কর্ম ঘন্টা ও ছুটি


ষষ্ঠ অধ্যায়

কর্ম ঘন্টা ও ছুটি

দৈনিক স্বাভাবিক কর্মঘন্টাঃ
১) প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিকের দৈনিক স্বাভাবিক কর্মঘন্ট হইবে ৮ ঘন্টা। আইনের ১০৮ ধারার বিধান মোতাবেক অধিক কাল ভাতা প্রধান স্বাপেক্ষে শ্রমিককে দিয় ১০ ঘন্টা পর্যন্ত কাজ করানো যাইবে তবে সে ক্ষেত্রে উক্ত শ্রমিকের সম্মতি থাকিতে হইবে এবং অধিককাল কাজ আরম্ভ হওয়ার ৪ ঘন্টা পূর্বে তাকে অবহিত করিতে হইবে। 
২) কোন প্রতিষ্ঠানের কর্মঘন্ট এবং অতিরিক্ত কাজ ও অধিককাল ভাতা বিষয়ে যদি শ্রমিকের জন্য অধিকতর সুবিধাজনক কোন চুক্তি বা নিস্পত্তি বা প্রথা বিদ্যমান থাকে তাহা হইলে উহা অব্যহত থাকিবে। 

ক্ষতিপূরণ মূলক সপ্তাহিক ছুটি
১) আইনের ১০৩ ধারা মোতাবেক কোন শ্রমিককে তাহার প্রাপ্য সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান করা সম্ভব না হইলে উক্ত শ্রমিককে তাহার উক্তরূপ ছুটি প্রাপ্য হওয়ার পরবর্তী ৩ কর্মদিবসের মধ্যে প্রদান করিতে হইবে। সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান না করিয়া কোন শ্রমিককে দিয়া একাধারে ১০ দিনের বেশি কাজ করানো যাইবেনা। 
২) আইনের ধানা ১০৪ এর বিধান অনুযায়ী অবহতিপ্রাপ্ত শ্রমিকগনের প্রাপ্য কোন ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি প্রাপ্য হওয়ার পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে প্রদান করিতে হইবে। 
৩) শ্রমিকের ক্ষতিপুরন মূলক ক্ষতি আরম্ভের অন্তঃত ৭ দিন পূর্বে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক উক্তরূপ ছুটির একটি বিজ্ঞাপন আইনের ১০৪ ধারা অনুসারে নোটিশ বোর্ডে লটকাইয়া রাখিবেন। উক্ত ছুটির বিজ্ঞপ্তিতে কোন পরিবর্তন আনয়নের প্রয়োজন দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট ছুটির তারিখের অন্তঃত তিন দিন পূর্বে উহা করিতে হইবে।
৪) পাওনা ক্ষতিপূরণ মূলক ছুটি ভোগ করার সুযোগ দেওয়ার আগে শ্রমিকের চাকুরী কোন ভাবেই অবসায়ন করা হইলে সে ক্ষেত্রে শ্রমিককে অন্যান্য পাওনা পরিশোধের সহিত তাহার অভোগকৃত ক্ষতিপূরণ মূলক ছুটির দিন গুলোর জন্য পূর্ন মজুরী প্রদান করিতে হইবে। 
৫) প্রতিষ্ঠানের মালিক ৩১নং ফরমে ক্ষতিপুরণমূলক ছুটির একটি রেজিষ্টার্ড সংরক্ষন করিবেন। সর্বশেষ তথ্য লিপিবদ্ধ করার তারিখ হইতে ৩ বছর পর্যন্ত উক্ত রেজিষ্টারটি সংরক্ষণ করিতে হইবে এবং পরিদর্শক চাহিবা মাত্র রেজিষ্টারটি তাহার কাছে উপস্থাপন করিতে হইবে।

অধিককাল ভাতার প্রয়োজনে ঘন্টা ভিত্তিক মজুরীর সাধারণ হার হিসাব করার পদ্ধতি
১) মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে ভিন্নরূপ কোন চুক্তির অবর্তমানে আইনের ১০৮ ধারা অনুসারে শ্রমিককে প্রদেয় ঘন্টা ভিত্তিক মজুরীর সাধারণ হার নি¤েœাক্ত ভাবে হিসাব করিতে হইবে। 
ক. দৈনিক মজুরীর ভিত্তিতে নিযুক্ত শ্রমিকের ক্ষেত্রে তাহার দৈনিক মজুরীর ১/৮ অংশ;
খ. সাপ্তাহিক মজুরীর ভিত্তিতে নিযুক্ত শ্রমিকের ক্ষেত্রে তাহার দৈনিক মজুরীর ১/৪৮ অংশ;
গ. মাসিক মজুরীর ভিত্তিতে নিযুক্ত শ্রমিকের ক্ষেত্রে তাহার দৈনিক মজুরীর ১/২০৮ অংশ;
* টিকাঃ ৫২/১২x৪৮ঘন্টা= ২০৮ ঘন্টা নিয়ে একটি মাস হবে।
* ঘন্টপ্রতি অধিককাল ভাতার হার= মাসিক মূল মজরী ও মহার্ঘ ভাতা এবং এডহক বা অন্তবর্তী মজুরীx২xওভারটাইম / ২০৮।
২) কোন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত শ্রমিককে দিয়ে অধিক কাল কাজ করানো হলে উক্ত অতিরিক্ত কাজের সময় উল্লেখ করিয়া প্রতিষ্ঠানের মালিক বা তৎকর্তৃক প্রাধিকারপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি শ্রমিককে প্রদত্ত কার্ড/স্লিপে স্বাক্ষর করিয়া কাজ শেষে শ্রমিককে প্রদান করিবেন।
৩) অধিকাল কাজ করানোর হিসাব ৩২ নং ফরমে রেজিষ্টারে সংরক্ষন করিতে হইবে।

মহিলা শ্রমিকের কাজের ঘন্টা
১) কোন মহিলা শ্রমিককে দিয়া রাত দশ ঘটিকা হইতে ভোর ৬ ঘটিকা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কাজ করাইতে হইলে উক্ত শ্রমিকের লিখিত সম্মতি ৩৩ নং ফরমে নিতে হইবে। যাহা সংশ্লিষ্ট মহিলা কর্তৃক লিখিত আবেদনের মাধ্যমে প্রত্যাহার না করা হইলে ১২ মাস পর্যন্ত কার্যকর থাকিবে।
২) মহিলা শ্রমিক কর্তৃক নৈশ পালায় কাজ করানোর সম্মতির তথ্য ৩৪নং ফরমে রেজিস্টারে সংরক্ষন করিতে হইবে।

ছুটির নীতি

কারখানায় কর্মরত সকল শ্রমিক ও কর্মচারীগনকে প্রচলিত আইনানুযায়ী নির্ধারিত ছুটি প্রদান করা হয়। তবে, ছুটি প্রদানের পূর্বে ছুটি গ্রহনের নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরন করা হয় এবং শ্রমিকগনকে এ বিষয়ে পূর্বেই অবহিত করা হয়।

ছুটি গ্রহন/প্রদানের পদ্ধতি

কোন শ্রমিক/কর্মী ছুটি নিতে চাইলে তিনি মালিকের নিকট নির্ধারিত আবেদন পত্র পূরণ বা লিখিত দরখাস্ত প্রদান করবেন।
দরখাস্ত পাওয়ার সাত (০৭) দিনের মধ্যে অথবা ছুটি শুরু হওয়ার তারিখের দুইদিন পূর্বে মালিক তার অনুমোদন করে থাকেন।
যদি প্রার্থিত ছুটি দরখাস্তের  তারিখে বা তিন দিনের মধ্যে শুরু করতে হয় তাহলে অনুুরূপ আদেশ দরখাস্ত প্রাপ্তির দিনেই প্রদান করা হয়ে থাকে।
যদি কোন শ্রমিকের ছুটির আবেদন স্থগিত হয় বা মঞ্জুর করা না হয় তবে সংশি¬ষ্ট শ্রমিককে প্রার্থিত ছুটি শুরুর পূর্বে  জানিয়ে দেয়া হয় এবং তার কারণ ও উদ্দেশ্য একটি রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়।
যদি কোন শ্রমিক ছুটিতে যাওয়ার পর ছুটির সময় বাড়াতে চান তবে ছুটি পাওনা থাকলে ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার যথেষ্ট আগে মালিকের কাছে দরখাস্ত বা আবেদন করতে হয় এবং বর্ধিত ছুটির আবেদন মঞ্জুর বা না মঞ্জুর তা মালিক কর্তৃক শ্রমিকের ঠিকানায় লিখিতভাবে জানিয়ে দেয়া হয়।
দরখাস্তের মধ্যে ছুটিকালীন সময়ে অবস্থানের ঠিকানা উল্লেখ থাকবে যাতে করে কর্তৃপক্ষ কোন কারণে যোগাযোগ করার প্রয়োজন হলে সমস্যা না হয়। 
ছুটি মঞ্জুর করার পর শ্রমিককে একটি ছুটির পাশ প্রদান করা হয়।

 
অব্যয়িত ছুটির মুজুরী প্রদান
যদি কোন শ্রমিকের চাকুরী ছাটাই, ডিসচার্জ, অপসারন, বরখাস্ত, অবসর, পদত্যাগ বা অন্য কোন কারণে অবসান হয় এবং যদি তার কোন বাৎসরিক ছুটি পাওনা থাকে তবে মালিক কর্তৃক শ্রমিকের পাওনা ছুটির পরিবর্তে ছুটিকালীন সময়ের জন্য উক্ত শ্রমিকের যে মুজুরী প্রাপ্য হবে তা প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে।

সাপ্তাহিক ছুটি
সপ্তাহে একদিন সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান করা হয়ে থাকে।

ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি
কোন জরুরী কারণে যদি সাপ্তাহিক দেয়া না হয় তবে অবস্থা অনুযায়ী যথা শীঘ্র সম্ভব উক্ত ছুটির সমসংখ্যক ছুটির ব্যবস্থা করা হয়।

নৈমত্তিক ছুটি
পূর্ণ মুজুরীতে বছরে ১০ দিন নৈমত্তিক ছুটি প্রদান করা হয়। শর্ত থাকে যে, নৈমত্তিক ছুটি কোন কারণে ভোগ না করলে তা পরবর্তী বছরে ভোগ করা যাবে না বা জমা রাখা যাবে না।

পীড়া ছুটি
পূর্ণ মুজুরীতে বছরে ১৪ দিন পীড়া ছুটি বা অসুস্থতাজনিত ছুটি প্রদান করা হয়। শর্ত থাকে যে, পীড়া ছুটি একজন রেজিস্টার চিকিৎসক কর্তৃক প্রত্যায়নকৃত হওয়া বাঞ্চনীয। অসুস্থতার ছুটি বা পীড়া ছুটি জমা রেখে পরবর্তী বছরে ভোগ করা যায় না।

বাৎসরিক বা অর্জিত ছুটি
একজন প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিককে প্রতি ১৮ দিন কাজের জন্য ০১ দিন পূর্ন মুজুরীসহ বাৎসরিক বা অর্জিত  ছুটি প্রদান করা হয়। শর্ত হচ্ছে যে, একজন শ্রমিক কোন কারখানায় অবিচ্ছিন্নভাবে এক বৎসর কাজ করলেই কেবল উক্ত ছুটি ভোগের অধিকারী হবেন।

উৎসব ছুটি
পূর্ণ মুজুরীসহ বছরে ১১ দিন উৎসব ছুটি প্রদান করা হয়।

মাতৃত্বকালীন ছুটি
প্রসব পূর্ববর্তী ০৮ সপ্তাহ এবং প্রসব পরবর্তী ০৮ সপ্তাহ প্রসবকালীন বা মাতৃত্বকালীন ছুটি প্রদান করা হয়। শর্ত হচ্ছে যে, একজন নারী শ্রমিকের কর্মকাল ০৬ মাস পূর্ন হলে তিনি এই ছুটি ভোগের অধিকারী হবেন। তবে ইহা শুধু প্রথম দুই (০২) টি সন্তানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
 
স্বপমেয়াদী ছুটি
কর্মীর যে কোন প্রয়োজনে কারখানা থেকে সেকশন প্রধানরা সল্প সময়ে জন্য ছুটি দিয়ে থাকে। এই ছুটিকে সল্প মেয়াদী ছুটি বলে।



===0===0===0===

No comments

Powered by Blogger.