪। যেখানে বিশেষ ধরনের কাজের ফলশ্রæতিতে মাত্রাতিরিক্ত তাপ বৃদ্ধি পেতে পারে সেখানে এমন কার্যকর 
ও সুষ্ঠ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাতে কাজের ঘর থেকে গরম বাতাস বের হয়ে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য উপযোগী স্বাভাবিক আবহাওয়া বজায় থাকে।
৫। কারখানার জন্য পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং কারখানার প্রতি ফ্লোরে তাপমান যন্ত্র স্থাপন করা।

ঘ) ধুলাবালি ও ধোঁয়াঃ-
১) কারখানায় বিশেষ ধরনের পন্য উৎপাদন পদ্ধতির কারনে, যদি ধুলা ময়লা জমা হয়ে বা ধোঁয়া বের হওয়ার ফলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয় যে, তা শ্রমিকদের স্বাস্থ্যর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে তবে উক্ত ধূলা ময়লা জমা হওয়ার বা ধোঁয়া বের হওয়ার প্রতিকার মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
২) কারখানায় আবহাওয়া দূষিত করার মত যন্ত্র কেবল খোলা জায়গায় চালাতে হবে এবং উক্ত যন্ত্র ফ্লোরের ভিতরে যাতে আবহাওয়া দূষিত করতে না পারে সেজন্য সুষ্ঠ ও কার্যকর প্রতিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ঙ) অতিরিক্ত ভীড়ঃ-  কারখানায় কোন কাজের ফ্লোরে নিযুক্ত শ্রমিকদের স্বাস্থ্যর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এমন ভীর হতে পারবে না এবং এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

চ) আলোর ব্যবস্থা: 
১) প্রত্যেক কারখানার প্রতি অংশে, যেখানে শ্রমিকগণ কাজ করে বা চলাচল করে, সেখানে পর্যাপ্ত এবং উপযুক্ত প্রাকৃতিক অথবা কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা করা এবং তা সংরক্ষণ করা।
২) কারখানার প্রতিটি ফ্লোরে আলো বাতাস ঢোকার জন্য ব্যবহৃত কাঁচের স্বচ্ছ জানালার ব্যবস্থা করা।
৩) আলোর উৎস থেকে সরাসরি উৎসারিত চোখ ঝলসানো আলোকচ্ছটা চোখের উপর চাপ পড়তে পারে বা দূর্ঘটনার কারণ হতে পারে এমন অবস্থা থেকে কাজের জায়গাকে মুক্ত রাখা।

ছ) পানীয় জলঃ
১) প্রত্যেক কারখানায় নিযুক্ত শ্রমিকদের পান করার জন্য সুবিধা জনক যথোপযুক্ত নির্দিষ্ট জায়গায় সর্বক্ষণ বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে হবে এবং সে ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে।
২। পানীয় জল রাখার প্রত্যেকটি জায়গায় অধিকাংশ শ্রমিকের বোধগম্য ভাষায় পানীয় জল কথাটি লিখে রাখা এবং উক্ত স্থানের ২০ ফুটের কম দূরত্বের মধ্যে কোন ধৌতগার, প্রশাবখানা বা পায়খানা না থাকা নিশ্চিত করা।

জ) পায়খানা ও প্রশাবখানাঃ-
১) শ্রমিক গণের জন্য কারখানায় সকল সময়ে সহজে ব্যবহার যোগ্য এবং সুবিধাজনক স্থানে পায়খানা ও প্রশাবখানার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা।
২) পুরুষ এবং মহিলা শ্রমিকদের জন্য পৃথক পৃথক পায়খানা ও প্রশাবখানার ব্যবস্থা রাখা।
৩। কারখানায় অবস্থিত পায়খানা ও প্রশাবখানাসমূহে উপযুক্ত আলোর ব্যবস্থা এবং বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪) পায়খানা ও প্রশাবখানা যথোপযুকক্ত ভাবে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পরিষ্কারক অথবা জীবানুনাশক দিয়ে সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।
৫) মহিলা শ্রমিকের ক্ষেত্রে, প্রথম ১০০ জন পর্যন্ত প্রতি ২৫ জনের জন্য একটি করিয়া এবং পরবর্তী প্রতি ৫০ জনের জন্য একটি করিয়া ;
(খ) পুরুষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে, প্রথম ১০০ জন পর্যন্ত প্রতি ৪০ জনের জন্য একটি করিয়াএবং পরবর্তী প্রতি ৬০ জনের জন্য একটি করিয়া পায়খানার ব্যবস্থা রাখা।
ঝ) পিকদানীঃ-
১) প্রত্যেক কারখানায় সুবিধা জনক জায়গায়  যথেষ্ট সংখ্যক পিকদানীর ব্যবস্থা এবং তা  স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।
২) কোন ব্যক্তি কারখানার পিকদানী ছাড়া কারখানার আঙ্গিনার মধ্যে থুথু ফেলবেন না। এ বিধান সম্পর্কে এবং এর লংঘনের শাস্তি সম্বলিত নোটিশ কারখানার ভেতরে উপযুক্ত স্থানে সহজে দৃষ্টি গোচর হয় এমন ভাবে টানিয়ে রাখা।

১৭। পরিবেশগত নিরাপত্তাঃ- পোশাক শিল্পের  প্রধান উৎপাদন কেন্দ্র হচ্ছে ছোট, মাঝারী কিংবা বড় ফ্যাক্টরী। উক্ত ফ্যাক্টরীতে একনাগারে  ৮-১০ ঘন্টা বিরামহীনভাবে কাজ করার পরিবেশ বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরী। কাজের পরিবেশ ভাল হলে শ্রমিকদের মন মানসিকতা ভাল থাকবে এবং উৎপাদন ভাল হবে। স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশ বজায় না  রাখতে পারলে শ্রমিকদের অসুখ বিসুখের কারনে উৎপাদন ব্যপক ভাবে ব্যহত হতে পারে। তাই পরিবেশ বজায় রাখার জন্য নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর জন্য সর্বস্তরে কর্মকর্তা/ কর্মচারীদেরকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

ক) কর্মস্থলঃ- এমন হতে হবে যাতে শ্রমিকদেরকে ঘেসাঘেসি করে বসতে না হয়। ইউনিট এলাকার মধ্যে পানি কিংবা পিচ্ছল পদার্থ  যাতে  না থাকে সে দিকে  সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

খ) টয়লেটের মানঃ- শ্রমিকদের (পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পর্যাপ্ত টয়লেট থাকতে হবে এবং প্রতি দিন পরিষ্কার রাখতে হবে। এ ব্যাপারে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর চেক লিষ্টের মাধ্যমে পরীক্ষা করতে হবে-
১) পানির কল সচল আছে কিনা পরীক্ষ করা।
২) ভাঙ্গা পানির কল মেরামত করে  পানির অপচয় রোধ করতে হবে।
৩)  পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা ও দুর্গন্ধমুক্ত রাখা।
৪) পানির ব্যবস্থা থাকা। 
৫) ফ্লাশ কাজ করা।
৬) পানির টেপ লিক না করা।
৭) আলো এবং বাতাসের ব্যবস্থা থাকা।
৮) দরজা সঠিক ভাবে বন্ধ হওয়া।
৯) মেয়েদের টয়লেটের ঢাকনাওয়ালা ঝুড়ির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
১০) প্রতিটি টয়লেটে সাবান, তোয়ালে সেন্ডেল মজুদ রাখা।
১১) অপ্রয়োজনীয় মালামাল না রাখা।
১২) মাকড়সার জাল না থাকা।

গ) আলো বাতাসঃ- স্বাভাবিক আলো ছাড়া প্রতিটি কর্মস্থলে যথেষ্ট বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থা থাকা বাঞ্চনীয়। কোন ভাবে স্বল্প আলো দ্বারা কাজ করানো যাবে না।

ঘ) তাপমাত্রাঃ- কর্মস্থলে কোনভাবেই অসহনীয় তাপমাত্রা যাতে না থাকে সেজন্য অতিরিক্ত ফ্যান/ব্লোয়ারের ব্যবস্থা থাকতে হবে যে কোন পার্শ্বে আলো পড়ে তাপমাত্রা যাতে অতিমাত্রায় বৃদ্ধি না হতে পারে সে জন্য প্রয়োজনে কাপড়ের পর্দা ব্যবহার করতে হবে।

ঙ) পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাঃ-  ইউনিট /ফ্লোরে ধূলা বালি যাতে না থাকে  সে জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার ব্যাপারে ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত ভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। অপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নির্দিষ্ট স্থানে রেখে প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে যাতে চলাচলে কোন বিঘ্ন সৃষ্টি করতে না পারে। দেয়ালের কোন স্থানে স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে গেলে যথা সময়ে চুনকাম করতে হবে।

চ) বিশুদ্ধ খাবার পানিঃ প্রতিটি ইউনিট/ফ্লোরে নির্ধারিত স্থানে রাখা পানির ট্যাঙ্ক এ বিশুদ্ধ পানি মজুদ রাখা জরুরী। প্রত্যেক শ্রমিক যাতে নিজস্ব বোতলের মাধ্যমে পানি সংগ্রহ করতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।

ছ) শব্দ নিয়ন্ত্রণঃ ইউনিট/ফ্লোরে সকলে একসাথে কথা বলতে শুরু করলে অথবা মেশিনে বেশি শব্দ সৃষ্টি হলে তা নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা করতে হবে।

জ) ধুমপান নিষিদ্ধঃ পোশাক শিল্পের ফ্যাক্টরী/ইউনিট চৌহদ্দির ভিতরে ধুমপান সম্পূর্ন নিষেধ এলাকা হিসাবে ঘোষিত। এর পরেও কোন ভাবেই যাতে এর লঙ্ঘন না হয় ইউনিট পর্যায়ে এবং কেন্দ্রিয়ভাবে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে।

ঝ) পানি নিষ্কাশনঃ বৃষ্টির পানি কিংবা পাইপ থেকে নির্গত পানি যাতে কোন স্থানে জমা হয়ে প্লাবিত হতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং বিদ্যমান ড্রেন বা পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাকে সর্বদা পরিষ্কার করে চালু রাখতে হবে।

১৮। নিরাপত্তা সংক্রান্ত নীতিমালাঃ-

১। ব্যক্তিগত/সমষ্টিগত নিরাপত্তা- পোশাক শিল্পে/ফ্যাক্টরীতে কর্মরত সকল কর্মকর্তা ও শ্রমিকদেরকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার প্রতি দৃষ্টি রাখা প্রাথমিক দায়িত্ব। প্রত্যেকে সচেতন থাকলেই দলগত কিংবা সমষ্টিগত নিরাপত্তা বজায় রাখা সম্ভব। নিরাপত্তার ব্যাপারে যে সমস্ত বিষয়ে দৃষ্টি দিতে হবে তা উলে­খ করা হল-
        ক) ইউনিট/ ফ্যাক্টরীর নির্ধারিত নির্দেশাবলী সর্বদা সঠিকভাবে মেনে চলা।
        খ) মেশিনে কাজ শুরু করার পূর্বে মেশিন চালনার নিয়ম সঠিক ভাবে জেনে নেওয়া/জানানো।
    গ) পিছ আয়রন কিংবা ফিনিশিং সেকশনে কর্মরত প্রত্যেকের কাজ শুরু করার পূর্বে/ কাজ শেষে ইলেকট্রিশিয়ানের সাহায্য নেওয়া।
ঘ) নতুন কোন শ্রমিককে অনির্ধারিত কাজে নিয়োজিত করা যাবে না।
ঙ) যেকোন ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত হলে তড়িৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।
চ) নিষিদ্ধ থিনার/ক্যামিক্যাল খোলাখুলিভাবে ব্যবহার না করা।
        ছ) প্রাথমিক চিকিৎসায় প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ব্যক্তি কর্তৃক ইউনিট/লাইনের আঘাত প্রাপ্ত ব্যক্তিদেরকে সময় নষ্ট না করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।
জ) ক্যান্টিনে খাবার শেষে বর্জ দ্রব্য নির্দিষ্ট ডাষ্টবিনে রাখা।
ঝ) বয়লার রুমে অননুমোদিত ব্যক্তির প্রবেশ না করা।
ঞ) ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য ব্যবহারিত সরঞ্জামাদি (পি পি আই) সর্বদা ব্যবহার করা/নিশ্চিত করা।
ট) টয়লেট ব্যবহার শেষে পানি ব্যবহার ফ্ল্যাশ করা এবং পানির কল ভালভাবে বন্ধ করা।
ঠ) মহিলাদের জন্য রক্ষিত ঝুড়িতে রাখা বর্জ্য দ্রব্য কোনভাবেই কমোডে নিক্ষেপ না করা।
ড) টিউব লাইটের শেডের উপর ডাষ্ট জমতে না দেয়া, কারন সে সকল স্থানের মযলায় সহজে আগুন ধরতে সাহায্য করে।
ঢ) যে সকল স্থানে আওয়াজ হয় সে এলাকার সব শ্রমিককে ইয়ার প্লাগ/ইয়ার ড্রাম ব্যবহার করা।

২। যন্ত্রপাতির নিরাপত্তা- একজন শ্রমিক যতক্ষণ ইউনিটে/ফ্লোরে থাকে ততক্ষণ কোন না কোন মেশিনের সাথে সম্পৃক্ত থাকে। তাই মেশিন সংক্রান্ত যে যে নির্দেশ পালন করতে হবে তা নিম্নে উলে­খ করা হল-
ক) স্ন্যাপ বাটন মেশিনের  বেল্ট কভার  টপ কভার না থাকিলে মেশিন চালানো যাবে না।
খ) যে সমস্ত মেশিন প্যাডেলের সাথে চেইন দ্বারা সংযোগ থাকে, সেই সমস্ত মেশিন চেইনের  পরিবর্তে সুতা, তার কিংবা রশি দ্বারা সংযোগ করে মেশিন চালানো যাবে না।
গ) নাট-বোল্ট নেই, ঝালাই খুলে গিয়েছে কিংবা অন্য কোন কারন বশত ঃ মেশিনের টেবিল ষ্ট্যান্ড নড়াচড়া করে সেই  সমস্ত মেশিনে কাজ  করা যাবে না।
ঘ) প্যাডেল কিংবা ষ্টান্ডের মধ্যে অপারেটর এর শরীরের অংশ  ক্ষত হতে পারে এমন কোন ধারালো অবস্থা থাকবে না।
ঙ) মেশিন চালানোর সময় মেশিন কাঁপলে কিংবা অস্বাভাবিক কোন শব্দ হলে মেশিন চালানো যাবে না।
চ) মেশিন চলাকালীন সময়ে কারো সাথে কথা বলা যাবে না।
ছ) অসুস্থ শরীর কিংবা তন্দ্রা বা  ঝিমুনী আসলে মেশিন চালানো যাবে না।
জ) স্নাপ বাটন মেশিনে প্রতি চাপের সময় আঙ্গুল নিরাপদ স্থানে আছে কিনা সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
ঝ) স্নাপ বাটন মেশিনে বা স্ন্যাপের নিচে পার্ট দেওয়ার আগে উপরের পার্ট মোল্ডে দিতে হবে।
ঞ) মেশিন চালাবার সময় শাড়ি, ওড়না সেলোয়ার কামিজ  যাতে মেশিনের ঘূর্নয়মান অংশের সঙ্গে জড়িয়ে না যায় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
ট) কাজ করার সময় চুল, খোপা বা বেনী বেঁধে কাজ করতে হবে। চুল খোলা অবস্থায় কাজ করা যাবে না।
ঠ) বাটন হোল, বাটন স্টীচ, ওভার লক, বারটেক মেশিনে সেইফটি গ্লাস থাকতে হবে  অথবা গগলস ব্যবহার করতে হবে।
ড) ওভার লক মেশিনের অপারেটরকে অবশ্যাই মুখোশ পরিধান করতে হবে।
ঢ) সকল সুইং মেশিনে নিডল সেপটি গাইড থাকতে হবে।
ণ)  কাটিং মেশিনে কাজ করার সময় সর্বদা স্টীল হ্যান্ড গ্লোভস ব্যবহার করতে হবে।
ত) কাটিং মেশিনের বেস প্লেট মসৃন থাকতে হবে।
থ) কাঁচি কিংবা কাটারকে রশি দিয়ে এমন ভাবে বেঁধে রাখতে হবে যাতে পড়ে গেলে কোন ভাবেই আঘাত প্রাপ্ত না হন।

৩। বৈদ্যুতিক নিরাপত্তাঃ- বৈদ্যুতিক তার থেকে আগুনের সূত্রপাত হওয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা। কারণ যতক্ষন ইউনিট/ফ্লোর চালু থাকে ততক্ষণ বৈদ্যুতিক ব্যবহার অব্যাহত থাকে। তাই এ বিষয়ে যে যে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী তা নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
ক) কাজের শুরু/ শেষে ইউনিট/ফ্লোরের সমস্ত বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করতে হবে।
খ) বয়লার কক্ষ পরিদর্শন উপযোগী হতে হবে এবং বাষ্প লাইনে ছিদ্র বা লিকেজ থাকবে না ও খোলা  (ন্যাকেট) পাইপ থাকবে না।
গ) কোথাও কোন খোলা তার থাকতে পারবে না।
ঘ) ডি বি বোর্ডে ডেঞ্জার প্লেট লাগানো থাকবে এবং এ আশে পাশে বৈদ্যুতিক শকের চিকিৎসার নিয়মাবলীর পোষ্টার থাকতে হবে।
ঙ) ডি বি বোর্ড গুলি পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন ও আশে পাশে কোন মালামাল থাকবে না। বোর্ড তালা দিয়ে আটকানো থাকবে না।
চ) পিচ আয়রন সকেট থেকে বিচ্ছিন্ন না করে কর্মস্থল ত্যাগ করা যাবে না।
ছ) পিছ আয়রন বা ভ্যাকুয়াম আয়রন পুরোপুরি ঠিক থাকতে হবে এবং সর্বদা আয়রন স্ট্যান্ড এর উপর রাখতে হবে।
জ) সকল মেশিনের মটর পুলি কভার থাকতে হবে।
ঝ) কোন মটর, ফ্যান, মেশিনের বাজে শব্দ থাকেত পারবে না।
ঞ) কোন প্রকার ভাঙ্গা বা পোড়া প্লাগ, সকেট, সুইস থাকবে না।
ট) টিউব লাইটের স্টারটার সঠিক ভাবে থাকতে হবে এবং সম¯ত লাইট এক সঙ্গে জ্বলে উঠবে।
ঠ) সমস্থ লাইট জ্বলতে হবে।
ড) মটর বা মেশিনের তার গুলি সুন্দর ভাবে ড্রেসিং করা থাকতে হবে।
ঢ) সব চ্যানেল গুলি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে ভিতরে কোন ডাষ্ট থাকবে না।
ণ) কোন বৈদ্যুতিক তারে আগুন ধরে গেলে কিংবা তারের কোন অংশ থেকে ধোয়া বের হলে কি করনীয় তা বাংলা/ইংরেজীতে লিখে টাঙ্গিয়ে রাখতে হবে।

১৯। নিডল ব্যবহারের নীতিমালাঃ- পোশাক শিল্প/ফ্যাক্টরীতে নিডল ব্যবহারের নীতিমালা অত্যন্ত কড়াকড়িভাবে পালন করা হয়ে থাকে। কারন কোন ক্রেতা (বায়ার) সংস্থা কর্তৃক ক্রয় কৃত পোশাকের মধ্যে স্বাস্থ্যর হানিকর কোন দ্রব্য দেখতে চান না। নিডল এর কোন অংশ পাওয়া গেলে  বায়ার এর বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে ফলে ক্রেতা ও প্রস্তুত কারী  প্রতিষ্ঠান উভয়েরই ব্যবসা হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। যার দরুন বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে বায়ার এর কাছ থেকে শিশু নিরাপত্তা সমন্ধে একটি শর্ত আরোপ করে থাকে যা পালন করা পোশাক প্রস্তুতকারী/ সরবরাহকারীর জন্য অত্যন্ত জরুরী। নিডল এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে নিম্নোক্ত নিয়ম পালন করতে হবে।
ক) ভাঙ্গা নিডল এর ব্যবস্থা- বায়ার এর চাহিদা পূরণ কিংবা নিজেদের খরচ কমানো/নিরাপত্তার জন্য নিম্নোক্তভাবে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১) নিডল এর নমুনা মোতাবেক সঠিক মেশিনে ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
২) ভাঙ্গা নিডল খুজে বের করার জন্য যাতে অধিক সময় ব্যয় করতে না হয় সে জন্য লাইন সুপারভাইজার কিংবা তদূর্ধ কর্মকর্তাগণ এবং অপারেটরগণকে তীক্ষè দৃষ্টি রাখতে হবে।
৩) ইউনিট মেকানিক্সগণকে প্রতি নিয়ত দৃষ্টি রাখকে হবে যাতে কেউ অনুমোদিত সাইজের নিডল ইচ্ছে করলেই ব্যবহার করতে না পারে।
৪) ভাঙ্গা নিডল জমা দেওয়ার সময় সম্পূর্ন অংশটি থাকতে হবে। কোন অংশ পাওয়া না গেলে উক্ত মেশিনের আশে পাশে চুম্বক মেশিন দ্বারা তল্লাশি চালিয়ে বের করতে হবে। তার পরও পাওয়া না গেলে রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট গার্মেন্টসকে নিডল ডিটেক্টর মেশিন দ্বারা পরীক্ষা করতে হবে।
খ) ব্যবহৃত নিডল এর সংরক্ষন- যে যে কারণে ব্যবহৃত নিডল পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয় তা নিম্নে উল্লেখ করা হল-
১) একই নিডল দীর্ঘ সময় পর্যন্ত কাজ করলে তার ধার কমে যায় কিংবা মাথার অংশ বেকে যায়। এ ধরনের নিডল ব্যবহার করলে ওয়াশ এর পর কাপরের সুতা কেটে যেতে পারে অথবা ছিদ্র হয়ে যেতে পারে।
২) দীর্ঘ সময় ব্যবহারের ফলে নিডল এর মাথা ভোতা/মোটা হয়ে গেলে পোশাকে মার্ক দেখা দিতে পারে। তাতে পোশাক রিজেক্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এ ধরনের পরিস্থিতি হওয়ার পূর্বেই নিডল পরিবর্তন করে তা একটি বাক্সের মধ্যে রাখতে হবে যাতে বাক্স ভেঙ্গে কেহ বের করতে না পারে।
৩) কোন নতুন স্টাইলের কাজ শুরু করার পূর্বে নিডল পরিবর্তন করা জরুরী হয়ে পড়তে পারে। তাই উপরোক্ত নিয়মে নিডল পরিবর্তন করে তা সংরক্ষন করতে হবে।
৪) সর্বমোট কত মাস/বছর পর্যন্ত পরিবর্তিত নিডল সংরক্ষণ করতে হবে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবেন।

২০। অগ্নি থেকে নিরাপত্তাঃ- আগুনের কারনে যে ধরনের ক্ষয় ক্ষতি হয় তা কখনো আন্দাজ করা যায় না। অগ্নি কান্ড থেকে নিরাপদে থাকার  দুটি উপায় রয়েছে, যেমন আগুনের সূত্রপাত হতে না দেওয়া এবং অগ্নিকান্ড হলে পরিকল্পনা মোতাবেক নির্বাপণ করে ক্ষয় ক্ষতি রোধ করা। অগ্নি কান্ড রোধ কিংবা অগ্নি নির্বাপনের জন্য  নিম্নোক্ত পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরী।
ক) সম্ভাব্য অগ্নিকান্ডের স্থান গুলো চিহ্নত করে টিমকে প্রস্তুত করা।
খ) ফায়ার এলার্ম সুইচ বক্স এর গ্লাস, হাতুরী ও পরিদর্শন ঠিক আছে কিনা দেখতে হবে। এ ধরনের এলার্ম এর জন্য টাম্বলার সুইচ ব্যবহার করতে হবে এবং সুইচ বক্স গুলো বর্হিগমনের নিকট বর্তী স্থানে থাকতে হবে।
গ) গং বেল ঝুলানো আছে কিনা দেখতে হবে এবং ফায়ার হোজ ক্যাবিনেট ঠিক আছে কিনা অর্থাৎ  ট্যাংকে পানি আছে কিনা, হোজ  ক্যাবিনেটে যাওয়ার  রাস্তা পরিষ্কার আছে কিনা ইত্যাদি চেক করতে হবে।
ঘ) প্রত্যেকটি মেশিনের মটরগুলিতে মটর পুলি থাকতে হবে। ইন্সপেকশনের আগের দিনই সব ঠিক করে সংশ্লিষ্ট ইনচার্জের মাধ্যমে কারখানা প্রধান কে রিপোর্ট করতে হবে।
ঙ) অগ্নি নির্বাপন কমিটিকে সর্বদা প্রশিক্ষনের মাধ্যমে অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র ব্যবহার সমন্ধে কাজের উপযোগী করে রাখা।
চ) বর্হিগমনের বাতি যতক্ষন কাজ চলে ততক্ষন জ্বালিয়ে রাখতে হবে।
ছ) ইমার্জেনসি বাতি ঠিক রাখতে হবে।
জ) অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রগুলি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও সঠিক অবস্থানে থাকতে হবে। মাসিক পরিদর্শন কার্ড ঠিক আছে কিনা দেখতে হবে।
ঝ) ফায়ার মার্ক ঠিক থাকতে হবে এবং অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের কাছে যাওয়ার পথে কোন বাঁধা থাকতে পারবে না।

২১। বৈষম্যহীন আচরণ নীতিমালাঃ-
বাংলাদেশের পোশাক শিল্প একটি রপ্তানীমূখী প্রতিষ্ঠান। বিশ্ব বাজারে এর পরিচিতি সুবিদিত। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার এ যুগে তাই গুরুত্বপূর্ণ এ শিল্প কারখানায় যাতে মানবাধিকারের কোন লঙ্ঘণ না হয় সে দিকে শরীফ গ্রুপ এবং তার অর্ন্তভূক্ত কারখানা সমূহ সর্বদা সচেষ্ট। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলির আলোকে বৈষম্যহীনতা সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
ক) অত্র গ্রুপ এর আওতাধীন সকল শিল্প কারখানায় সমতার ভিত্তিতে শ্রমিক নিয়োগ করে থাকে। এখানে কোন রূপ বৈষম্যই স্থান পায় না।  বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য অত্র গ্রপ  এর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সার্বক্ষণিক তার জোড় প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এ ব্যাপারে দেশের প্রচলিত আইন এবং আন্তজার্তিক শ্রম সংস্থার কনভেনশন পরিপালনে মাসকো কর্তৃপক্ষ  অঙ্গীকারাবদ্ধ।
খ) অত্র গ্রুপ এর আওতাধীন শিল্প কারখানায় শ্রমিককে নিয়োগ করে তার যোগ্যতার ভিত্তিতে। শ্রমিক  নারী বা পুরুষ এ বিষয়টি কখনো বিবেচনায় আনা হয় না। অথবা শ্রমিক কালো বা সুন্দর, যুবক বা বৃদ্ধ  এর কোনটিই বিবেচনা করা হয় না। যোগ্যতাই শ্রমিকের একমাত্র পরিচয়। 
গ) নারী শ্রমিক দূর্বল, পুরুষ শ্রমিক সবল  এরূপ কোন ধারনা অত্র গ্রুপ বিশ্বাস করে না। শ্রমিকের পরিচয় সে মানুষ এবং  তার কাজের মাধ্যমে সে একজন দক্ষ শ্রমিক। শ্রমিকের এ দক্ষতার মাধ্যমেই  তার যোগ্যতা। তার যোগ্যতাই  এখানে বিবেচনার একমাত্র মাপ কাঠি।
ঘ) নারীকে তার যোগ্য মর্যাদা প্রদান এবং প্রাকৃতিক নিয়মে নারীর মা হওয়া অত্র গ্রুপ স্বাভাবিকই মনে করে। তাই  নিয়োগের ক্ষেত্রে নারীর মা হওয়া বা মাতৃত্ব অবস্থা  বিষয়ে কোন রূপ প্রশ্ন করা অবান্তর মনে করে। মাতৃত্ব অবস্থায় তাই কোন শ্রমিকই  নিয়োগের ক্ষেত্রে বৈষ্যমের শিকার হয় না।
ঙ) ধর্ম প্রতিটি মানুষের একান্ত নিজস্ব অনুভূতি বা বিশ্বাসের ব্যাপার। এখানে জোর খাটানোর কোন অবকাশ নেই। প্রতিটি শ্রমিকই তার নিজ নিজ ধর্ম বিশ্বাস অনুসারে ধর্ম কর্ম পালন করবে এতে বাধা দেওয়ার  বা অনুরূপ কিছু করা আইনের চোখে ও দন্ডনীয় অপরাধ।
চ) ধনী-দরিদ্র ছোট বড়  এ ধরনের কোন বৈষ্যমমূলক কোন অনুসরণ করে না। রাজনৈতিক বিশ্বাস বা ব্যক্তির সামাজিক  অবস্থানের বিষয়টি কখনই বিবেচ্য বিষয় হয় না। এখানে সকলে সমতার ভিত্তিতে  নিয়োগ, পদোন্নতি বা  অন্যান্য সব ধরনের সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে। 
ছ) শ্রমিককে তার যোগ্যতা অনুসারে নিয়োগ, বদলী, পদোন্নতিসহ সব রকম সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সম্পর্ক কখনই যোগ্যতা হিসাবে বিবেচিত হয়না বরং এটা দন্ডনীয় হিসাবে নিন্দনীয়। 
জ) বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্ম-বর্ণ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে । একই ভাবে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কনভেনশনেও এই নীতিমালাকে সমুন্নত রাখা হয়েছে এ অঙ্গীকার ও নীতিমালা মোতাবেক। তাই “ বৈষম্যহীনতার নীতিমালা” প্রণয়ন ও উহা সঠিক ভাবে অনুসরণ করছে। 

২২। হয়রানী ও নির্যাতনবিরোধী  নীতিমালাঃ-
শরীফ  গ্রুপ কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের প্রতি যে কোন প্রকার অন্যায় আচরণ ও হয়রানিমূলক ব্যবহার প্রতিরোধে সর্বদাই সচেষ্ট থাকে। কোন ব্যক্তি যদি কোন অবস্থায় কোন ধরনের হয়রানি বা অসদাচরণ করে বা কাউকে করতে উৎসাহিত করে তবে কর্তৃপক্ষ প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী তার বিরূদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন। 

হয়রানি বা অসদাচরণ এর প্রকারভেদ গুলি নিম্নরূপ-
ক) অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহারঃ  নিয়মিত উচ্চস্বরে হাকডাক এবং/অথবা অশ্রাব্য ভাষায় ব্যবহার। 
খ) মৌখিক হয়রানিঃ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কাউকে হুমকি দেওয়া। 
গ) মানসিক হয়রানিঃ কাউকে মৌখিক বা আচরণগতভাবে অপদস্থ করা যেমন, কোন কিছু ছুঁড়ে মারা। 
ঘ) যৌন হয়রানিঃ বিশেষ লিঙ্গের  প্রতি অনাকাঙ্খিত সুযোগ প্রদান/গ্রহণ এমন কোন শারিরীক বা মৌখিক আচরণ যা যৌনতার সঙ্গায় পড়ে। 
ঙ) শারিরীক অপমানঃ সেই সকল শারিরীক সংস্পর্শ যার দ্বারা কেউ আঘাত পেতে পারে এবং সেই সকল শাস্তি যা শারিরীক অসুস্থতার সৃষ্টি করতে পারে। 
  
কর্মক্ষেত্রে নিম্নলিখিত প্রকারের হয়রানি বা অসাদাচরণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধঃ-
ক) মৌখিকভাবে গালিগালাজ করে কোন শ্রমিককে হয়রানি করা যাবে না। 
খ) কোন শ্রমিককে শারীরিক নির্যাতন কিংবা মারধর করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। 
গ) মানসিক পীড়াদায়ক কোন আচরণ করা যাবে না। 
ঘ) অঙ্গ ভঙ্গীর সাহায্যে কোন শ্রমিকের সাথে উদ্ধত্য আচরণ করা যাবে না।
ঙ) কোন শ্রমিকের প্রতি কোন প্রকার বস্তু নিক্ষেপ বা ভয় ভীতি প্রদর্শন করানোর জন্য  কোন বস্তু প্রদর্শন করা যাবে না।
চ) কোন শ্রমিককে কোন অন্যায় কাজের জন্য শাস্তি স্বরূপ অতিরিক্ত কাজ করতে বাধ্য করা যাবে না।
ছ) কোন শ্রমিককে কোন প্রকারেই খাবার পানি গ্রহণ করতে বাঁধা দেয়া যাবে না।
জ) কোন শ্রমিককে কোন অবস্থাতেই টয়লেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে বাঁধা দেয়া যাবে না।
ঝ) কোন শ্রমিককে কোন অবস্থাতেই শাস্তি স্বরূপ অতিরিক্ত কাজ করতে বাধ্য করা যাবে না।
ঞ) কোন শ্রমিককে যে কোন ধরনের অন্যায় আচরণের জন্য মজুরী কর্তন বা মজুরী কর্তনের ব্যাপারে ভয় ভীতি প্রদর্শন করা যাবে না।

রপ্তানীমূখি পোশাক শিল্পে উৎসাহী ও নিবেদিত প্রাণ শ্রমিক ও কর্মচারী বৃন্দ সাফল্যের নিয়ামক শক্তি হিসাবে কাজ করেন। স্বাবাবিক ভাবেই এই শিল্পে নিয়জিত সবার জন্য যথাযথ সম্মান নিয়ে কাজ করার ব্যবস্থা করলে তা শিল্পের বিকাশে প্রভূত সহায়ক হবে। এই লক্ষ্যেই শরীফ গ্রুপ এমন একটি উৎপাদন সহায়ক কর্ম পরিবেশ বজায় রাখতে বদ্ধ পরিকর যে পরিবেশ সকল প্রকার হয়রানী ও গালিগালাজ মুক্ত হবে।

২৩। প্রসুতি কালীন ছুটিঃ-
কারখানায় কর্মরত সকল মহিলা শ্রমিকদের ক্ষেত্রে মাতৃত্বকালীন ছুটি একটি মৌলিক অধিকার। মহিলা শ্রমিকদের এই মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকল্পে দেশের প্রচলিত শ্রমনীতি তথা মাতৃত্বকল্যান আইন এবং ২০০৬ইং সালের সংশোধিত নীতিমালার সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে কারখানায় নিয়োজিত মহিলা শ্রমিকদের মাতৃত্বকল্যাণ সুবিধা নিশ্চিত করা কারখানা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের জন্য অত্যাবশ্যক। যেহেতু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শ্রমিকের চেয়ে কোন সুবিধা কম দেওয়ার বিধান নাই কাজেই সেই হিসাবে তাদের জন্য শ্রমিকের ন্যায় উলে­খিত সুবিধা প্রদান করা হয়।

মোট কথা কর্তৃপক্ষ মাতৃত্বজনিত ছুটি ও বেনিফিট প্রদানের ক্ষেত্রে দেশের শ্রম আইন মোতাবেক তথা ২০০৬ইং সনের মাতৃত্বকল্যান আইনের   ধারা যথাযথভাবে অনুস্বরণ করে থাকে ।

এই আইনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে একজন সন্তান সম্ভাব্য মহিলা শ্রমিক সর্বমোট ১৬ (ষোল) সপ্তাহ বা ১১২ দিন মাতৃত্বকল্যাণ ছুটি স্ব-বেতনে ভোগ করতে পারেন। উলে­খিত ১১২ দিন ছুটির মধ্যকার ০৮ সপ্তাহ (৫৬ দিন) হলো মাতৃকল্যাণ ছুটি এবং বাকি ০৮ সপ্তাহ (৫৬ দিন) হলো শিশু পরিচর্যা ছুটি। 

কোম্পানী মহিলা কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের প্রসুতিকালীন ছুটি প্রদানের ক্ষেত্রে ২০০৬ইং সালের মাতৃকল্যাণ আইন অনুসরণ করে থাকে। এই আইন অনুযায়ী একজন বিবাহীতা মহিলা কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক সর্ব মোট ১৬ সপ্তাহ বা ১১২ দিন মাতৃত্বকল্যাণ ছুটি ভোগ করতে পারেন, উল্লেখিত মোট ১১২ দিন ছুটির মেয়াদকালীন সময়ে মধ্যে সকল প্রকার পর্ব, সরকারী ও সাপ্তাহিক ছুটি অন্তর্ভূক্ত হয়ে থাকে। 

২৪। মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগের যোগ্যতা, মেয়াদ এবং গুরুত্বপূর্ন অন্যান্য নিয়মাবলীঃ- 

শরীফ গ্রুপে একজন সন্তান সম্ভবা মহিলা শ্রমিক  নিম্নবর্নিত  নিয়মানুযায়ী  মাতৃত্ব  ছুটি ও সুবিধা ভোগ করে থাকেন ঃ-
প্রথমতঃ মহিলা কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক  সšতান প্রসবের সম্ভব্য তারিখে পূর্ববর্তী ০৮ সপ্তাহ বা ৫৬ দিন মাতৃত্ব কল্যাণ ছুটি ভোগ করতে পারবেন।
দ্বিতীয়তঃ  উক্ত মহিলা কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক সন্তান প্রসবের দিনসহ পরবর্তীতে আরো  ০৮  সপ্তাহ বা ৫৬ সবেতনে ছুটি ভোগ করতে পারবেন।
□ কোন মহিলা কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকের চাকুরীর মেয়াদ অত্র প্রতিষ্ঠানে সন্তাান প্রসবের তারিখের পূর্ব পর্যন্ত ০৬ মাস বা তার অধিক না হলে উক্ত শ্রমিক এ জাতীয় ছুটির জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না। একজন মহিলা  শ্রমিক কারখানায় তার চাকুরীকালিন সময়ে কেবলমাত্র  দুইবার উল্লেখিত সুবিধা পাবেন।
□ মহিলা শ্রমিককে সন্তান প্রসব পূর্ব এবং পরবর্তী মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগ করার জন্য মেডিকেল সার্টিফিকেট দাখিল করতে হবে ।  
□ যদি কোন মহিলা শ্রমিক চিকিৎসকের সনদপত্র ব্যতীত মৌখিকভাবে তার সন্তান সম্ভবা অবস্থা ও প্রসবের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবহিত করেন তাহলে উক্ত শ্রমিককে বিনা খরচে তার প্রসূতি  সংক্রান্ত সনদপত্র সংগ্রহের জন্য কোম্পানী নিযুক্ত চিকিৎসকের নিকট প্রেরন করা হয়ে থাকে ।
□  প্রসব পূর্ব ৮ সপ্তাহ ছুটি ভোগের জন্য  চিকিৎসকের সনদপত্র সহ পারসন্যাল ও এডমিন বিভাগের বরাবর ছুটির নির্ধারিত দরখাস্তের মাধ্যেমে আবেদন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে উক্ত শ্রমিক একই ছুটির দরখাস্তের অথবা নিদিষ্ট ফরম পূরন করে (নমুনা ফরম সংযুক্ত করা হলো ) তার পছন্দের যে কাউকে তার অবর্তমানে পরবর্তী ৮ সপ্তাহের  মাতৃত্বকল্যাণ ভাতা উত্তোলনের জন্য মনোনীত করতে পারবেন । ছুটির নির্ধারিত দরখাস্ত  উক্ত শ্রমিক এইচ আর ও কমপ্লায়েন্স বিভাগ হতে সংগ্রহ করতে পারবেন ।
□ কারখানার  এইচ আর এন্ড কমপ্লায়েন্স বিভাগ / শ্রমিক কল্যাণ অফিসার (যদি থাকে) ব্যক্তিগত ভাবে কর্মরত অশিক্ষিত শ্রমিকদের ছুটির নির্ধারিত দরখাস্ত পূরনে সাহায্য ও প্রয়োজনীয় উপদেশ প্রদান করবে ।
□ মহিলা শ্রমিক কর্তক জমাকৃত ছুটির আবেদন পত্র ও মেডিকেল সার্টিফিকেট সাপেক্ষে এইচ আর এন্ড কমপ্লায়েন্স বিভাগ শ্রমিকের মোট ১১২দিন/ ১৬ সপ্তাহের (৮ সপ্তাহ প্রসব পূর্ববর্তী+ ৮ সপ্তাহ প্রসব পরবর্তী) ছুটি মঞ্জুর করবে এবং একই সাথে প্রসব পূর্ববর্তী ৮ সপ্তাহের মাতৃত্বকালীন ছুটির সমূদয় পাওনা ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পরিশোধের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে ।
□ মাতৃত্বকল্যাণ ছুটি কালীন প্রদেয় মজুরী একটি ভিন্ন রশিদের মাধ্যমে প্রদান করতে হবে যার কপি সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের ব্যক্তিগত ফাইল এবং  মাতৃত্বকল্যাণ ছুটি সংক্রান্ত ফাইলে সংরক্ষন করতে হবে ।
□ সন্তান প্রসবের পূর্ব ও পরবর্তী ছুটি কালীন মজুরীর হিসাব সংরক্ষনে ব্যবহ্নত রশিদে উল্লেখিত মজুরী ব্যতীত অন্য কোন প্রকার প্রদেয় মজুরী হিসাব রাখা যাবে না । শ্রমিককে  দেয় অন্য সকল প্রকার  পাওনা (যদি থাকে)ভিন্ন রশিদের মাধ্যমে প্রদান করতে হবে । 
□ সন্তান প্রসবের পূর্ব ও পরবর্তী ছুটি কালীন সকল প্রদেয় মজুরীর হিসাবসহ ছুটির মেয়াদকাল সংক্রান্ত প্রয়োজনীয়  তথ্য উল্লেখ পূর্বক দেশের প্রচলিত আইনে বর্নিত পন্থায় একটি রেজিষ্টারে কারখানার  এইচ আর এন্ড কমপ্লায়েন্স বিভাগ সংরক্ষন করবে ।
□ শ্রমিক সন্তান প্রসবের পর তার মনোনিত ব্যক্তির মাধ্যমে এইচ আর এন্ড কমপ্লায়েন্স বিভাগকে সন্তান জন্ম সর্ম্পকে অবহিত করবেন ।
□ সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের মনোনিত ব্যক্তির মাধ্যমে জমাকৃত সন্তান প্রসবের লিখিত তথ্য প্রাপ্তির ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কারখানার এইচ আর এন্ড কমপ্লায়েন্স শ্রমিকের প্রসূতি পরবর্তী কালীন পাওনা মজুরী পরিশোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। এখানে উল্লেখ্য যে, সংশ্লিষ্ট শ্রমিক ইচ্ছা করলে মনোনীত ব্যক্তির মাধ্যম ছাড়া সরাসরি নিজে তার সুবিধামত সময়ে কারখানা থেকে উক্ত মজুরী গ্রহন করার অধিকার রাখেন । 
□ মাতৃত্বকালীন ছুটি ও ছুটিকালীন সুবিধা ভোগের পরবর্তী সময়ে কোন মহিলা শ্রমিক গ্রহণযোগ্য কারণবশত কারখানায় চাকুরী অব্যাহত রাখতে অনিচ্ছুক হলে, কারখানার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর পদত্যাগপত্র দাখিলের মাধ্যমে চাকুরীর অবসান ঘটাতে পারবেন এবং কর্র্তৃপক্ষ কোন প্রকার পাওনা (যদি থাকে) নিয়মানুযায়ী পরিশোধ করবেন।
□ কারখানায় কর্মরত সকল মহিলার ক্ষেত্রে কর্মস্থলে ঝুকিহীন ওস্বাস্থসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করবেন এবং গর্ভধারী মহিলা কর্মীদের অপেক্ষাকৃত সহজ ও হালকা কাজ প্রদান করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক মা ও শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করবেন।

২৫। প্রসূতি ভাতা সংক্রান্ত আইনঃ-
(০১) এ আইন মোতাবেক প্রসূতি ভাতা পাওয়ার অধিকারিনী যে কোন মহিলাঃ-
(ক) অন্তঃসত্তা হলে, যে কোনদিন ব্যক্তিগতভাবে মৌখিক অথবা এ আইনের অধীনে প্রণীত বিধিমালায় নির্ধারিত ফরমে কারখানা কর্তৃপক্ষ বরাবরে এ মর্মে নোটিশ দিবেন যে, পরবর্তী  ০৮ (আট) সপ্তাহের মধ্যে তার সন্তান প্রসবের সম্ভাবনা রয়েছে এবং উক্ত নোটিশেই যে কোন ব্যক্তিকে তার অবর্তমানে তার সম্পূর্ণ প্রসূতি ভাতার প্রাপ্য টাকা গ্রহণ করার জন্য মনোনয়ন দিতে পারেন।
(খ) কোন মহিলা যিনি উপরে বর্ণিত অনুচ্ছেদ ’ক’ এ উলে­খিত নোটিশ দেননি তিনি সন্তান প্রসবের দিন থেকে ০৭ দিনের মধ্যে অনুরূপ নোটিশ দিয়ে তার সন্তান প্রসবের সংবাদ কারখানা কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।
অনুরূপ নোটিশ পাওয়ার পর কারখানা কর্তৃপক্ষ, মহিলাকে নোটিশটি উপরে বর্ণিত (০১) উপধারার (ক) অনুচ্ছেদ মোতাবেক হলে নোটিশ দেওয়ার পরদিন থেকে প্রসবের পরবর্তী ০৮ (আট) সপ্তাহ এবং নোটিশটি উপরে বর্ণিত (খ) অনুচ্ছেদ মোতাবেক হলে প্রসবের দিন থেকে কাজে অনুপস্থিত থাকার অনুমতি দিবেন।

প্রসুতি ভাতা পাওয়ার অধিকারিণী মহিলাকে, মহিলা নিম্নোক্ত পন্থাসমূহের মধ্যে যেভাবে চান, কারখানা কর্তৃৃপক্ষ সেভাবে তার প্রাপ্য প্রসূতি ভাতা পরিশোধ করবেন।
০৮ (আট) সপ্তাহের মধ্যে মহিলার সন্তান প্রসবের সম্ভাবনা রয়েছে এমর্মে একজন চিকিৎসক কর্তৃক স্বাক্ষরিত প্রত্যায়নপত্র পেশ করার তিন দিনের মধ্যে ০৮ (আট) সপ্তাহের জন্য, অবশিষ্ট ০৮ (আট) সপ্তাহের জন্য সন্তান প্রসবের প্রত্যায়নপত্র পেশ করার ০৩ দিনের মধ্যে অথবা প্রসবের দিনসহ প্রসবের দিন পর্যন্ত উক্ত মেয়াদের জন্য সন্তান প্রসবের প্রত্যায়নপত্র পেশ করার তিন দিনের মধ্যে, এবং মেয়াদের অবশিষ্ট দিনসমূহের জন্য তিনি যে সন্তান প্রসব করেছেন অনুরূপ প্রমান পত্র পেশ করার ০৩ দিনের মধ্যে। 
অথবা
উপরোক্ত সম্পূর্ণ মেয়াদের জন্য, তিনি যে সন্তান প্রসব করেছেন এ মর্মে প্রমাণ পেশ করার ০৩ (তিন) দিনের মধ্যে।
শর্ত হচ্ছে যে, এ উপধারা মোতাবেক কোন মহিলা সন্তান জন্ম দিয়েছেন বলে প্রমাণপত্র পেশ কারার উপর প্রসূতি সুবিধা পাওয়া নির্ভরশীল হওয়ার ক্ষেত্রে, প্রসবের ০৮ (আট) সপ্তাহের মধ্যে অনুরূপ প্রমাণ পেশ করা না হলে কোন মহিলা কোন প্রসুতি সুবিধা বা এর কোন অংশ পাওয়ার অধিকারী হবেন না।

প্রসূতি ভাতা হিসাবের পদ্ধতিঃ-
১৯৩৯ এবং সংশোধিত ২০০৬ইং সালের মাতৃকল্যাণ আইন অনুযায়ী নিম্ন-লিখিত ভাবে প্রসূতি ভাতা প্রদান করা হয়ে থাকে।

মাতৃত্বকল্যাণ সুবিধা সংক্রান্ত নীতিমালার উপর প্রশিক্ষন ব্যবস্থাঃ-
□ কারখানায় বিদ্যমান মাতৃত্বকল্যান সংক্রান্ত নিয়মনীতির বিবরন শ্রমিকদের জন্য শ্রমনীতি পুস্তিকায় বাংলায় লিপিবদ্ধ করা আছে যা শ্রমিকরে মাতৃত্বকল্যান ছুটি ও মজুরী সংক্রান্ত পর্যাপ্ত ধারণা ও ঞ্জান প্রদানে সহায়ক ।
□ কারখানার বিভিন্ন দৃষ্টিগোচর ও সহজেই প্রবেশযোগ্য  স্থানে মাতৃত্বকল্যান সংক্রান্ত নিয়মনীতি প্রর্দশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে যা সহজেই পাঠযোগ্য এবং এতদসংক্রান্ত  বিষয়ে সঠিক ধারণা প্রদানে সহায়ক ।
□ মাতৃত্বকল্যান আইন ১৯৩৯ এবং সংশোধিত ২০০৬ইং সালের ধারার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় সমূহ ও কারখানার বিভিন্ন দৃষ্টিগোচর স্থানে প্রর্দশনের  ব্যবস্থা করা হয়েছে ।
□ কোম্পানীর কমপ্লায়েন্স ও মানব সম্পদ বিভাগ কতৃক কারখানার সকল ইনচার্জ ও সুপারভাইজারদেরকে মাতৃকল্যাণ সংক্রান্ত নিয়মনীতির উপর প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে যা সুপারভাইজার ও ইনচার্জবৃন্দকে শ্রমিকদের এতদসংক্রান্ত সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর প্রদানে সহায়তা করবে।
□ কারখানা কতর্ৃৃক নিয়োগকৃত নতুন মহিলা শ্রমিকদের জন্য সংশ্লিষ্ট এইচ আর এন্ড কমপ্লায়েন্স বিভাগ কোম্পানীতে বিদ্যমান মাতৃকল্যাণ সুবিধা ও ছুটির নীতিমালা সংক্রান্ত প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। 

২৬। সকল ছুটির আবেদনের নিয়মাবলী:-
কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক কর্তৃক ছুটি ভোগ করার জন্য নির্ধারিত দরখাস্তে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করতে হবে। প্রয়োজন স্বাপেক্ষে ছুটির দরখাস্তের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র দাখিল করতে হবে। আবেদন পদ্ধতির বিস্তারিত বিবরণ নিম্নে বণিত হলো-
ক. প্রত্যেক কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকে অবশ্যই কোম্পানীর নির্ধরিত ফরমে ছুটির জন্য আবেদন করতে হবে ।
খ. অবশ্যই সংশ্লিষ্ট শাখা প্রধানের সুপারিশ আবেদনপত্রের উপরে থাকতে হবে ।
গ. ছুটির কারণ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সকল প্রমানপত্র অবশ্যই আবেদনপত্রের সাথে দাখিল করতে হবে।
ঘ. কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক প্রস্তাবিত ছুটির তারিখের কমপক্ষে ৩ (তিন) দিন পূর্বে কোম্পানীর নির্ধারিত ছুটির ফর্ম পূরন করে বিভাগীয় প্রধান এর নিকট জমা দিতে হবে ।
ঙ. কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক কোন জরুরী কারণে অনুপস্থিত থাকলে অবশ্যই কোন গ্রহণযোগ্য মাধ্যমে উপযুক্ত সময়ের মধ্যে নিজ নিজ  বিভাগীয় প্রধান / সুপারভাইজার / মানবসম্পদ বিভাগের নিকট খবর পাঠাতে হবে ।
চ. কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক কর্তৃক ছুটির আবেদনপত্র কারখানার স্ব-স্ব  এইচ আর এন্ড কমপ্লায়েন্স বিভাগ হতে মোট প্রাপ্য  (নৈমিত্তিক / অর্জিত / মেডিকেল ) ছুটির পরিমাণ সহ সংগ্রহ করতে হবে এবং আবেদন পত্র পূরণ করে যথযথ   কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করতে হবে ।
ছ. কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকগন ছুটিতে যাওয়ার সময় সংশ্লিষ্ট সুপারভাইজার সহকর্মীবৃন্দ এবং অধীনস্থ কর্মকর্তা,  কর্মচারী ও শ্রমিকগণকে নিজের কাজ বুঝিয়ে দিয়ে যাবেন, যাতে তার অনুপস্থিতিতে কোন কাজ ব্যহত না হয় ।
জ. ছুটি আবেদনকারীর ছুটির মাঝখানে যদি কোন সাপ্তাহিক বা জাতীয় ছুটি পড়ে যায় সে ক্ষেত্রে ছুটির শুরু থেকে শেষ দিন পর্যন্ত সর্বমোট দিন গুলিকে ছুটি হিসেবে গন্য করা হবে । 

২৭। শ্রমিক কর্তৃৃৃক অভিযোগ/ উত্থাপনের বিভিন্ন পদ্ধতি তথা অসন্তোাষ নিরসন প্রক্রিয়াঃ-
কর্মক্ষেত্রে অসন্তুষ্টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচরে আনার জন্য একটি সুষ্পষ্ট অভিযোগ উত্থাপন ও নিরসন সংক্রান্ত নীতিমালা আবশ্যক। কর্মক্ষেত্রে অভিযোগ প্রকাশের উপায় না থাকলে অসন্তুষ্টি, হতাশা, উদাসীনতা ও নীতিবেধের অভাব দেখা দেয়। তাই যে কোন ধরনের অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত ও কার্যকরী নীতিমালা। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের সন্তুষ্টি নিশ্চিতকল্পে শরীফ গ্রুপ এর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ নিম্ন-লিখিত সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরন করে থাকেন। 
ছয়টি পৃথক পদ্ধতিতে শরীফ গ্রুপ এ শ্রমিকদের অভিযোগ নিরসন করা হয়ে থাকেঃ-
(০১) যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে মৌখিক অথবা লিখিত অভিযোগ উত্থাপন। 
(০২) “পরামর্শ বক্স’’ এর মাধ্যমে লিখিত অভিযোগ উত্থাপন।
(০৩) পিসি কমিটির মাধ্যমে অভিযোগ উত্থাপন।
(০৪) এইচ.আর, কমপ্লায়েন্স বিভাগের প্রতিনিধি বরাবরে।
(০৫) ওয়েলফেয়ার কর্মকর্তার বরাবরে অভিযোগ উত্থাপন।
(০৬) সরাসরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বরাবরে মৌখিক অথবা লিখিত অভিযোগ উত্থাপন।

(১) লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ-
□ যে কোন শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে তার যে কোন ধরনের সমস্যা / অভিযোগ লিখিত বা মৌখিকভাবে সংশ্লিষ্ট সুপারভাইজার/ ইনচার্জ কে জানাবেন যাতে তাদের অসন্তুষ্টি বা সমস্যার দ্রুত সমাধান করা হয়। 
□ সুপারভাইজার তার সংশ্লিষ্ট ইনচার্জ এর সঙ্গে পরামর্শ করে শ্রমিক কর্তৃক উত্থাপিত অসন্তুষ্টি বা সমস্যার তাৎক্ষনিক সমাধানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
□ অভিযোগের জটিলতা বা গভীরতার প্রেক্ষিতে সুপারভাইজার/ইনচার্জ প্রোয়োজনবোধে বিভাগীয় প্রধান এর সাহায্য ও সহযোগিতা গ্রহণ করবেন এবং বিভাগীয় প্রধান সরাসরি নিজে অথবা প্রয়োজনবোধে এইচ আর এন্ড কমপ্লায়েন্স বিভাগ অথবা কারখানা প্রধানের সাহায্য নিয়ে অভিযোগ নিরসনের দ্রুত ও সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
□  যে কোন কর্মকর্তা,কর্মচারী ও শ্রমিক অত্র কোম্পানীর মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদয় বরাবরে মোবাইলে সরাসরি ফোন করে তার কোন অভিযোগ ও পরামর্শ থাকলে তা জানাতে পারবেন।

(২) পরামর্শ বাক্সঃ-
কারখানা অভ্যন্তরে অবস্থিত ফ্লোরের প্রতিটি মহিলা ও পুরুষ টয়লেট ও ক্যান্টিনে পরামর্শ বাক্স্র সমূহ এমন ভাবে স্থাপন করা আছে যার মাধ্যমে একজন শ্রমিক তার অভিযোগ / অসন্তুষ্টি লিখিতভাবে নিজের পরিচয় গোপন রেখে দাখিল করতে পারেন। 

পরামর্শ বাক্সের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ নিম্নলিখিত পদ্ধতি সমূহ অনুসরন করে থাকেনঃ-
□ পরামর্শ বাক্সসমূহ এমনভাবে স্থাপন করা আছে যাতে শ্রমিকবৃন্দ কোন রকম দ্বিধা-দ্ব›দ্ব ছাড়াই সহজে ও নির্বিঘ্নে তাদের অভিযোগ বাক্সে জমা দিতে পারেন।
□ পরামর্শ বাক্স সবসময় তালাবদ্ধ অবস্থায় রাখা হয় এবং এর চাবি শুধুমাত্র এইচ.আর. ও কমপ্লায়েন্স বিভাগের নিকট রক্ষিত থাকে।
□ এইচ.আর.ডি. বিভাগ প্রতি বৃহস্পতিবার দিন এই অভিযোগ বাক্স সমূহ খুলে অভিযোগ গুলো সংগ্রহ করে থাকেন এবং প্রাপ্ত সকল অভিযোগ একটি নির্দিষ্ট রেজিষ্টারে লিখিতভাবে লিপিবদ্ধ করার পর অভিযোগ গুলো একটি ফাইলে সংরক্ষণ করে থাকেন। পরবর্তীতে প্রাপ্ত সকল লিখিত অভিযোগ ব্যবস্থাপক (এইচ আর এন্ড কমপ্লায়েন্স) এর সরাসরি তত্বাবধানে নিরপেক্ষ পরীক্ষা-নীরিক্ষার মাধ্যমে ইউনিট প্রধানের সহযোগিতায় উপযুক্ত ব্যবস্থা/সমাধান প্রদান করে থাকেন।
□ এখানে উল্লেখ্য যে, প্রতিটি অভিযোগ এর প্রেক্ষিতে গৃহীত ব্যবস্থা/ সমাধান নির্দিষ্ট রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করা হয়ে থাকে।

(৩) পিসি কমিটিঃ-
শরীফ গ্রুপ এ শ্রমিক কর্তৃ কসরাসরি নির্বাচিত একটি পিসি কমিটি (চঈ) বিদ্যমান আছে যার মাধ্যমে প্রত্যেক শ্রমিক তার পরামর্শ / অভিযোগ/অসন্তুষ্টি মৌখিক বা লিখিত ভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে পারবেন।
শরীফ গ্রুপ এর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং নির্বাচিত অংশগ্রহণকরী কমিটি প্রতি মাসে কমপক্ষে একবার বৈঠকে মিলিত হবেন এবং প্রতিটি বৈঠক শেষে, বৈঠকের মাইনিউটস্ প্রণয়ন করবেন এবং উক্ত মাইনিউটস্ উপস্থিত সকলের স্বাক্ষর সহ নির্দিষ্ট ফাইলে সংরক্ষন করবেন। প্রয়োজন সাপেক্ষে এ বৈঠক মাসে একাধিকবারও হতে পারে।

(৪) এইচ.আর, প্রশাসন ও কমপ্লায়েন্স বিভাগের প্রতিনিধি বরাবরঃ-
যদি কোন শ্রমিক তার উত্থাপিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে কারখানা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের গৃহিত ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট না হন তবে তিনি এইচ.আর, ও কমপ্লায়েন্স বিভাগে যোগাযোগ করে উলে­খিত অভিযোগের সুরাহা পেতে পারেন।

(৫) ওয়েলফেয়ার অফিসারের নিকটঃ-
যেকোন শ্রমিক তার যে কোন ধরনের অভিযোগ কল্যাণ কর্মকর্তার নিকট পেশ করতে পারেন। কল্যাণ কর্মকর্তা প্রাপ্ত অভিযোগ সমূহ সাধারণ ধরনের হলে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে তাৎক্ষনিক সমাধান দিয়ে থাকেন। তিনি গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে উর্ধ্বতন কর্তৃৃপক্ষের নিকট মতামত সহ রির্পোট পেশ করবেন।

(৬) সরাসরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বরাবরঃ-
যে কোন কর্মকর্তা,কর্মচারী ও শ্রমিক অত্র কোম্পানীর মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদয় বরাবরে মোবাইলে সরাসরি ফোন করে তার কোন অভিযোগ ও পরামর্শ থাকলে তা জানাতে পারবেন।

অভিযোগ উত্থাপনের ক্ষেত্রে শ্রমিকবৃন্দকে অবশ্যই সকল প্রকার হীন, অসৎ, উদ্দেশ্য প্রনোদিত ও ব্যক্তি স্বার্থেও উর্ধ্বে থেকে সততার সাথে অভিযোগ সমূহ উত্থাপন করতে অনুরোধ করা যাচ্ছে।

২৮। অসদাচরণঃ-
কর্মক্ষেত্রে সংযত আচরণ এবং সঠিক ভাবে ন্যাস্ত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে সুষ্ট ও সুন্দর ভাবে কাজের পরিবেশ রক্ষা করা শরীফ গ্রæপ এর সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকের নৈতিক দায়িত্ব। অত্র্র প্রতিষ্ঠান আশা করেন যে, প্রত্যেক কর্মকর্তা, কর্মূচারী ও শ্রমিক তাদের সহকর্মী, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে যথাযোগ্য সম্মান ও ভদ্রতা সহকারে আচরণ করবে এবং কর্মক্ষেত্রে কোন প্রকার অসৎ, অনৈতিক, অপরাধ মূলক ও কোম্পানীর জন্য ক্ষতিকর কর্মকান্ডে নিজেকে কখনো জড়াবে না । 

শ্রম আইন  ২০০৬ ইং অনুযায়ী শ্রমিক কর্তৃক নিম্নবর্ণিত কাজ ও ত্রুটি সমূহ অসদাচরণ রূপে বিবেচিত হয়ে থাকেঃ
(ক) একাকি বা সংঘবদ্ধভাবে কোন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আইনানুগ বা যুক্তিসংগত আদেশ ইচ্ছাকৃতভাবে পালন না করা বা অবাধ্যতা দেখানো।
(খ) কোম্পানীর সম্পত্তি সংক্রান্ত চুরি, প্রতারণা বা অসাধুতা অথবা কোন ধরনের ক্ষতি সাধন।
(গ) ঘুষ বা অবৈধ কোন পারিতোষিক গ্রহণ বা প্রদান।
(ঘ) ছুটি ব্যতিরেকে অভ্যাসগত অনুপস্থিতি বা ছুটি ব্যতিরেকে ১০ (দশ) দিনের বেশী অনুপস্থিতি।
(ঙ) অভ্যাসগতভাবে বিলম্বে কর্মস্থলে উপস্থিতি।
(চ) প্রতিষ্ঠানে প্রযোজ্য যে কোন আইন বা নিয়ম ভঙ্গ করার অভ্যাস।
(ছ) কোন কাজ না করার অভ্যাস বা কাজে অবহেলা।
(জ) কোন কাজ বা ত্রুটি এর জন্য জরিমানা আরোপ করা যেতে পারে তার উপর্যুপরি পুনরাবৃত্তি।
(ঝ) অনুমতি ব্যতিত কর্মক্ষেত্র ত্যাগ।
(ঞ) নাম, ঠিকানা, বয়স, যোগ্যতা, পূর্ণ অভিজ্ঞতা বিষয়ে মিথ্যা স্বাক্ষ্য প্রদান।
(ট) কোম্পানীর সম্পত্তি বা দলিলপত্র নষ্ট করা, ক্ষতি করা বা বিকৃত বা মিথ্যা প্রতিপন্ন করা।
(ঠ) ”অবৈধ ধর্মঘট” বা ”ধীরে কাজকরা” অথবা ধর্মঘট বা ধীরে কাজ করার জন্য অন্যদেরকে উস্কানি দেয়া।
(ড) কোম্পানী কর্তৃপক্ষর অনুমতি ব্যতিরেকে কোম্পানী ও নিকটবর্তী এলাকায় কোন ধরণের পোষ্টার, লিফলেট, 
      লিফলেট প্রচার করা।
(ঢ) অফিস/ কারখানার অভ্যšতরে ধুমপান।
(ণ) অফিস গৃহের/ কারখানার সীমানা এলাকায় জুয়া খেলা বা এ জাতীয় খেলায় অংশ গ্রহণ করা।
(ত) অভ্যাসগত শৃঙ্খলাহীনতা।
(থ) কর্মস্থলে ঘুমানো।
(দ)কর্মস্থলে অর্থ লেনদেন বা অন্য কোন ব্যক্তিগত ব্যবসায় অংশগ্রহণ।
(ধ) কোম্পানী / কারখানার ষ্টোরে বা মালামালের অপচয় বা ক্ষতি সাধন করা।
(ন) কোন প্রকার দুস্কর্মের বা অপরাধের জন্য আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত হইলে।
(প) কর্মস্থলে নিরাপত্তা মূলক সরঞ্জামাদির যথাযথ ব্যবহার না করা । 
উপরোক্ত অসদাচরনের জন্য উপযুক্ত শাস্তি বা চাকুরী হতে বহিষ্কার করা যেতে পারে।

২৯। অসদাচরণের শাস্তি/শৃংখলামূলক ব্যবস্থাঃ-

শৃংখলা মূলক ব্যবস্থার নীতিমালা
* প্রতিটি ফ্যাক্টরীতে নিয়ম শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নির্ধারিত কিছু নিয়ম রয়েছে।  মূলতঃ ফ্যাক্টরীতে কাজের পরিবেশ  রক্ষা এবং প্রত্যেক শ্রমিককে ভুল সংসোধনের উদ্দেশ্যে  নিম্নোক্ত নিয়ম পালন করতে হবে।
ক) মৌখিকভাবে বুঝানো কমপক্ষে ৩ বার
খ) মৌখিকভাবে সতর্ক করা কমপক্ষে ৩ বার
গ) কারন দর্শানোর নোটিশ যত বার প্রয়োজন
ঘ) লিখিত সতর্কবাণী কমপক্ষে ৩ বার

* উপরোক্ত ব্যবস্থায় ফলাফল না পাওয়া গেলে নিয়ম মাফিক কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে  থাকে। উল্লেখ্য, সাধারণ শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে শ্রমিকদেরকে প্রশিক্ষণ ও উদ্ভুদ্ধ করনের মাধ্যমে  সংশোধন পূর্বক কর্মের প্রতি মনোযোগী এবং  অনুরাগী করে তোলা হয় কোন অবস্থাতেই শারীরিক, দৈহিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন, অর্থ দন্ড বা অন্য কোন সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত করা হয় না।

৩০। চাকুরী হতে অবসান-
ক) কর্তৃপক্ষ কোন স্থায়ী  শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করার সময়  শ্রমিককে ১২০ দিনের নোটিশ বা  নোটিশের পরিবর্তে সম পরিমান দিনের  বেতন এবং অস্থায়ী শ্রমিককে ৬০ দিনের নোটিশ বা সমপরিমান দিনের বেতন প্রদান করতে হবে।
খ) চাকুরী অবসানের সময় অর্জিত ছুটির টাকা এবং উক্ত শ্রমিকের মোট কর্ম দিনের বেতন প্রদান করতে হবে।
গ) প্রবেশনারী পিরিয়ডের আওতায় নিয়োজিত শ্রমিককে কর্মদক্ষতার উপর ভিত্তি করে  ফ্যাক্টরীর যে কোন সময়ে  চাকুরীর অবসান ঘটাতে পারেন এবং এমতাবস্থায়  শ্রমিকের মোট কার্যদিবসের বেতন প্রদান করতে হবে।
ঘ)  কোন শ্রমিককে চাকুরী হতে অবসানের কারণ যদি তার কর্মদক্ষতার অভাব, অসদাচারণ বা এমন কোন আচরণ হয় যা  কোম্পানীর বিধি নিষেধ লঙ্ঘন করে  তবে তাকে চাকুরী হতে অবসানের  পূর্বে সংশ্লিষ্ট কারণ জানিয়ে  লিখিত নোটিশ প্রদান করিতে হবে এবং  এ সকল ক্ষেত্রে নোটিশ প্রদান ব্যতিরেকে তাকে সরাসরি চাকুরী হতে  অবসান করা যাবে না। 
ঙ) এতদসংক্রান্ত বিষয়ে কর্তৃপক্ষ দেশের প্রচলিত আইনের বিস্তারিত বিধি অনুসরণ করে থাকেন।

৩১। চাকুরী হতে অব্যহতি-
 দৈহিক বা মানসিক অক্ষমতার কারণে বা দীর্ঘ মেয়াদী অসুস্থতার কারনে কর্তৃপক্ষ কোন শ্রমিকে চাকুরী হতে অব্যহতি দিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে প্রচলিত আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় সুবিধা পাবেন ।

৩২। চাকুরী হতে বরখাস্ত-
দেশের প্রচলিত সংশ্লিষ্ট শ্রম আইনের বিধান অনুযায়ী একজন শ্রমিক দোষী সাব্যস্ত হলে নিম্নবর্ণিত নিয়মের আওতায় চাকুরী হতে বরখাস্ত করা যাবে-
ক) প্রকৃত কর্ম দিনের বেতন ভাতা প্রদান।
খ) যত বছর তত ১৪ দিনের মূল বেতন প্রদান।
গ) মোট প্রাপ্য অর্জিত ছুটির টাকা প্রদান।
ঙ) এতদসংক্রান্ত বিষয়ে কর্তৃপক্ষ দেশের প্রচলিত সংশ্লিষ্ট আইনের বিস্তারিত বিধিবিধান অনুসরণ করে থাকেন।

৩৩। চাকুরী হতে পদত্যাগ-
 কোন স্থায়ী শ্রমিক/কর্মচারী চাকুরী থেকে পদত্যাগ করতে চাইলে তাকে ৬০ দিনের লিখিত নোটিশ প্রদান করতে হবে। নোটিশ  প্রদানে ব্যর্থ  হলে তাকে ৬০ দিনের বেতন সমর্পন করতে হবে এবং কোন অস্থায়ী শ্রমিক/কর্মচারী চাকুরী থেকে পদত্যাগ করতে চাইলে তাকে ৩০ দিনের লিখিত নোটিশ প্রদান করতে হবে। নোটিশ  প্রদানে ব্যর্থ  হলে তাকে ৩০ দিনের বেতন সমর্পন করতে হবে । এতদসংক্রান্ত বিষয়ের অন্যান্য যাবতীয় নিয়মাবলী কর্তৃপক্ষ দেশের প্রচলিত  সংশ্লিষ্ট শ্রম আইন অনুসরণ করে থাকেন।

৩৪। হাজিরা লিপিবদ্ধ করন-
* টাইম কার্ডে এবং হাজিরা খাতায় ডে-অফ, ছুটি ও অনুপস্থিত লাল কালিতে চিহ্নিত করতে হবে। টাইম কার্ডে ইন-আউট উল্লে¬খ করতে হবে। অত্র গ্রুপের সকল কার্ডধারী মেনুয়েল ষ্টাফ ও শ্রমিকদের হাজিরা কার্ডে স্ব স্ব ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান (প্রশাসন) স্বাক্ষর করিবেন।

৩৫। উৎসব বোনাসঃ- 
সকল নিয়মিত/স্থায়ী কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক বৎসরে দুইটি উৎসব বোনাস পাবেন। কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে প্রতিটি উৎসব বোনাস হবে মোট বেতনের শতকরা আনুপাতিক হারে। আর কর্মচারী ও  শ্রমিদের ক্ষেত্রে  প্রতিটি উৎসব বোনাস হবে মাসিক মূল বেতন/মজুরীরর শতকরা আনুপাতিক হারে (সকল ধর্মের লোকের জন্য প্রযোজ্য)এবং নিম্নলিখিত নিয়মানুযায়ী প্রদেয় হবে। 
(ক) প্রথম উৎসব বোনাস ভাতা পাবেন ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে। (সকল ধর্মের লোকের জন্য প্রযোজ্য)
(খ) দ্বিতীয় উৎসব ভাতা পাবেন ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে। (সকল ধর্মের লোকের জন্য প্রযোজ্য)
(গ) সাধারণত উৎসবের পূর্বে উৎসব বোনাস দেওয়া হবে। 
(ঘ) উৎসবের দিন চাকরিকাল ০৬ (ছয়) মাস পূর্ণ হলে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক আনুপাতিক হারে  উৎসব  বোনাস পাবেন।  তবে ৬ মাস পূর্ন না হলে  বর্নিত সুবিধার অর্ধেক উৎসব বোনাস  পাবেন।

৩৬।  হাজিরা বোনাস-
 শ্রমিক কর্মচারীদের শত ভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত কল্পে তথা উৎপাদন শীলতা বৃদ্ধির লক্ষে সহঃ অপারেটর থেকে অপারেটর পদধারীদের পূর্নমাস উপস্থিতির জন্য (অনুমদিত ছুটি বাদে) নিন্ম বর্নিত হারে মাসিক ভিত্তিতে হাজিরা বোনাস প্রদান করা হয়-
০১. সহঃ অপারেটর = ৪০০/-,  ০২. অপারেটর = ৫০০/-, ০৩. শিক্ষানবীশ = ৪০০/-

৩৭।  বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধি-
শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের  দক্ষতা ও যোগ্যতা যাচাই/কর্ম মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রতি বৎসর মেয়াদান্তে ৫% হইতে ততোধিক % পর্যন্ত বেতন বৃদ্ধি করা হয়। 

৩৮।  বিশেষ বেতন বৃদ্ধি/ পদোন্নতি-
 অধিকতর  দক্ষ ও অত্যাবশ্যক শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের  কারখানায় ধরে রাখার জন্য বছরের যেকোন সময় বেতন বৃদ্ধি/পদোন্নতি প্রদান করা যেতে পারে। 

৩৯।  সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কার্য ভাতা/ক্ষতি পূরন-
সাপ্তাহিক ছুটি ও বন্ধের দিনে অতিরিক্ত কাজ করার  জন্য  শ্রমিক ও কর্মচারীদেরকে দৈনিক মূল বেতনের দিগুন হারে এবং কর্মকর্তাদেরকে ১ দিনের মোট বেতনের সমপরিমান টাকা   ভাতা/ক্ষতি পূরন হিসাবে  প্রদান করা হয় যা পরবর্তী কর্মদিবসে পরিশোধ যোগ্য। তবে, শ্রমিকদের ক্ষেত্রে উক্ত ভাতার অতিরিক্ত ১ দিনের বিকল্প ছুটি এবং ২ দিনের ভাতা প্রদান করা হয়। 

৪০।  গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স-
সকলের জন্য গ্রুপ ইন্স্যুরেন্সে ব্যবস্থা কোম্পানী বহন করিবেন ।

৪১। কল্যাণ নীতি-
* যে কোন আইন বা বিধি নিয়মই হোক না কেন  তা যদি সঠিক ভাবে প্রনয়ন  এবং উহার কার্যকরী প্রয়োগ না হয়  তা হলে ঐ বিধি, আইন বা নীতিমালা  কখনই শ্রমিক কর্মচারীর  কল্যান বয়ে আনবে না।  কর্তৃপক্ষ তাই  শ্রমিক কর্মচারীর সঠিক কল্যানের বিষয়ে  বিবেচনা করে এটি নীতিমালা প্রনয়ন করেছেন। এই নীতিমালার প্রধান বিষয় ও তার আলোচনা পর্যায়ক্রমে নিম্নে প্রদত্ত হল-
ক) খাবর পানি-
খাবার পানি সকল কর্মীর জন্য অপরিহার্য। তাই প্রত্যেক ফ্লোরে খাবার পানির জন্য বেসিন লাগানো আছে। 
প্রতি সপ্তাহে দুইবার পানির ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করা হবে।
প্রত্যেক শ্রমিক তার খাবার পানি  উক্ত ট্যাঙ্ক হতে নিজস্ব বোতল ভর্তি করে নিজের কাছে রাখবে এবং প্রয়োজনে পান করবে।
উক্ত খাওয়ার পানি পরীক্ষিত এবং যে কোন রকম রোগ জীবানুমুক্ত।

খ) প্রক্ষালনের সুযোগ সুবিধা-
চলিত আইন  অনুযায়ী  প্রত্যেক কারখানায় নিম্ন লিখিত সুযোগ সুবিধা থাকতে হবে-
কারখানায় শ্রমিকদের প্রক্ষালনের পর্যাপ্ত ও সুষ্ঠ ব্যবস্থা থাকতে হবে।
পুরুষ ও মহিলা শ্রমিকদের ব্যবহারের জন্য আরাদা আলাদা  পায়খানা ও প্রসাব খানার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে।
উক্ত পায়খানা ও প্রসাব খানা সমূহে উপযুক্ত আলোর ব্যবস্থা এবং বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
উক্ত পায়খানা ও প্রসাব খানা যথপোযুক্ত ভাবে স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে ময়লা পরিষ্কার করে সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
উক্ত পায়খানা ও প্রসাব খানা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা তদারকি করার জন্য চেকার নিয়োজিত আছে এবং তিনি উহার রক্ষনা বেক্ষণ  রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করবেন।
প্রতিটি টয়লেটের পার্শ্বে ওয়াশ রুমের ব্যবস্থা থাকতে হবে যাতে প্রতিটি শ্রমিক নিজ মুখমন্ডল ধুয়ে পরিষ্কার করতে পারবে।
ওয়াশ রুমের আয়না তরল সাবান এবং ময়লা রাখার পাত্র থাকতে হবে। ইহা ছাড়া প্রতিটি মহিলা টয়লেটে  একটি করে ঢাকনা যুক্ত  কন্টেইনার থাকতে হবে।

গ) প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জামাদি-
কাজের সময় যে কোন শ্রমিক অসুস্থ হতে পারে। তাই জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য  প্রতি ফ্লোরে প্রাথমিক চিকিৎসার বাক্স এবং প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কর্র্মী থাকবে। উক্ত প্রাথমিক চিকিৎসা  বাক্সের সংখ্যা কারখানায়  নিযুক্ত প্রতি ১৫০  জন শ্রমিকের জন্য নুন্যতম একটি করে বাক্স থাকবে। প্রাথমিক চিকিৎসা বাক্সের গায়ে প্রশিক্ষন প্রাপ্ত দায়িত্বশীল ব্যক্তির নাম সহ ছবি লাগিয়ে রাখতে হবে। 
প্রাথমিক চিকিৎসা বাক্সে নিম্নোক্ত সরঞ্জামাদি থাকতে হবে।
সেভলন ১ বোতল
নিক্স
সার্জিকেল গজ ৬টি ( ছোট)
বার্ণ ওয়েন্ট ম্যান্ট
রোলার ব্যান্ডজ মাঝারি ৩টি 
তুলার প্যাকেট
রক্তপাত নিবারনের যন্ত্র।
একজোড়া কাঁচি।
ওরস্যালাইন।
১ কপি প্রাথমিক চিকিৎসার প্রচার পত্র।
শতকরা দুইভাগ আয়োডিনের এলকোহলিক দ্রবন ভর্তি ১ বোতল ( ৪ আউন্স)
১টি ৪ আউন্স রেকটি ফাইড স্পিরিট ভর্তি বোতল
ত্রিভোজাকৃতি ব্যান্ডেজ
হাড় ভাঙ্গা ক্ষেত্রে ব্যবহার্য  টুকরা এর সরবরাহ
ক্ষুদ্র চিকিৎসার যন্ত্রপাতি  ও জীবানুমুক্ত দ্রবণ

ঘ) চিকিৎসা সুবিধা-
শ্রমিকের যে কোন ধরনের চিকিৎসা সুবিধা প্রদান করার জন্য হাসপাতাল / মেডিক্যাল রুমের ব্যবস্থা আছে যেকানে শ্রমিকরা বিনা মূল্যে  চিকিৎসা সুবিধা পেয়ে থাকে।
হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যাক ডাক্তার, নার্স এবং যন্ত্রপাতি রয়েছে। মেডিক্যাল রুমে একজন পুরুষ এবং একজন মহিলা ডাক্তর নিয়োজিত আছেন।
কর্তৃপক্ষ প্রতিটি ফ্লোরে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা সহ ফার্স্ট এইড বাক্সের ব্যবস্থা করেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা সঠিক ভাবে  এবং সময় মত পাওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ প্রতিটি ফ্লোরে একটি করে প্রাথমিক চিকিৎসা টিম গঠন করেছে।

ঙ) ক্যান্টিন সুবিধা-
কারখানায় পুরুষ ও মহিলা শ্রমিকদের খাবার সুবিধার জন্য ক্যান্টিন/ ভোজনালয়ের ব্যবস্থা আছে। সকল শ্রমিক এই ক্যান্টিনে/ ভোজনালয়ে তাদের দুপুরের খাবার গ্রহণ করে থাকে। ক্যান্টিন/ ভোজনালয়ে পর্যাপ্ত আসবাব পত্র ও বসার ব্যবস্থাসহ  বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করা হয়।   

চ) শিশুর জন্য সতন্ত্র কক্ষ-
শরীফ গ্রুপে  শিশুদের জন্য সতন্ত্র কক্ষ রয়েছে। মায়েরা তাদের শিশুদের এই কক্ষে রেখে কাজে যেতে পারেন। যেখানে একজন পরিচারিকা  সার্বক্ষনিক ভাবে এই শিশুদের দেখাশুনা করে থাকেন। মায়েরা প্রয়োজনে তাদের শিশুদের দেখে যেতে এবং দুধ পান করাতে পারেন। 

ছ) কল্যান কর্মকর্তা-
শরীফ গ্রুপ শ্রমিকদের সার্বিক  কল্যানের কথা বিবেচনা করে যে সমস্ত কারখানায় ৫০০ এর অধিক সংখ্যাক কর্মচারী নিযুক্ত আছে  তাদের জন্য একজন করে কল্যান অফিসার  নিয়োগ করেছে। কল্যান অফিসার নিম্ন লিখিত দায়িত্ব পালন করে থাকেন-
কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিকদের মধ্যে  সহযোগীতা মূলক সম্পর্ক রক্ষার জন্য সংযোগ স্থাপন ও আলোচনা অনুষ্ঠান।
শ্রমিকদের একক বা সমষ্টিগত  কোন অনুযোগ থাকলে সেগুলো তড়িৎ নিস্পত্তির  জন্য কর্তৃপক্ষের গোচরীভূত করা।
শ্রমিকদের বক্তব্য উপলবদ্ধি করা এবং পারস্পরিক মতামত  পার্থক্য দূর করার জন্য কর্তৃপক্ষ  ও শ্রমিকদেরকে সাহায্য করা।
কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের মধ্যে মত পার্থক্য দেখা দিলে  সে বিসয়ে আপোষ মীমাংশার জন্য নিজের প্রভাব কাজে লাগানো।
মজুরী ও চাকুরীর শর্তের বিষয়গুলো নিয়ে কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের প্রতিনিধির সাথে আলোচনা করা।
শ্রমিক মালিক উন্নায়নের জন্য কাজ করা।
শ্রমিকদের অধিকতর চিকিৎসা সুবিধার জন্য কারখানার মেডিক্যাল অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা।
শ্রমিকদের বিভিন্নকমিটি ও যুগ্ম উৎপাদন কমিটি, সমবায় সমিতি ও ওয়েলফেয়ার কমিটি গঠনকে উৎসাহিত করা এবং তাদের কাজ কর্মে তদারক করা।
বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা তথা ক্যান্টিনে/ ডাইনিং হল, বিশ্রামাগার, শিশুভবন, পর্যাপ্ত টয়লেটের ব্যবস্থা, খাবার পানি ইত্যাদির প্রতি লক্ষ্য রাখা।
স্ববেতনে ছুটি মঞ্জুরীর ব্যাপারে মালিক পক্ষকে সাহায্য করা এবং যে কোন ছুটি ও অন্যান্য  নিয়মকানুনের ব্যাপারে শ্রমিকদের বুঝিয়ে বলা।
গৃহ সংস্থান, খাদ্য সমবায় সমিতিতে ন্যায্য মূল্যের যে কোন প্রতিষ্ঠানে সামাজিক ও প্রমোদমূলক সুযোগ সুবিধা, স্বাস্থ্য রক্ষা ব্যবস্থা, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার সুযোগ ইত্যাদি শ্রম কল্যান মূলক বিষয়ের উপর লক্ষ্য রাখা।
শ্রমিকদের কাজের  ও জীবনযাত্রার মান উন্নায়ন ও তাদের কল্যানমূলক ব্যাপারে সচেষ্ট থাকা ও সুপারিশ করা।
নবাগত শ্রমিকদের দান, শ্রমিকদের শিক্ষার মান উন্নয়ন ও কারিগরি ইনষ্টিটিটে তাদের যোগদানের উৎসাহদান সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেয়া।

No comments

Powered by Blogger.