পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ও নীতিমালা (Environmental Management System Policy & Procedure)




পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ও নীতিমালা
(Environmental Management System Policy & Procedure)

১. ভূমিকা (General Information)
মানুষ ও তার সকল কর্মকান্ড পরিবেশের উপাদান সমূহের উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল যেমন শুধুমাত্র মানুষের গঠন, আকার - আকৃতি, ব্যবহারই নয় কোন শিল্প কোথায় গড়ে উঠবে সেটাও নির্ভর করে। তাই প্রাণীকূলকে টিকিয়ে রাখার জন্য আধুনিক বিশ্বকে বাস যোগ্য করে গড়ে তোলা ও সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পরিবেশ ব্যবস্থাপনার উপর যন্তশীল হওয়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই। এরই ধারাবাহিকতায় ফ্যাক্টরীর ভিতর ও বাহিরে উপযুক্ত স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরে কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়াকে গতিশীল রাখতে শরীফ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত আন্তরিক। এছাড়া কারখানার কোন কর্মকান্ড ও উৎপাদন প্রক্রিয়া দ্বারা যেন কোনভাবেই পরিবেশ দূষণ না ঘটে সে ব্যাপারেও তারা অত্যন্ত সচেতন। আর তাই অত্র গ্রুপের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ যুগোপযোগী নিরাপদ পরিবেশ ব্যবস্থাপনা নীতি প্রনয়ণ ও বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। 

১.১ অঙ্গিকার (Commitment)
কারখানায় বিদ্যমান পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাবগুলো (Impact) কমানোর জন্য যুগোপযোগী দূষণমুক্ত নিরাপদ পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রনয়ণ ও বাস্তবায়নে মাধ্যমে কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়াকে গতিশীল রাখতে এবং পরিবেশ পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির ক্রমাগত উন্নতি সাধনে শরীফ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ দৃড়ভাবে অঙ্গিকারবদ্ধ। 

১.২ উদ্দেশ্য (Purpose)
টেকসই (Sustainable) পরিবেশ ব্যাবস্থাপনা পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে পরিবেশগত বিরূপ প্রভাব কমিয়ে এনে দূষণমুক্ত নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা এবং পরিবেশের আইন ও বিধি সমূহ বাস্তবায়ন করা।

১.৩ লক্ষ্য (Target)
আধুনিক প্রযুক্তির ব্যাবহার এবং পরিবেশের প্রতি সবার সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিবেশ ব্যাবস্থাপনায় নিন্মলিখিত লক্ষ্য অর্জনে কারখানা কর্তৃপক্ষ বদ্ধ পরিকর
  • সুনির্দিষ্ট পরিবেশ ব্যাবস্থাপনা পদ্ধতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কারখানায় বিদ্যমান পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব কমিয়ে আনা।
  • ২০২০ সালের মধ্যে অত্যাধুনিক ও টেকসই প্রযুক্তি ব্যাবহারের মাধ্যমে পরিবেশগত দক্ষতার তাৎপর্যপূর্ণ উন্নতি সাধন।
  • প্রাকৃতিক সম্পদ শক্তি, পানি ইত্যাদির ব্যাবহার কমানো।

১.৪ রেফারেন্স (Reference)
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ (সংশোধিত-২০১০)। পরিবেশ সংরক্ষন বিধিমালা- ১৯৯৭, পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ প্রতিবেদন বা Environmental Impact Assessment/Environmental Management Plan (EIA/EMP) এবং বায়ারের নীতিগত আচরন বিধি।

১.৫. পরিবেশ  ব্যবস্থাপনা  পদ্ধতি
পরিবেশ ব্যবস্থাপনা বলতে সেই পদ্ধতিকেই বুঝায় যা একটি প্রতিষ্ঠানকে পরিবেশ দূষণ ও এর প্রভাব সৃষ্টিকারী উপাদানগুলি নিয়ন্ত্রনে রাখতে সচেষ্ট রাখে। পরিবেশ ব্যাবস্থাপনা পদ্ধতির মূল উপাধানগুলো নিন্মরূপঃ
  • পরিবেশ নীতি
  • পরিকল্পনা
  • বাস্তবায়ন
  • নিরীক্ষণ 
  • ব্যাবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের পর্যালোচনা
  • ক্রমাগত উন্নয়ন
১.৫.১. মানব সম্পদ উন্নয়ণ
শরীফ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ণের মাধ্যমে উৎপাদন প্রক্রিয়াকে গতিশীল রাখা সহ  পরিবেশ ব্যবস্থাপনা নীতি প্রনয়ণ ও বাস্তবায়নে সদা সচেষ্ট। সেক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কারখানার সকল শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাকে  নিরাপদ ও স্বাস্থ্য সম্মত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা সহ  কিভাবে তা রক্ষা করা যায় সে বিষয়ের উপর যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা সহ  তার রেকর্ড সংরক্ষণের পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

১.৫.২. পরিবেশগত  বিরূপ প্রভাবসমুহ
কারখানায় বিদ্যমান পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণের জন্য পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ সমীক্ষা  বা Environmental Management Plan (EMP) করা হয়। এই প্রতিবেদনে যেই সকল তাৎপর্যপূর্ণ বিরূপ প্রভাব সমূহ চিহ্নিত করা হয় তা নিন্মরূপঃ
  • কঠিন বর্জ্য উৎপাদন।
  • প্রাকৃতিক স¤পদের অবক্ষয়।
  • গ্রীন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ এবং বায়ু দূষণ। 
  • শব্দ দূষণ, ইত্যাদি।
১.৫.২,১. কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
কারখানায় সৃষ্ট সকল ধরনের ক্ষতিকারক এবং সাধারন বর্জ্য সমূহ পরিবেশ সম্মত উপায়ে সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং অপসারণ করতে শরীফ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বদ্ধপরিকর। সব ধরনের বর্জ্যসমূহ তাদের প্রকারভেদে এবং তাদের ক্ষতিকারক দিক বিবেচনা করে সঠিক প্রক্রিয়ায় অপসারণ করা হয়। এছাড়াও বর্জ্য পদার্থের উৎপাদন যেন তুলনামূলক কম হয় সেজন্য সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করে তা বাস্তবায়ন করা হয়। 

১.৫.২.২. প্রাকৃতিক সম্পদের অবক্ষয়
শরীফ গ্রুপের কারখানার কার্যক্রম পরিচালনা করতে বিদ্যুৎ, ডিজেল, গ্যাস, পানি ইত্যাদি প্রাকৃতিক স¤পদ ব্যাবহার করে থাকে। প্রাকৃতিক স¤পদের সর্বোৎকৃষ্ট ব্যাবহার নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেয়া হয়। অভ্যন্তরীণ এবং থার্ড পার্টি দ্বারা জ্বালানী শক্তি নিরীক্ষা (Energy Audit), পানি নিরীক্ষা (Water Audit) ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এই অডিট গুলো থেকে প্রাপ্ত উপায়গুলো চিহ্নিত করা হয় এবং শরীফ গ্রুপের ব্যাবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সেই উপায়গুলো বিবেচনা করে একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এই নির্ধারিত লক্ষ্য বছর শেষে শরীফ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পর্যালোচনা করা হয়।  

১.৫.২.৩  বায়ু দূষণ রোধঃ
কারখানায় জ্বালানী শক্তির ব্যাবহারের ফলে সৃষ্ট ধোঁয়া পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ। জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যাবহার কমানোর মাধ্যমে বায়ুদূষণ হ্রাস করা এবং নবায়নযোগ্য শক্তির (সোলার প্যানেল) ব্যাবহার করে বায়ুদূষণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।  

১.৫.২.৪ শব্দ দূষণ রোধঃ
কারখানার যে সকল মেশিন উচ্চ শব্দ সৃষ্টি করে সেগুলো এমনভাবে  স্থাপন করা হয় যেন সেস্থানে কর্মরত বা আশেপাশের লোকজন কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না হতে পারে সে ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। উচ্চ শব্দ সৃষ্টিকারী সকল যন্ত্রের যথাযথ পরীক্ষা করে শব্দের মাত্রা নির্ধারন এবং রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয় । এছাড়াও মেশিনারিজ সমূহ নিয়মিত ইন্সপেকশন এবং রক্ষণাবেক্ষণ এর  মাধ্যমে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রন করা হয়।

২. নীতিমালা বাস্তবায়নঃ
শরীফ গ্রুপে পরিবেশ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রনয়ণ ও বাস্তবায়ন করার জন্য কারখানার প্রশাসন/মানব স¤পদ/কমপ্লায়েন্স/পরিবেশ ব্যবস্থানা/ইউটিলিটি/মেইনটেনেন্স বিভাগের কর্মকর্তারা দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন এবং দায়িত্বশীল কর্মকর্তাগন পদাধিকার ক্ষমতা বলে দায়িত্ব পালন করবেন । 
 
২.১ নিয়োজিত কর্মকর্তাদের অর্গানোগ্রাম চার্ট

২.২ পরিবেশ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা  প্রনয়ণ ও বাস্তবায়নের জন্য নিয়োজিত কর্মকর্তা ও কর্মীগনের দায়-দায়িত্ব ও সীমাবদ্ধতা

পরিচালক (এডমিন এন্ড কমপ্লায়েন্স):
কারখানার পলিসি কার্যকর করার জন্য নির্দেশনা প্রদান এবং নিয়মিত প্রতিবেদন সংগ্রহ করে ব্যবস্থাপনা পরিচালকে অবহিত করা এবং সুষ্ঠ ভাবে বাস্তবায়নের জন্য নিয়োজিত কর্মকর্তাগণের জবাবদিহির ব্যবস্থা করা।

সিনিয়র মহাব্যবস্থাপক /  মহাব্যবস্থাপক / উপ মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন/মানব স¤পদ/ কমপ্লায়েন্স):
পরিবেশ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা  প্রনয়ণ ও বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং নিয়মিত প্রতিবেদন সংগ্রহ করে নির্বাহী পরিচালক সহ উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা।নীতিমালা পরিবর্তন ও সংযোজন করার প্রয়োজন হলে তাহা সম্পন্ন করা।

ব্যবস্থাপক/সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন/মানবস¤পদ/ কমপ্লায়েন্স/ ইউটিলিটি এবং মেইনটেন্যান্স): 
ব্যবস্থাপক/সহকারী - ব্যবস্থাপক  এর প্রধান দায়িত্ব কারখানার পরিবেশ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা  প্রনয়ণ ও বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

অফিসার/সহ-ব্যবস্থাপক/ব্যবস্থাপক (ইএমএস):
নির্বাহী/সিনিয়র নির্বাহীর  প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য হল পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যে কোন সিন্ধান্ত বাস্তবায়ন সরাসরি তত্ত্ববধানের জন্য দায়িত্ব পালন করা। এছাড়াও বিভিন্য ধরনের সভা এবং প্রশিক্ষণ এর ব্যাবস্থা করবেন।

নির্বাহী/সিনিয়র নির্বাহী (প্রশাসন/মানব সম্পদ/ কমপ্লায়েন্স/ ইউটিলিটি এবং মেইনটেন্যান্স):
পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গৃহীত সিন্ধান্ত  বাস্তবায়ন করবেন।

৩। পদ্ধতি ও রুটিন (Procedure & Routine)
৩.১. নীতিমালা বাস্তবায়ন  (Policy Implementation)
৩.২ বাস্তবায়ণ রুটিন (Implementation Routines)
৪। যোগাযোগ ও বাস্তবায়ন (Communication & Implementation)

৪.১ যোগাযোগ  রুটিন  ৩.৩ অনুসরণ করা
৪.২ বাস্তবায়ন  রুটিন   ৩.২ অনুসরন করা

৫. ফিডব্যাক ও কন্ট্রোল (Feedback & Control)
পলিসি বাস্তবায়নে সংগঠনের সদস্যরা সঠিকভাবে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করছে কিনা, পলিসি বাস্তবায়নের পদ্ধতি ও রুটিন সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কিনা, যোগাযোগ ও বাস্তবায়নের সকল মাধ্যম সক্রিয় আছে কিনা, পলিসি বাস্তবায়নে অঙ্গীকার, উদ্দেশ্য, লক্ষ্য, রেফারেন্স সঠিকভাবে নির্ধারিত হয়েছে কিনা প্রভূতি বিষয়ের উপর অভ্যন্তরীন অডিট পরিচালিত হয়।এছাড়াও পলিসি বাস্তবায়নে যোগাযোগ ও পদ্ধতি সম্পর্কে সাধারণ শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মনোভাব, তাদের জানার পরিধি এবং প্রয়োগিক ক্ষেত্রে তাদের অংশগ্রহণের মাত্রা নিরুপণের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ শেষে মূল্যায়ন পত্রের মাধ্যমে বাস্তব অবস্থা অনুধাবন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। 
 


প্রস্তুতকারক                       মূল্যায়ণ ও অনুমোদনের সুপারিশকারী                         অনুমোদনকারী

                                                                ===0===0===0===

No comments

Powered by Blogger.