বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫ অনুযায়ী সেইফটি কমিটির নিজস্ব দায় দায়িত্ব সম্বলিত গাইডলাইন বা নির্দেশিকা (Guideline or Instruction Book with details of own Responsibilities as per BLR 2015 of Safety Committee)
বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫ অনুযায়ী সেইফটি কমিটির নিজস্ব দায় দায়িত্ব সম্বলিত গাইডলাইন বা নির্দেশিকা
Guideline or Instruction Book with details of own Responsibilities as per BLR 2015 of Safety Committee
প্রতিষ্ঠানের পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি বিষয়ক নির্দেশিকা বা গাইডলাইন
প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত সকল ব্যক্তির এবং যারা পরিদর্শনে আসেন তাদেরও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ ও সেইফটি নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিষ্ঠানের মালিক/ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এ মর্মে প্রতিতিবদ্ধ যে,
- স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ কর্মক্ষেত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ধারাবাহিকভাবে উন্নতি সাধন করা হবে;
- বাংলাদেশ শ্রম আইন এবং তদীয় বিধিমালায় উল্লেখিত আবশ্যকীয় আইনগত বিধি মেনে চলা হবে।
(ক) দায়-দায়িত্ব
মালিক / ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দায়-দায়িত্বঃ
১. পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি, কল্যাণ এবং অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার জন্য নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োজিত করা;
২. পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করা;
৩. কর্মীদের জন্য উপযুক্ত ও কার্যকর সরঞ্জামাদি সরবরাহ করা (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামসহ)
৪. পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি সংক্রান্ত প্রশিক্ষনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা;
৫. পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি সংক্রান্ত এমন কার্যক্রম গ্রহণ ও চলমান রাখা, যা পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি সংক্রান্ত অন্যান্য বিধি বিধান এবং স্বীকৃত আন্তর্জাতিক শ্রম মানদন্ডকে সমর্থন করে;
৬. অনিরাপদ কর্ম পরিবেশ সম্পর্কে শ্রমিকদের জানাতে হবে এবং কোন কিছু উপেক্ষা করা হয়নি মর্মে নিশ্চিত করা;
৭. সেইফটি সংক্রান্ত সার্বিক নিয়ন্ত্রণ রক্ষা করা।
২. পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করা;
৩. কর্মীদের জন্য উপযুক্ত ও কার্যকর সরঞ্জামাদি সরবরাহ করা (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামসহ)
৪. পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি সংক্রান্ত প্রশিক্ষনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা;
৫. পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি সংক্রান্ত এমন কার্যক্রম গ্রহণ ও চলমান রাখা, যা পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি সংক্রান্ত অন্যান্য বিধি বিধান এবং স্বীকৃত আন্তর্জাতিক শ্রম মানদন্ডকে সমর্থন করে;
৬. অনিরাপদ কর্ম পরিবেশ সম্পর্কে শ্রমিকদের জানাতে হবে এবং কোন কিছু উপেক্ষা করা হয়নি মর্মে নিশ্চিত করা;
৭. সেইফটি সংক্রান্ত সার্বিক নিয়ন্ত্রণ রক্ষা করা।
সেইফটি অফিসার (পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি এবং অগ্নি নির্বাপণ) এর দায়-দায়িত্বঃ
তিনি মালিক/ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দিবেন এবং নিম্নোক্ত বিষয়ে দায়িত্ব পালন করবেন-
- ব্যক্তিগত আঘাত/জঘম ও অসুস্থতা এবং সম্পদ ও সরঞ্জামাদির ক্ষয় ক্ষতি থেকে রক্ষা;
- স্বাস্থ্য ও সেইফটি সংক্রান্ত আইনগত বিধিবিধান পালন;
- সুরক্ষা পোশাক ও সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা ও ব্যবহার;
- সেইফটি বিষয়ক নতুন সরঞ্জামাদির উপযুক্ততা এবং যথাযথ সার্টিফিকেটসমূহের মেয়াদ পরীক্ষা;
- পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি সংক্রান্ত সকল কাজের সমন্বয় সাধন;
- নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিদ্যমান সকল কর্মপদ্ধতি সকল স্থানে কার্যকরভাবে পরিচালনা নিশ্চিত করা;
- সকল তদারকি কর্মীদের প্রয়োজনীয় তথ্য, পরামর্শ এবং সহযোগিতা প্রদান;
- পর্যায়ক্রমে পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি বিষয়ক প্রশিক্ষন প্রদান;
- ঝুঁকিপূর্ণ কর্মক্ষেত্র চিহ্নিতকরণে সমন্বয় এবং চিহ্নিত দোষ-ত্রæটি নিরসনে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ;
- পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি বিষয়ক অভিযোগ গ্রহণ এবং এ বিষয়ে কল্যাণ কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ;
- দুর্ঘটনার প্রবণতা নির্ণয় এবং সেইফটি সার্বিক অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ;
- পরিদর্শনকালে সরকারী পরিদর্শকের সঙ্গে থাকবেন বা সহযোগিতা প্রদান;
- নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা;
- পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি বিষয়ক সকল দলিল পত্র রক্ষণাবেক্ষন ও সংরক্ষণ।
পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি বিষয়ক কল্যাণ কর্মকর্তার দায়-দায়িত্বঃ-
১. শ্রমিকদের নিকট হতে পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ এবং এ বিষয়ে সেইফটি অফিসারের সাথে যোগাযোগ;
২. চিকিৎসা কর্মীসহ প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য কক্ষ রক্ষণাবেক্ষন;
৩. হাসপাতালে যোগাযোগের জন্য সার্বক্ষণিক পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ;
৪. আহতাবস্থা, অসুস্থতা, ক্ষয়-ক্ষতি এবং উৎপাদন ঘাটতি সংক্রান্ত সকল তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ নিশ্চিতকরন;
৫. বিভিন্ন কল্যাণমূলক সুযোগ-সুবিধা, যেমন- ক্যান্টিন, বিশ্রামাগার, খাবার পানি সংক্রান্ত ব্যবহার নিশ্চিতকরন;
৬. শ্রমিকদের পরবর্তী চিকিৎসা সুবিধার জন্য কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা; এবং
৭. এছাড়াও কল্যাণমূলক ব্যবস্থা সংক্রান্ত কল্যাণ কর্মকর্তার আরও যেসব দায়-দায়িত্ব রয়েছে তা পালন;
তদারকি কর্মকর্তার দায়-দায়িত্বঃ-
১. কাজ শুরুর পূর্বে সকল শ্রমিকদের নিরাপদ কর্ম পদ্ধতি সম্পর্কে নির্দেশনা দেয়া;
২. কর্মক্ষেত্রে নিয়মিত সেইফটি বিষয়ক সভা পরিচালনা করা;
৩. তদারকি কর্মকর্তার তত্বাবধানে শ্রমিকদের কাজ করতে যে সকল যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জামাদি ব্যবহার করা হবে সেগুলো নিরাপদ কিনা তা নিশ্চিত হওয়া; অনিরাপদ কর্মাভ্যাস এবং কর্মাবস্থার জন্য নিয়মিত পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা এবং এ বিষয়ে তাৎক্ষনিক সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করা;
৪. পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি বিষয়ক সমস্যা চিহ্নিত করা এবং সেগুলোর সমাধান করা;
৫. অনিষ্পন্ন সমস্যাগুলো সম্পর্কে সেইফটি অফিসারকে অবহিত করা;
৬. নিরাপদ কর্ম পদ্ধতি সম্পর্কে শ্রমিকদের তাগিদ বা স্মরণ করিয়ে দেয়া, তাদেরকে নিয়ম কানুন পালনে সচেষ্ট থাকা এবং সরবরাহকৃত সুরক্ষা সরঞ্জামাদির ব্যবহার নিশ্চিতকরণ;
৭. সকল প্রকার দুর্ঘটনা সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে জানানো;
৮. দুর্ঘটনা তদন্তে অংশগ্রহণ করা; এবং
৯. নিরাপদভাবে কাজ করার জন্য সব সময় উদাহরণ উল্লেখ করে নির্দেশনা প্রদান।
শ্রমিকদের দায়-দায়িত্বঃ-
১. সেইফটি সম্পর্কিত সকল নিয়ম-কানুন এবং কার্যপ্রণালী সম্পর্কে জানবেন ও মেনে চলা;
২. স্বাস্থ্য ও সেইফটি বিষয়ে মালিক কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করা;
৩. কার্যপ্রণালী সম্পর্কে অনিশ্চিত হলে জিজ্ঞাসা করে জেনে নেয়া;
৪. কাজের সঠিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম ব্যবহার করা এবং ব্যবহার শেষে সেগুলো ভালভাবে রাখা;
৫. স্বাস্থ্য ও সেইফটি রক্ষায় সরবরাহকৃত সরঞ্জাম এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করা;
৬. জরুরী চলাচলের রাস্তা, বহির্গমণ এবং অগ্নি নির্বাপন সরঞ্জামকে কোনভাবেই বাঁধার সৃষ্টি না করা;
৭. মদ্যপান বাবহার মাদকদ্রব্য সেবনের ফলে কোনভাবেই প্রভাবিত বা অস্বাভাবিক নন এই মর্মে নিশ্চিত থাকা;
৮. বিপজ্জনক কোন অবস্থা সম্পর্কে জানা মাত্রই ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে জানানো;
৯. স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য যে ব্যবস্থা কার্যকর থাকা প্রয়োজন তা না থাকলে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে জানানো (সমস্যা উপেক্ষা না করা বরং অনিরাপদ পরিবেশে কাজ না করা);
১০. দুর্ঘটনা সম্পর্কে দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো;
১১. “সেইফটি সর্বপ্রথম” মর্মে মনোভাব তৈরী করা; কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের কেউ আহত বা জখম, অসুস্থ, মৃত্যু বা সম্পদের ক্ষয় ক্ষতির বিষয়ে ঝুঁকি গ্রহণ না করা;
১২. স্বাস্থ্য ও সেইফটি বিষয়ক প্রশিক্ষণে বাধ্যতামূলকভাবে অংশগ্রহণ;
১৩. ধুমপান না করা (শুধুমাত্র বিরতির সময়ে নির্ধারিত স্থানে ধুমপান করা যাবে)।
(খ). সেইফটি কমিটি
১. সেইফটি কমিটির কার্যাবলী
১. কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি বিষয়ক নীতিমালা ও কার্যপ্রনালী তৈরী, প্রয়োগ এবং মনিটরিংয়ে অংশগ্রহণ করা;
২. প্রতিষ্ঠানের অগ্নি নির্বাপক দল, উদ্ধারকারী দল এবং প্রাথমিক চিকিৎসা দল গঠন ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে সহযোগিতা করা;
৩. ঝুঁকি নিরূপনে চেকলিষ্ট তৈরী করা;
৪. প্রতিমাসে চেকলিষ্ট ব্যবহারে সমন্বিত ঝুঁকি নিরূপন করা এবং প্রতিকারের প্রস্তাবনা তৈরী করা;
৫. প্রতি সপ্তাহে পর্যবেক্ষন করা এবং প্রতিকারের প্রস্তাব পেশ করা;
৬. চিহ্নিত ঝুঁকি সম্পর্কে মালিককে জানানো;
৭. পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি সংক্রান্ত বিষয়ে শ্রমিকদের নিকট শুনা এবং তদন্ত নিষ্পত্তির কাজে সহযোগিতা করা;
৮. কমিটি শ্রমিকদের জীবনের জন্য মারাত্মক ও আসন্ন ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকলে তাৎক্ষনিকভাবে কাজ বন্ধ করতে অনুরোধ করবে;
৯. প্রশিক্ষন উন্নয়ন, আয়োজন ও প্রদান এবং তথ্য প্রচারণায় অংশগ্রহণ করা;
১০. দুর্ঘটনার তদন্ত কাজ পরিচালনা করা;
১১. পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি বিশেষজ্ঞ ও কর্তৃপক্ষের বিস্তারিত যোগাযোগের ঠিকানা সংরক্ষণ করা;
১২. অগ্নি নিরাপত্তাসহ পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি সম্পর্কিত সর্বশেষ সংশোধনীসহ আইন, প্রায়োগিক বিধিমালা, ইমারত আইন ও সার্কুলার সংরক্ষণ করা;
১৩. কমিটির কার্যক্রম সম্পর্কে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিকদের জানানো;
১৪. সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রাখা, বিশেষ করে, সেইফটি কমিটির সুপারিশ প্রাপ্তির পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নিলে শ্রমপরিদর্শককে জানাতে হবে।
২. কিভাবে সেইফটি কমিটি গঠন করতে হবে-
- কমিটির মোট সদস্য সংখ্যার ৫০ ভাগ অর্থাৎ অর্ধেক হবে শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি এবং অন্য ৫০ ভাগ হবে মালিক বা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি।
- সেইফটি কমিটিতে মোট সদস্য সংখ্যা ৬ এর কম এবং ১২ এর বেশি হবেনা এবং উহাতে মালিক ও শ্রমিক পক্ষের সমসংখ্যক প্রতিনিধি থাকবে।
- শ্রমিকের সংখ্যা অনুযায়ী সেইফটি কমিটির সদস্য সংখ্যার আনুপাতিক হার হবে নিম্নরূপ
মোট শ্রমিকের সংখ্যা কমিটির সদস্য সংখ্যা
৫০০ জনের কম ৬
৫০১ থেকে ১০০০ ৮
১০০১ থেকে ৩০০০ ১০
৩০০০ এবং এর অধিক ১২
৩. সেইফটি কমিটি কত দিনের মধ্যে গঠন করতে হবে?
উভয় পক্ষ তাদের প্রতিনিধি মনোনীত করার ১৫ দিনের মধ্যে কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হবে।
৪. কতদিন পর পর সেইফটি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে?
- সেইফটি কমটির সভা প্রতি ৩ মাসে কমপক্ষে একবার অনুষ্ঠিত হবে।
- প্রয়োজনে যেকোন সময়ে সভা আহবান করা যাবে।
- যদি কোন কারনে ৩ মাসের ব্যবধানে সভা অনুষ্ঠিত না হয় সেক্ষেত্রে যে কোন পক্ষ শ্রম পরিদর্শকের সহায়তা চাইতে পারবে।
যথাযথ প্রশিক্ষণ ছাড়া সেইফটি কমিটির সদস্যরা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করার মত সক্ষমতা অজর্ন করবে না। কমিটির প্রত্যেক সদস্যকে সেইফটি কমিটির কার্যক্রম ও পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এছাড়া ঝুঁকি নিরূপন, দুর্ঘটনার তথ্যানুসন্ধান, পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়সমূহ উত্থাপন ও সমাধান ইত্যাদি বিষয়েও তাদেরকে প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে।
উল্লেখিত বিষয়ে যদি সেইফটি অফিসারের যথেষ্ট জ্ঞান ও দক্ষতা থাকে তাহলে এসব প্রশিক্ষণ অভ্যন্তরীনভাবে আয়োজন করা যায়। এছাড়াও বাইরের অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে। সেইফটি অফিসারকে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, সেইফটি কমিটির সকল সদস্য আইনের সর্বশেষ পরিবর্তন সম্পর্কে এবং প্রতিষ্ঠানের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিধি-বিধানে যেসব পরিবর্তন আনা হয়েছে সে সম্পর্কে জানে।
এসব প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় আয়োজনের ব্যবস্থা মালিককেই করতে হবে। যেমন- কর্ম ঘন্টার মধ্য থেকে প্রশিক্ষনের সময় দেয়া, উপযুক্ত কক্ষের ব্যবস্থা করা এবং প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত সকল ব্যয় বহন করা।
৬. কমিটির গঠন-কাঠামো ও সুনির্দিষ্ট কার্যক্রমসমূহ
সেইফটি কমিটিতে অবশ্যই একজন সভাপতি থাকবেন যিনি মালিক বা কর্তৃপক্ষক কর্তৃক মনোনীত এবং একজন সহ-সভাপতি থাকবেন যিনি শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি কর্তৃক মনোনীত। সভাপতি ও সহ-সভাপতির যেসব দায়িত্ব ও করণীয় রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হচ্ছে-
- সভার আলোচ্য বিষয় বা এজন্ডা নির্ধারণ করা;
- সভায় সদস্যদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা;
- সভায় সভাপতিত্ব করা এবং সভা পরিচালনা করা;
- সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করা এবং অনুমোদন দেয়া;
- মালিক বা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত রিপোর্ট করা; এবং
- সেইফটি কমিটির নিকট থেকে কোন সুপারিশ পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে মালিক বা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ যদি তা বাস্তবায়নের কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করে তবে শ্রমপরিদর্শককে বিষয়টি জানানো।
কমিটির সদস্য সচিক যেসব কাজের জন্য দায়িত্ব প্রাপ্ত
- সভার আলোচ্য বিষয় বা এজন্ডা সকল সদস্যকে বিতরণ করা এবং সভার নির্দিষ্ট তারিখের কমপক্ষে ৫ দিন আগে সকল সদস্যকে সঠিক পন্থায় অবগত করা;
- সভা কক্ষ সঠিকভাবে গুছিয়ে রাখা (এমনকি পানির ব্যবস্থা পর্যন্ত নিশ্চিত করা);
- সভার আলোচনা সমূহের রেকর্ড/লিখিত বিবরণ রাখা;
- সভার কার্য বিবরণী সকল সদস্যদের মাঝে বিতরণ করা এবং রেজিষ্টার খাতায় লিপিবদ্ধ রাখা; এবং
- কমিটির ডকুমেন্টেশনসমূহ যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা।
কমিটির অন্যান্য সদস্যদের করণীয়
- প্রত্যেক সদস্য তার দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে শ্রমিকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করবেন এবং শ্রমিকরা যেসব সমস্যা সম্পর্কে উদ্বিগ্ন বা তাকে জানিয়েছে তা কমিটিকে যথাসময়ে জানানো;
- কমিটির সভার আলোচ্য বিষয় নির্ধারণে পরামর্শ প্রদান;
- যেসব সমস্যা দেখা দেয় তার কারণসমূহ ব্যাখ্যা করা;
- সমস্যা সমাধানের সম্ভাব্য উপায় সম্পর্কে পরামর্শ ও মতামত প্রদান;
- পূর্বের সমস্যা সমাধান করা হয়েছে কি না সে বিষয়ে মতামত দেয়া বা আলোচনা করা; এবং
- সেইফটি কমিটির সদস্যগণ কোন বিশেষ বিষয় সম্পর্কে মালিক/ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বা পরিদর্শকের নিকট উত্থাপন করতে পারেন।
(গ) প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দল
সদস্য-
- প্রত্যেক বিভাগের কমপক্ষে ৬% কর্মী;
- প্রত্যেক কর্মকক্ষে বা প্রত্যেক বিভাগ হতে কমপক্ষে একজন কর্মী;
- সহকর্মী শ্রমিক জখম এবং অসুস্থ হলে তাদেরকে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে মনোযোগী ও প্রতিশ্রতিবদ্ধ হতে হবে;
- নার্স এবং ডাক্তার সেবা দলের সদস্য হবেন;
- দলের সদস্যগণের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ থাকতে হবে।
(ঘ) জরুরী অপসারণ/উদ্ধারকর্মী দল
সদস্য-
- প্রত্যেক বিভাগের কমপক্ষে ৬% কর্মী;
- প্রত্যেক শিফ্টিংয়ে সব সময় প্রত্যেক বিভাগ হতে কমপক্ষে একজন কর্মী;
- জরুরী উদ্ধার ও অপসারণ কাজে শ্রমিকদের সহযোগীতায় মনোযোগী ও প্রতিশ্রæতিবদ্ধ হতে হবে;
- নিরাপত্তাকর্মী দলের প্রধান এ দলের সদস্য হবেন;
- দলের সদস্যগণের জরুরী অপসারণ/উদ্ধার কাজে প্রশিক্ষণ থাকতে হবে।
(ঙ) অগ্নি নির্বাপক দল
সদস্য-
- প্রত্যেক বিভাগের কমপক্ষে ৬% কর্মী;
- প্রত্যেক শিফ্টিংয়ে সব সময় প্রত্যেক বিভাগ হতে কমপক্ষে একজন কর্মী;
- ছোট পরিসরের অগ্নি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হতে হবে; এবং
- দলের সদস্যগণের অগ্নি নির্বাপন কাজে প্রশিক্ষণ থাকতে হবে।
(চ) বার্ষিক কর্ম পরিকল্পনা
সেইফটি কমিটি সুপারিশ মতে উর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ একটি বার্ষিক কর্ম পকিল্পনার অনুমোদন দিবেন। এ প্রতিষ্ঠান পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি বিষয়ক উন্নয়ন পরিকল্পনাও রক্ষনাবেক্ষণ করবে, যেখানে প্রাপ্ত সমস্যা, পরিকল্পিত কার্যক্রম এবং অগ্রগতি সম্পর্কে উল্লেখ থাকবে।
(ছ) কর্ম পদ্ধতি
সেইফটি অফিসার কর্মপদ্ধতি বা কর্ম পদ্ধতির খসড়া তৈরী করবেন। সেইফটি কমিটি এ কাজে সহযোগিতা করবে। মালিক/ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত কপি বিতরণ করবেন। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের জন্য নিরাপত্তার তথ্য সম্বলিত ডাটা শিট (গঝউঝ) থাকবে, যা তারা সহজে পেতে পারে।
(জ) বাস্তবায়ন মনিটরিং করা
অত্র পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শরীফ গ্রুপ নিয়মিত মনিটরিং করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ কাজ সম্পাদনে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো ব্যবহার করা হবে;
- পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি উন্নয়ন পরিকল্পনা;
- প্রতিষ্ঠানের দুর্ঘটনা ও অসুস্থতা সম্পর্কিত পরিসংখ্যান (যা নিয়মিত সংগ্রহ করা হবে)
- অভ্যন্তরীন আত্ম-মূল্যায়ন;
- শ্রমিকদের জন্য বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা;
- পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি বিষয়সমূহ পালন সম্পর্কে বহিরাগত অডিট প্রতিবেদন; এবং
- শ্রমিকদের পরামর্শ/অভিযোগ।
(ঝ) পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা বাস্তবায়ন পর্যালোচনা
শরীফ গ্রুপ প্রতিবছর অত্র নীতিমালার কার্যকারীতা পর্যালোচনা করবে এবং সেইফটি কমিটির সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সংশোধন করবে।
=== ০০০ ===
Wonderful
ReplyDelete