স্বাস্থ্য রক্ষা ব্যবস্থা
দশম অধ্যায়
স্বাস্থ্য রক্ষা ব্যবস্থা (ধারা # ৫১-৬০)
পরিস্কার পরিচ্ছন্নতাঃ
১. ময়লা আবর্জনা অপসারনঃ আইনের ধারা ৫১(ক) অনুযায়ী ময়লা ও আবর্জনা অপসারণের উপযুক্ত পন্থা বলিতে ঢাকনা দেওয়া বাক্সে অপসারন করাকে বুঝাইবে। যাহাতে উক্ত আবর্জনা হইতে দূর্গন্ধ ছড়াইতে না পারে। ধাতব পদার্থ, উৎকট গন্ধময় তামাক, রাসায়নিক আবর্জনা ও মেডিকেল আবর্জনা ভিন্ন ভিন্ন বাক্সে অপসারন করিতে হইবে।
২. ধৌতকরণঃ আইনের ধারা ৫১(খ) অনুযায়ী ধৌত করা বলিতে প্রত্যেক কর্ম কক্ষের অবস্থা ভেদে এবং কাজের প্রকৃতি ভেদে উহা পানি দ্বারা ধৌত করা বুঝাইবে। অবস্থা ভেদে ভিজা কাপড় ধ্বারা মুছিয়া নেওয়াকেও বুঝাইবে। তবে সকল ক্ষেত্রেই প্রয়োজনবোধে জীবানুনাশক ব্যবহার করিতে হইবে।
৩. পানি নিস্কাশনঃ আইনের ধারা ৫১(গ) অনুযায়ী উৎপাদন প্রক্রিয়ার কারণে মেঝে বা কর্মকক্ষ ভিজিয়া যাওয়ার সম্ভাাবনা থাকিলে উক্ত মেঝে অবশ্যই অভেদ্য পদার্থ দ্বারা নির্মিত হইতে হইবে। উক্ত মেঝের নির্মান কৌশল ঢালু বিশিষ্ট এবং উপযুক্ত নিস্কাশন নালার মাধ্যমে কারখানার মূল নর্দমা ব্যবস্থার সহিত সংযুক্ত থাকিতে হইবে, যহাতে নিস্কাশিত পানি অথবা কোন তরল পদার্থ মেঝেতে জমিয়া থাকিতে না পারে।
৪. চুনকাম ও রং করাঃ আইনের ধারা ৫১(ঘ) অনুযায়ী প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সকল অভ্যন্তরীণ দেওয়াল এবং পর্টিশন সকল ছাদের নীচ বা কক্ষের এবং দেওয়ালের উপরিভাগ, চলাচল পথের এবং সিঁড়ির উভয় পাশ, রং বা বার্ণিশ করা থাকিলে এবং বহিঃভাগ মসৃণ ও অভেদ্য থাকিলে প্রতি ১৪ মাসে অন্ততঃ এক বার উহা পানি, ব্রাশ ও সাবান/ডিটারজেন্ট দিয়া পরিস্কার করিতে হইবে।
৫. আইনের ধারা ৫১(ঙ) অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার তারিখ ২০নং ফরমে রক্ষিত রেজিস্টারে লিখিয়া রাখিতে হইবে।
বায়ু চলাচল ও তাপমাত্রাঃ
১. আইনের ধারা ৫২ অনুযায়ী প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কর্মকক্ষে তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৫/৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখিতে হইবে এবং প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কর্মকক্ষে নির্মল বায়ু প্রবাহের সুবিধার্থে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিপরীতমুখী জানালার ব্যবস্থা থাকিতে হইবে।
২. আইনের ধারা ৫২ (২) অনুযায়ী প্রত্যেক কর্মকক্ষে অন্ততঃ একটি তাপ পরিমাপক যন্ত্র (থার্মোমিটার) সচল অবস্থায় রাখিতে হইবে এবং কর্মকক্ষের দেয়ালের দৃশ্যমান স্থানে উহা স্থাপন করিতে হইবে। পরিদর্শক কর্তৃক উহার নির্ভূলতা প্রত্যায়িত হবে।
৩. সূতা ও বয়ন কারখানার ক্ষেত্রে বিধি ২৮ য়ে বর্ণিত বিধান অনুসরন করিতে হইবে।
ধূলা বালি ও ধোয়াঃ
১) আইনের ধারা ৫৩ (১) বাস্তবায়নের জন্য প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে বা কর্মকক্ষে উৎক্ষিপ্ত ধুলা বালি ও ধোয়ার কার্যকর নির্গমনের লক্ষ্যে ‘ডাস্ট সাকার’ সহ উপযুক্ত নির্গমন যন্ত্র স্থাপন করিতে হইবে এবং উহা এমন ভাবে স্থাপন করিতে হইবে যেন কোন ক্রমেই ধুলা-বালি কিংবা ময়লা ফ্লোরে ছড়াইয়া না পড়ে। উপরন্তু এই সকল প্রতিষ্ঠানের কর্মরত প্রত্যেক ব্যক্তিকে মাস্ক ব্যবহার কিরতে হইবে।
২) প্রধান পরিদর্শক কর্মকক্ষে ধুলা বালি ও ধোয়া উৎক্ষিপনের সর্বোচ্চ মান নির্ধারন করিয়া দিতে পারিবেন।
বর্জ্য পদার্থ অপসারণঃ
১. আইনের ধারা ৫৪ অনুয়ায়ী সকল বর্জ্য অপসারনের ব্যবস্থা পরিবেশ সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট বিধান ও নির্দেশনা অনুযায়ী হইতে হইবে এবং গ্রহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে পরিবেশ ও সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র পরিদর্শকের নিকট দাখিল করিতে হইবে। পরিদর্শক প্রয়োজন মনে করিলে শ্রমিকের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করিয়া বর্জ্য অপসারনে অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দিতে পরিবেন।
২. নর্দমা নির্মান ও সংরক্ষনঃ তরল বর্জ্য ও পানি বহনকারী সকল নর্দমা অভেদ্য মালমশলা দ্বারা মজবুত ও টেকসহই ভাবে নির্মান করিতে হইবে, ইহাতে নিয়মিত পানি প্রবাহ রাখিতে হইবে এবং উক্ত বর্জ্য দূষনমুক্ত করিয়া অপসারন করিতে হইবে। নর্দমার উপরে শক্ত ঢাকনা স্থাপন করিতে হইবে।
৩. উপরোক্ত উভয় বিষয়ে সন্তুষ্ট হইয়া পরিদর্শক উক্ত কারখানার বর্জ্য অপসারনে গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে অনুমোদন প্রদান করিবেন।
সূতা ও বয়ন কারখানার তাপমাত্রা ও কৃত্রিম আর্দ্রকরন আইনের ধারা ৫২ ও ৫৫ অনুয়ায়ী
১. কৃত্রিম আর্দ্রকরণঃ নিম্নবর্ণিত উপায়ে
(ক) আর্দ্রতার মান নির্ধারন করিয়া;
(খ) কৃত্রিম ভাবে বাতাসের আর্দ্রতা বৃদ্ধির মাত্রা নিয়ন্ত্রন করিয়া
(গ) বাতাসের আদ্রতা সঠিকভাবে পরিমাপের এবং রেকর্ডভুক্ত করার নির্ধারিত পরিমানের নির্দেশ দিয়া এবং
(ঘ) কাজের ঘর গুলিতে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা এবং বাতাসের শীতল করার উপযুক্ত ব্যবস্থা নির্ধারন করিয়া কারখানার কাজ চালাইতে হইবে।
২. সুতাকলে কৃত্রিম আর্দ্রতা সৃষ্টিঃ সুতা কাটা বা বয়ন কারখানার কোন কক্ষে
(ঙ) কোন সময় উক্ত কক্ষের ড্রাই বাল্ব তাপমাত্রা ২৯.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস অতিক্রম করে গেলে সেই সময়ে বাষ্প দ্বারাঃ
(চ) কোন সময় হাইড্রোমিটারের ওয়েট বাল্ব রিডিং নিম্নবর্ণিত তফসিলে নির্দিষ্ট ড্রাই বাল্ব এর তুলনায় বেশি হলে অথবা নিম্ন তফশিলের পর প্রত্যশিত ২টি ড্রাই বাল্ব রিডিংয়ের মধ্যবর্তী রিডিং যখন উক্ত ড্রাই বাল্ব রিডিং সমুহের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ওয়েট বাল্ব রিডিং অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত কোন কৃত্রিম আদ্রতা সৃষ্টি করা যাইবে না
শর্ত হচ্ছে যেই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগে হাইড্রোমিটারের ওয়েট বাল্ব তাপমাত্রা এবং কক্ষের বাহিরে রক্ষিত হাইড্রোমিটার ওয়েট বাল্ব তাপমাত্রার পার্থক্য ২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের কম হয় সেখানে অনুচ্ছেদ
(খ) প্রযোজ্য হইবে না।
পরিবেশ স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা কমিটি নীতিমালা
ভুমিকাঃ শরীফ গ্রুপে ই,এইচ,এস (ঊঐঝ) কার্যক্রম সময়পযোগী এবং কর্মক্ষম করার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ এবং নির্ধারিত শ্রমিকদের সমন্বয়ে একটি ই এইচ এস কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটি ই এইচ এস সংক্রান্ত সকল কর্মকান্ড এবং প্রক্রিয়া এই কমিটি কর্তৃক নিরিক্ষা করতঃ প্রয়োগ করতে হবে। শরীফ গ্রুপের কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এই কমিটি গঠন করা হবে। নির্ধারিত বিরতির পর কমিটি তাদের কার্যক্রমের পর্যালোচনা করতঃ পরিস্থিতি উন্নয়নে ব্রত হবে।
১। উদ্দেশ্যেঃ
এই নীতিমালার উদ্দেশ্যে হচ্ছে ই এইচ এস (ঊঐঝ) কার্যক্রম বেগবান এবং কর্মক্ষম করতঃ অবস্থার উন্নয়ন।
২। গঠন প্রক্রিয়াঃ
ক) শরীফ গ্রুপে এ শ্রমিক ও কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে পরিবেশ স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা কমিটি গঠন করা হয়।
খ) শরীফ গ্রুপে এর ডিরেক্টর (এডমিন) এর নেতৃত্বে পরিবেশ স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা কমিটি পরিচালিত হয়। এক্ষেত্রে পরিবেশ কমিটির প্রধান হবেন এজিএম (এডমিন এন্ড এইচ আর), স্বাস্থ্য কমিটির প্রধান হবেন কারখানার কর্তব্যরত ডাক্তার এবং সেফটি কমিটির প্রধান হবেন কোম্পানীর সেফটি অফিসার। এই কমিটির সদস্যরা হবেন কারখানার বিভিন্ন সেকশনের মনোনীত ব্যাক্তিবর্গ।
৩। সদস্যদের যোগ্যতাঃ
ক) নৈমিত্তিক ও অস্থায়ী শ্রমিক ব্যতিত সকল স্থায়ী শ্রমিক, কর্মচারী এবং কর্মকর্তাগন পরিবেশ স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা কমিটির সদস্য হবার যোগ্যতা লাভ করবেন।
খ) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মনোনীত যে কোন স্থায়ী উর্দ্ধতন কর্মকর্তা কর্তৃপক্ষের পক্ষে পরিবেশ স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা কমিটির সদস্য হবার যোগ্যতা লাভ করবেন।
গ) কমিটির সদস্য সংখা হবে নূন্যতম ২০ জন।
৪। সময়কাল/মেয়াদঃ
পরিবেশ স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা কমিটি এর মেয়াদকাল এক মাস। উক্ত কমিটি প্রতি মাসেই পূর্নগঠন করা হয়।
৫। নির্বাচন/নিয়োগ পদ্ধতিঃ
ক) শ্রমিকদের পক্ষ থেকে সদস্য মনোনয়নের ক্ষেত্রে সকল সেকশন থেকে পর্যায়ক্রমে সদস্য মনোনীত করা হয়।
খ) এই কমিটিতে প্রশাসন থেকেও সদস্যদের মনোনয়ন করা হয়।
গ) শ্রমিক এবং প্রশাসন এর সদস্যগনকে সিলেকশনের মাধ্যমে মনোনীত করা হয়।
৬। কার্যক্রমঃ
ই এইচ এস কমিটি নিম্নবর্নিত কার্যক্রম সমাধা করবেন-
ক) PPE কি কি এবং কিভাবে এই গুলি ব্যবহার করবে তা সকলকে জানাবে।
খ) স্বাস্থ্য কি ? কিভাবে ভাল রাখা যায় তা সকলকে জ্ঞাত করবে।
গ) সংক্রামক রোগ গুলো কি কি ? কিসের মাধ্যমে এইগুলি ছড়ায় তা সকলকে জ্ঞাত করবে।
ঘ) কিভাবে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করা যায় তা সকলকে জানাবে।
ঙ) কর্মক্ষেত্রে পরিবেশ কি এবং তা কাজকে কিভাবে প্রভাবিত করে তা সকলকে জ্ঞাত করবে।
চ) কর্মক্ষেত্রে কি কি কারনে দুর্ঘটনা হয় তা সকলকে জ্ঞাত করবে।
ছ) কোন দুর্ঘটনা হলে তাৎক্ষনিক করনীয় বিষয়গুলি কি কি তা জ্ঞাত করবে।
জ) কিভাবে দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা যায় তা সকলকে জানাবে।
৭। প্রশিক্ষনঃ
ই এইচ এস কমিটি নিম্নবর্নিত পদ্ধতির মাধ্যমে প্রশিক্ষন পরিচালনা করবে।
ক) লেকচার
খ) মুক্ত চিন্তার ঝড়
গ) ব্যবহারিক
ঘ) প্রদর্শনী
ঙ) প্রশ্ন ও উত্তর
অগ্নি নিরাপদ পরিকল্পনা
সূচনাঃ বাংলাদেশের শ্রমনিবিড় শিল্পগুলোর মধ্যে ১০০% রপ্তানীমুখী তৈরী পোশাক শিল্প অন্যতম। দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী এ শিল্পে দেশের ৪০ লক্ষাধিক শ্রমিক সরাসরি সম্পৃক্ত, যাদের ৯০ শতাংশই নারী শ্রমিক। পোশাক শিল্পের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সদা সচেষ্ট এই বিপুল শ্রম-শক্তির সার্বিক কল্যাণে, কর্মক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তা বিধানে সকলের সু-দৃষ্টি, সম্মিলিত উদ্যোগ ও সচেতনতা অত্যাবশ্যক। তৈরী পোশাক শিল্প কারখানা এবং এ শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিক/কর্মচারীদের উন্নয়নে শরীফ গ্রুপ সদা জাগ্রত ও সচেষ্ট এবং এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে।
পোশাক শিল্পের কর্মরত সকল প্রিয় কর্মচারী/কর্মকর্তাদের জরুরী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন, অগ্নি প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা বৃদ্ধিকল্পে প্রচারপত্রটি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রাখবে।
অগ্নি নির্বাপন আদেশ
১। ভূমিকাঃ
বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প একটি অনন্য রপ্তানীমুখী প্রতিষ্ঠান। গুনগত মানের জন্য বিশ্বজুড়ে যার সুনাম রয়েছে। প্রতি বৎসর গার্মেন্টস শিল্প খাত থেকে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়ে থাকে। বিংশ শতাব্দীর নব্বই দশকে বাংলাদেশে গার্মেন্টস শিল্পের প্রসার খুবই ব্যাপক ও উৎসাহব্যঞ্জক। সম্প্রতি কিছু গার্মেন্টস শিল্পে সংঘটিত অগ্নিকান্ড ও দুর্ঘটনা দেশবাসীকে বিচলিত করেছে। এ প্রসঙ্গে অগ্নিকান্ড ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধ একান্ত জরুরী।
২। উদ্দেশ্যঃ
গার্মেন্টস শিল্পে অগ্নিকান্ড বা দূর্ঘটনা প্রতিরোধ এবং প্রতিকার প্রসঙ্গে কি কি করনীয় তার সম্যক ধারনা দেয়া।
৩। অগ্নিকান্ড বা দুর্ঘটনার কারন সমূহঃ
ক) এ যাবৎ কালে সংঘটিত সকল অগ্নিকান্ডের মূল কারন হিসাবে বৈদ্যুতিক “শর্ট সার্কিট” কে চিহ্নিত করা হয়েছে।
খ) বিড়ি/সিগারেট এর আগুন থেকে অগ্নিকান্ড হতে পারে।
গ) দিয়াশলাই, সিগারেটের লাইটার থেকে অগ্নিকান্ড ঘটতে পারে।
ঘ) যে কোন ধরনের বিস্ফোরক বা কেমিক্যালস থেকে অগ্নিকান্ড বা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
৪। অগ্নিকান্ড বা দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সতর্কতামুলক ব্যবস্থা সমূহঃ-
ক) অগ্নিকান্ড ঘটার সুযোগ না দেয়াই এর প্রতিরোধের প্রধান উপায়।
খ) পর্যাপ্ত পরিমান সচল অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র বিভিন্ন সুবিধাজনক পয়েন্টে মজুদ রাখা।
গ) অগ্নিকান্ডের সময় আত্মবিশ্বাসী হয়ে অগ্নিনির্বাপন যন্ত্রের ব্যবহার করা।
ঘ) বিড়ি, সিগারেট তথা ধুমপান সম্পূর্নভাবে নিষিদ্ধ করা।
ঙ) দিয়াশলাই বা সিগারেটের লাইটার সমেত ফ্যাক্টরীতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা।
চ) গ্যাস লাইন, বৈদ্যুতিক লাইন তথা বিভিন্ন ফিকচার ফিটিংস নিয়মিত পরিদর্শন করা এবং পরিদর্শন বইতে তা লিপিবদ্ধ করা।
ছ) ফ্যাক্টরীতে কেমিক্যালস ব্যবহারে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা।
জ) অগ্নিনির্বাপনের উপর নিয়মিত অনুশীলন/মহড়ার ব্যবস্থা গ্রহন করতঃ সকলকে সচেতন করা।
ঝ) প্রত্যেক ফ্লোর/সেকশনে পূর্বাহ্নে অগ্নিনির্বাপক দল এবং উদ্ধারকারী দল গঠন করা।
ঞ) ফ্যাক্টরী চলাকালীন প্রত্যেক গেটের/দরজায় তালা খোলা রাখা এবং তালাচাবি প্রশাসনিক কর্মকর্তার নিকট জমা রাখা। প্রশাসনিক কর্মকর্তা অবশ্যই তা নিশ্চিত করবেন।
ট) ফ্যাক্টরী বন্ধ হয়ে যাবার পর রুটিন মাফিক নিয়মিত চেক করা। উক্ত চেকের সময় এডমিন, সিকিউরিটি, ইলেকট্রিক এবং ষ্টোরের প্রতিনিধি থাকবে।
ঠ) প্রত্যেক সিঁড়িতে এবং প্রেত্যেক ফ্লোরের উভয় প্রান্তে জরুরী বাতি/চার্জার লাইটের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
ড) ফ্যাক্টরীতে অবস্থানরত গাড়ীগুলি সব সময় বর্হিমূখী করে পার্ক করতে হবে। যাতে স্বল্প সময়ে নিরাপদ অবস্থান গ্রহনসহ গাড়ী কর্তৃক কোন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি না হয়।
ঢ) ফ্লোরে নিয়ন্ত্রনের সুবিধার্থে পিএ ইকুইপমেন্ট/হ্যান্ড মাইকের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৫। অগ্নিকান্ডের বা দুর্ঘটনার সময় করনীয় বিষয় সমুহঃ
ক) আগুন লাগার সাথে সাথে সকলকে সতর্কীকরনের নিমিত্তে সাইরেন/কলিং বেল বাজিয়ে সতর্ক করতে হবে।
খ) যে ফ্লোরে আগুন লেগেছে সেই ফ্লোরের বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ অফ করে দিতে হবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফ্যাক্টরীর প্রধান সুইচও অফ করে দিতে হবে।
গ) অগ্নিনির্বাপক দল ও উদ্ধারকারী দল ব্যতীত মহিলা ও পুরুষগন ১/২ মিনিটের দ্রুততায় সিঁড়ি দিয়ে স্কেপ প্ল্যান অনুযায়ী বের হয়ে যাবে।
ঘ) নিরাপত্তার নিয়োজিত ব্যক্তিগন তৎক্ষনাৎ ফ্যাক্টরীর চারটি গেটের ভিতর এবং বাহিরে অবস্থান নিবে। বাহির থেকে কেহ যেন অনুপ্রবেশ করতে না পারে তার ব্যবস্থা নিবে অর্থাৎ কর্ডন পার্টি এই কাজ করবে। তাছাড়া মানুষ ও গাড়ী চলাচলের জন্য সম্মুখের রাস্তা উন্মুক্ত রাখবে।
ঙ) অগ্নিনির্বাপক দল কর্তৃক ফ্লোর/সেকশনে রক্ষিত অগ্নিনির্বাপন যন্ত্রের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
চ) অগ্নিনির্বাপক দল এবং উদ্ধারকরী দলকে আত্ববিশ্বাসী হয়ে কাজ করতে হবে।
ছ) ফ্লোর বা সেকশন থেকে লোকজন নেমে যাওয়ার পর উদ্ধারকারী দল দ্রুত দুর্ঘটনা কবলিতদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসক দলের কাছে নিয়ে যাবে এবং প্রয়োজনে ফ্যাক্টরীর চিকিৎসা কেন্দ্রে পৌছে দেবে।
জ) কাহারও গায়ের কাপড়ে আগুন লেগে গেলে তৎক্ষনাৎ ফ্লোরে গড়াগড়ি দিতে হবে। কোনক্রমেই দৌঁড়ানো যাবেনা।
ঝ) বাথরুম/টয়লেট ও বিল্ডিং-এর ছাদ চেক করতে হবে যাতে কোন লোক আটকা পড়ে না থাকে।
ঞ) কোনভাবেই সিঁড়ি ব্যতীত অন্য কোন ব্যবস্থায় নামবার চেষ্টা করবেনা।
ট) অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সঙ্গে উদ্ধারকারী দল দুর্ঘটনায় কবলিত মালামাল উদ্ধার করবে।
৬। প্রসাশনিক শাখা কর্তৃক করনীয় বিষয় সমূহঃ
ক) আহত লোকজনকে প্রয়োজন অনুযায়ী নিকটবর্তী হাসপাতালে প্রেরন করতে হবে। এ জন্য ১টি গাড়ীকে এ্যাম্বুলেন্স হিসাবে রেডি রাখবে।
খ) অনতিবিলম্বে ফায়ার ব্রিগেডকে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য টেলিফোন করতে হবে।
গ) আগুন লাগার সাথে সাথে থানায় প্রয়োজনীয় পুলিশের সহায়তার জন্য টেলিফোন করতে হবে।
৭। অগ্নিনির্বাপনের জন্য দল সমুহের সংগঠনঃ
ক) কর্ডন পার্টিঃ
নিরাপত্তায় নিয়োজিত সকল ব্যক্তিবর্গ।
অবস্থানঃ ফ্যাক্টরীর মেইনগেট ও রাস্তার উপরের মেইনগেট।
দায়িত্বঃ অনুপ্রবেশকারীকে প্রতিহত করা এবং সামনের রাস্তাটি গাড়ী চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখা, যাতে ফ্যাক্টরীর লোকজন নির্বিঘ্নে বাসায় গমন করতে পারে এবং ফায়ার ব্রিগেড, এ্যাম্বুলেন্স, পুলিশের গাড়ী চলাচল করতে পারে।
খ) অগ্নিনির্বাপনকারী দলঃ
প্রত্যেক ইউনিট/শাখা/সেকশনের প্রধানগণ অগ্নিনির্বাপনের সার্বিক দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের তত্ত্বাবধানে ও দলনেতার নেতৃত্বে অগ্নিনির্বাপক দল কাজ করবে। অগ্নিনির্বাপক দলের সংগঠন এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য সংযুক্ত ক্রোড়পত্রে সন্নিবেশিত হল।
গ) উদ্ধারকারী দলঃ
প্রথমে মানুষ এবং পরে মালামাল উদ্ধার করবে। উদ্ধারকারী দলের সংগঠন এবং দায়িত্ব কর্তব্য সংযুক্ত ক্রোড়পত্রে সন্নিবেশিত হল।
ঘ) প্রাথমিক চিকিৎসক দলঃ
দুর্ঘটনা কবলিতদের দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করবে।
ঙ) অগ্নিনির্বাপক দল, উদ্ধরকারী দল এবং প্রাথমিক চিকিৎসক দলের সংগঠন এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য বিভিন্ন ইউনিট/শাখা/সেকশন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সকল সংযুক্ত ক্রোড়পত্রে সন্নিবেশিত করা হল।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, নিজ ফ্লোরে অগ্নিকান্ড না ঘটিলে দলনেতার নির্দেশ ব্যতীত যে কোন দলের কোন সদস্য স্থান ত্যাগ করিবে না। দলনেতা পি.এম, জি.এম অথবা নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা পুর্বক পরবর্তী নির্দেশ প্রদান করবে।
৮। উপসংহারঃ
অগ্নিকান্ডের ক্ষতি ভয়াবহ ও অপূরণীয়। জান মালের হেফাজত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। অগ্নিকান্ড থেকে আমাদের বেঁচে থাকতে হলে অবশ্যই তা প্রতিরোধ করতে হবে। আল্লাহ না করেন যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটেই যায় তাহলে আমাদের সকলকে সম্মিলিতভাবে সাহসের সঙ্গে তা নির্বাপন বা মোকাবেলা করতে হবে।
দায়িত্ব ও কর্তব্য শরীফ গ্রুপ বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানীমুখি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান। সঠিক সময়ে পোশাক জাহাজীকরণ ও উন্নত মানসম্পন্ন পোশাক রপ্তানী করায় বাজারে ইহার অবস্থান উল্লেখযোগ্য। এই অভূতপূর্ব সাফল্য বজায় রাখতে সঠিক সময়ে উৎপাদনের বিকল্প নাই। আর এই সঠিক সময়ে উৎপাদনের জন্য চাই নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ। ফলে মেইনটেন্যান্স কো-অর্ডিনেটর হিসাবে তার প্রধানতম দায়িত্বই হল কারখানার প্রয়োজনে সর্বদা বিদ্যুৎ সরবরাহের নিশ্চয়তা বিধান করা।
স্বাস্থ বিধি
প্রতিষ্ঠানের কোন কর্ম পরিচালনায় কোন কর্মী সাংঘাতিক শারীরিক জখম বা ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সে ক্ষেত্রে পলমল শ্রম আইন অনুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহন করিয়া থাকে। এ বিষয়ে শরীফ গ্রুপের মেডিকেল সেকশন নিন্ম লিখিত রেজিষ্টার মেইনটেইন করে থাকে।
Sickness Analysis Log Book
No comments