বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর আলোকে কতিপয় প্রয়োজনীয় সংজ্ঞা
দ্বিতীয় অধ্যায়
বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর আলোকে কতিপয় প্রয়োজনীয় সংজ্ঞা
যে কোন কারখানা চালাতে গেলে এর সাথে সম্পৃক্ত কিছু সংজ্ঞা জানা সকল কর্মকর্তাদের একান্ত প্রয়োজন। তা না হলে যে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হবে। এ জন্য সামান্য কিছু হলেও এ বিষয়ে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। তাই যে সমস্ত সংজ্ঞা জানা একান্তভাবে প্রয়োজন তার কিছু নিম্নোক্ত আলোচনা করা হলোঃ-
বাংলাদেশ শ্রমআইন ২০০৬ এর ২(৭) ধারা অনুযায়ী-
কারখানাঃ- এমন কোন ঘরবাড়ী বা আঙ্গিনা যে বছরে কোন দিন সাধারণতঃ ৫জন বা ততাধিক শ্রমিক কর্মরত থাকেন এবং উহার যে কোন অংশে কোন উৎপাদন প্রক্রিয়া চালু থাকে;
শ্রমিকঃ- শিক্ষাধীন সহ কোন ব্যাক্তি, তাহার চাকুরীর শর্তাবলী প্রকাশ্যে বা উহ্য যে ভাবেই থাকুক না কেন, যিনি কোন প্রতিষ্ঠানে বা শিল্পে সরাসরি ভাবে বা কোন ঠিকাদারের মাধ্যমে মজুরী বা অর্থের বিনিময়ে কোন দক্ষ, অদক্ষ, কায়িক, কারিগরী বা ব্যবস্যা উন্নয়নমূলক অথবা কেরানীগিরির কাজ করার জন্য নিযুক্ত হন। কিন্তু প্রধানত:
শ্রমিকের বিশেষ সংজ্ঞাঃ- বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোন কিছু না থাকিলে (ইউনিয়ন এবং শিল্প সম্পর্ক) অধ্যায়ে “শ্রমিক” অর্থধারা ২(৬৫) এ সংজ্ঞায়িত কোন শ্রমিক, এবং (ট্রেড ইউনিয়ন এবং শ্রমিক সম্পর্ক) অধ্যায়ের অধীনে শিল্প বিরোধ সম্পর্কে কোন কার্য ধারার প্রয়োজনে, উক্ত বিরোধের সূত্রে অথবা বিরোধের ফলে লে-অফকৃত, ছাঁটাইকৃত, ডিসচার্জকৃত বা বরখাস্তকৃত অথবা অন্যভাবে
চাকুরী হইতে অপসারিত কোন শ্রমিক অথবা যাহার লে-অফ, ছাটাই, ডিসচার্জ, বরখাস্ত বা অপসারন হইতে উক্ত বিরোধ উত্থিত হইয়াছে এরূপ কোন শ্রমিক উহার অন্তর্ভূক্ত হইবেন; কিন্তু কোন প্রতিষ্ঠানের পাহারা টহলদারী অথবা নিরাপত্তা ষ্টাফ, অগ্নি নির্বাপক ষ্টাফের কোন সদস্য এবং গোপনীয় সহকারী ইহার অন্তর্ভূক্ত হইবে না।
শ্রমিকের শ্রেনীবিভাগ এবং শিক্ষানবীশকালঃ
বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ৪ ধারা অনুযায়ী
১। কাজের ধরন ও প্রকৃতির ভিত্তিতে কোন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত শ্রমিকগনকে নিম্নলিখিত শ্রেণীতে বিভক্ত করা যাইবে, যথা-
ক) শিক্ষাধীন; খ) বদলী; গ) সাময়িক; ঘ) অস্থায়ী; ঙ) শিক্ষানবিশ; চ) স্থায়ী।
২। কোন শ্রমিককে শিক্ষাধীন শ্রমিক বলা হইবে যদি কোন প্রতিষ্ঠানে তাহার নিয়োগ প্রশিক্ষনার্থী হিসেবে হয়; এবং প্রশিক্ষন কালে তাহাকে ভাতা প্রদান করা হয়।
৩। কোন শ্রমিককে বদলী শ্রমিক বলা হইবে যদি কোন প্রতিষ্ঠানে তাহাকে কোন স্থায়ী শ্রমিক বা শিক্ষানবিসের পদে তাহাদের সাময়িক অনুপস্থিতিকালীন সময়ের জন্য নিযুক্ত করা হয়।
৪। কোন শ্রমিককে সাময়িক শ্রমিক বলা হবে যদি কোন প্রতিষ্ঠানে তাহার নিয়োগ সাময়িক ধরণের হয়।
৫। কোন শ্রমিককে অস্থায়ী শ্রমিক বলা হইবে যদি কোন প্রতিষ্ঠানে তাহার নিয়োগ এমন কোন কাজের জন্য হয় যাহা একান্তভাবে অস্থায়ী ধরণের এবং যাহা সীমিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৬। কোন শ্রমিককে শিক্ষানবিস শ্রমিক বলা হইবে যদি কোন প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী পদে তাহাকে আপাতত: নিয়োগ করা হয় এবং তাহার শিক্ষানবিসীকাল সমাপ্ত না হইয়া থাকে।
৭। কোন শ্রমিককে স্থায়ী শ্রমিক বলা হইবে যদি কোন প্রতিষ্ঠানে তাহাকে স্থায়ী ভাবে নিযুক্ত করা হয়, অথবা প্রতিষ্ঠানে তাহার শিক্ষানবিসীকাল সন্তোষজনক ভাবে সমাপ্ত করিয়া থাকে।
৮। কেরানী সংক্রান্ত কাজে নিযুক্ত কোন শ্রমিকের শিক্ষানবিসীকাল হইবে ৬ মাস এবং অন্যান্য শ্রমিকের জন্য এই সময় হইবে ৩ মাস তবে শর্ত থাকে যে, এক জন দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে তাহার শিক্ষানবিসীকাল আরো ৩ মাস বৃদ্ধি করা যাইবে যদি কোন কারণে প্রথম ৩ মাস শিক্ষানবিসী কালে তাহার কাজের মান নির্নয় করা সম্ভব না হয়।
৯। যদি কোন শ্রমিকের চাকুরী তাহার শিক্ষানবিসীকাল, বর্ধিত সময় সহ, অবসান হয়, এবং ইহার পরবর্তী ৩ বছরের মধ্যে যদি তিনি একই মালিক কর্তৃক পুনরায় নিযুক্ত হন তাহলে তিনি, যদি না স্থায়ী ভাবে নিযুক্ত হন, একজন শিক্ষানবিস হিসেবে গন্য হইবেন এবং তাহার নতুন শিক্ষানবিসীকাল গননার ক্ষেত্রে পূর্বের শিক্ষানবিসীকাল হিসাবে আনা হইবে।
১০। যদি কোন স্থায়ী শ্রমিক কোন নতুন পদে শিক্ষানবিস হিসেবে নিযুক্ত হন, তাহা হইলে তাহার শিক্ষানবিসীকালে যেকোন সময়ে তাহাকে পূর্বের স্থায়ী পদে ফেরত আনা যাইবে।
২(৪৯) ধারা অনুযায়ী-
মালিকঃ অর্থ এমন কোন ব্যাক্তি যিনি প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক নিয়োগ করেন, এবং নিম্নলিখিত ব্যক্তিগণও ইহার অন্তর্ভূক্ত হইবেন, যথা-
১। উক্ত ব্যক্তির কোন উত্তরাধিকারী, অভিভাবক, হস্তান্তর মূলে উত্তরাধিকারী বা আইনানুগ প্রতিনিধি,
২। উক্ত প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক বা উহার ব্যবস্থাপনা বা নিয়ন্ত্রনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি,
৩। সরকার কর্তৃপক্ষ বা সরকারের কর্তৃত্বাধীন পরিচালিত কোন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে, এতদউদ্দেশ্যে নিয়োজিত কোন কর্তৃপক্ষ, অথবা এরূপ কোন কর্তৃপক্ষ না থাকিলে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় বা বিভাগের প্রধান,
৪। কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বা উহার পক্ষে পরিচালিত কোন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এতদউদ্দেশ্যে নিযুক্ত কোন কর্মকর্তা না থাকিলে উহার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা,
৫। অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে, উহার মালিক এবং উহার প্রত্যেক পরিচালক, ব্যবস্থাপক, সচিব, প্রতিনিধি অথবা উহার কাজে কর্মের ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত কোন কর্মকর্তা বা ব্যাক্তি,
৬। মালিক ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তির দখলে আছে এরূপ কোন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে, উক্ত প্রতিষ্ঠান দখলকারী ব্যক্তি অথবা উহার নিয়ন্ত্রনকারী চুড়ান্ত ব্যক্তি অথবা ব্যবস্থাপক অথবা উক্ত কাজকর্মের ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত কোন উপযুক্ত কর্মকর্তা;
২(৪৫) ধারা অনুযায়ী-
মজুরীঃ অর্থা টাকায় প্রকাশ করা হয় বা যার এমন সকল পারিশ্রমিক যাহা চাকুরীর শর্তাবলী, প্রকাশ্যে বা উহ্য যেভাবেই থাকুক না কেন, পালন করা হইলে কোন শ্রমিককে তাহার চাকুরীর জন্য বা কাজ করার জন্য প্রদেয় হয়, এবং উক্তরূপ প্রকৃতির অন্য কোন অতিরিক্ত প্রদেয় পারিশ্রমিক ও ইহার অন্তর্ভূক্ত হইবে, তবে নিন্মলিখিত অর্থ ইহার অন্তর্ভূক্ত হইবে না, যথা:-
ক। বাসস্থান, আলো পানি, চিকিৎসা সুবিধা বা অন্য কোন সুবিধা প্রদানের মুল্য অথবা সরকার কর্তৃক সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা বাদ দেওয়া হইয়াছে এইরূপ কোন সেবার মূল্য,
খ। অবসর ভাতা তহবিল বা ভবিষ্য তহবিল মালিক কর্তৃক কোন চাঁদা,
গ। কোন ভ্রমণ ভাতা অথবা ভ্রমণ রেয়াতের মূল্য,
ঘ। কাজের প্রকৃতির কারনে কোন বিশেষ খরচা বহন করিবার জন্য কোন শ্রমিককে প্রদত্ত অর্থ ;
১২০ ধারা অনুযায়ী :
মুজুরীর বিশেষ সংঙ্গাঃ
বিষয় অথবা প্রসংগের পরিপন্থি কোন কিছু না থাকিলে, (মুজুরী ও উহার পরিশোধ) মুজুরী বলতে ২(৪৫) ধারায় যে অর্থ প্রকাশ করা হইয়াছে তাহা, এবং নিম্নলিখিত পাওনা গুলিও ইহার অন্তর্ভূক্ত হইবে যথা:
ক। নিয়োগের শর্ত অনুযায়ী প্রদেয় কোন বোনাস অথবা কোন অতিরিক্ত পারিশ্রমিক;
খ। ছুটি, বন্ধ অথবা অধিককাল কর্মের জন্য প্রদেয় কোন পারিশ্রমিক
গ। কোন আদালতের আদেশ অথবা পক্ষদ্বয়ের মধ্যে কোন রোয়েদাদ বা নিষ্পত্তির অধীনে প্রদেয় কোন পারিশ্রমিক;
ঘ। চাকুরীর অবসান, উহা ছাটাই, ডিসচার্জ, অবসারন, পদত্যাগ, অবসর, বরখাস্ত অথবা অন্য যে ভাবেই হউক না কেন, এর কারনে কোন চুক্তি বা এই আইনের অধিনে প্রদেয় কোন অর্থ; এবং
ঙ। লে-অফ অথবা সাময়িক বরখাস্তের কারনে প্রদেয় কোন অর্থ।
২(১০) ধারা অনুযায়ী :-
গ্র্যাচুয়িটিঃ অর্থ কোন শ্রমিকের প্রতি পুর্ন বছর চাকুরী অথবা ছয় মাসের অতিরিক্ত সময়ের চাকুরীর জন্য তাহার সর্বশেষ প্রাপ্ত মুজুরী হারে ন্যুনতম ৩০(ত্রিশ) দিনের মজুরী যাহা উক্ত শ্রমিককে তাহার চাকুরীর অবসানে প্রদেয়; ইহা শ্রমিকের বিভিন্নভাবে চাকুরীর অবসানজনিত কারনে মালিক কর্তৃক প্রদেয় ক্ষতিপুরন বা নোটিশ এর পরিবর্তে প্রদেয় ক্ষতিপুরণ বা নোটিশের পরিবর্তে প্রদেয় মজুরী বা ভাতার অতিরিক্ত হইবে।
২(২২ ধারা অনুযায়ী)
ধর্মঘট : অর্থ কোন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত একদল শ্রমিক কর্তৃক একত্রে কর্ম বন্ধকরন বা কাজ করিতে অস্বীকৃতি অথবা উহাতে নিয়োজিত কোন শ্রমিক সমষ্টি কর্তৃক ঐকমত্যের ভিত্তিতে কাজ গ্রহন করিতে বা কাজ চালাইয়া যাইতে অস্বীকৃতি;
২(৫৭) ধারা অরনুযায়ী :-
লক আউট : অর্থ কোন মালিক কর্তৃক কোন কর্মস্থান অথবা উহার কোন অংশ বন্ধ করিয়া দেওয়া অথবা উহাতে সংস্পুর্ন বা আংশিকভাবে কাজ স্থগিত রাখা অথবা কোর মালিক কর্তৃক চ‚ড়ান্তভাবে বা শর্ত সাপেক্ষে তাহার যে কোন সংখ্যক শ্রমিককে চাকুরীতে নিয়োজিত রাখিতে অস্বীকৃতি, যদি উক্ত রূপ বন্ধকরন, স্থগিতকরন বা অস্বীকৃতি কোন শিল্প বিরোধ সম্পর্কে হয় বা ঘটে অথবা শ্রমিককে কতিপয় শর্ত মানিতে বাধ্য করার উদ্দেশ্যে করা হয়:-
২ (৫৮) ধারা অনুযায়ী :-
লে-অফ : অর্থ কয়লা, শক্তি বা কাচামালের স্বল্পতা, অথবা মাল জমিয়া থাকা অথবা যন্ত্রপাতি বা কলকব্জা বিকল বা ভাঙ্গিয়া যাওয়ার কারনে কোন কাজ শ্রমিককে দিতে মালিকের ব্যর্থতা, অস্বীকৃতি বা অক্ষমতা।
===0===0===0===
No comments