বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ সহায়িকা (Wastage Management Module)





বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ সহায়িকা
(Wastage Management Module)

উদ্দেশ্যঃ
উৎপাদনশীল কারখানায় নির্দিষ্ট কার্যক্রম বা¯তবায়নে নানা ধরনের বর্জ্য উৎপাদন হয় যা পরিবেশ, স্বাস্থ্য, জীবনের জন্য ঝুঁকির্পূন কারন বর্জ্যগুলো পানি, বায়ু, বাতাস, মাটি ইত্যাদির সাথে মিশে এগুলোকে দুষিত করে ফেলে। যথাযথভাবে এবং যথাসময়ে অপসারণ না করলে পরিবেশ ও স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করে। তাই ঝুঁকি ও দূষন মুক্ত, নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যসম্মত উন্নত কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করনে কারখানায় উৎপাদিত বর্জ্য সমূহ কার্যকরী ও পদ্ধতিগতভাবে অপসারণ করতে হবে।

বর্জ্য ব্যবস্থপনা প্রশিক্ষনের মূল উদ্দেশ্য গুলো হলঃ  
  • বর্জ্য ব্যাবস্থাপনা কি এবং কেন।
  • বর্জ্য ব্যাবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সমূহ এবং ব্যাক্তিগত সুরক্ষার উপকরন সমূহ।
  • বর্জ্যরে সঠিক শ্রেণী বিভাগ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সময় সম্ভাব্য জরুরী অবস্থায় করনীয়।
  • বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স¤পর্কিত আইন এবং অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যাবস্থাপনার ক্ষতিকর প্রভাবসমুহ।
  •  বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুফল এবং মান নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে পুনর্ব্যাবহারের বিকল্পসমুহ নিশ্চিত করা।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনাঃ
বর্জ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে চ‚ড়ান্ত অপসারন এবং পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরন পর্যন্তসব ধরনের কার্যক্রমই হচ্ছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। বর্জ্য সংগ্রহ করা, বর্জ্য অপসারন, বর্জ্য সংরক্ষণসহ সব ধরনের প্রক্রিয়ায় প্রচলিত আইন এবং বিধি সমূহ মেনে চলা সঠিক বর্জ্য ব্যাবস্থাপনার অন্তভর্‚ক্ত। 

বর্জ্য ব্যাবস্থাপনার সুফলঃ
  • কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করা, 
  • কারখানার শ্রমিক, করমকরতা-কর্মচারীদের সাস্থ ও সুরক্ষা,
  • সঠিক বর্জ্য ব্যাবস্থাপনার মাধ্যমে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়া
  • বর্জ্য পদার্থের উৎপাদন কমিয়ে আনার মাধ্যমে কাঁচামালের ব্যাবহার কমিয়ে আনা ইত্যাদি।
বর্জ্য ব্যাবস্থাপনা সম্পর্কিত প্রচলিত আইন এবং বিধিসমূহঃ
শরীফ গ্রুপ সদা-সর্বদাই জাতীয় আইন ও মূল্যবান ক্রেতাদের আচারণ বিধি ও চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে উৎপাদন প্রক্রিয়ার দ্বারা যাতে পরিবেশ দূষণ সহ কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও জান-মালের  উপর কোন প্রকার ক্ষতিকর প্রভাব না পড়ে এবং উৎপাদিত পন্য ব্যবহারের মাধ্যমেও যাতে কোন প্রকার স্বাস্থ্য ঝুঁকি কিংবা পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব না পড়ে সে ব্যাপারে সদা সচেষ্ট। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত দেশের প্রচলিত আইন ও বিধিসমুহ গুলো হলঃ
পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫
  • পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা -১৯৯৭
  • মেডিক্যাল বর্জ্য ব্যাবস্থাপনা বিধিমালা-২০০৮
  • লিড এসিড ব্যাটারি পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ এবং ব্যাবস্থাপনা নীতিমালা-২০০৬
  • National 3R Strategy for Waste Management (2nd Draft)- 2005/2010

সঠিক বর্জ্য ব্যাবস্থাপনা না করার কুফলঃ
সঠিক বর্জ্য ব্যাবস্থাপনা নিরাপদ পরিবেশ রক্ষার অন্যতম শর্ত। ত্রুটিপূর্ণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ফলে মানুষের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে যা নিন্মরূপঃ
  • সঠিক বর্জ্য ব্যাবস্থাপনা নিশ্চিত না করা গেলে বর্জ্য গুলো পানির সাথে মিশে পানি দূষণ করতে পারে।
  • বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর বর্জ্য মাটির সাথে মিশে মাটি দূষণ করতে পারে, এছাড়াও অপচনশীল বর্জ্য পদার্থ গুলো মাটিতে মিশে মাটির উর্বরতা কমিয়ে দেয়।
  • পচনশীল বর্জ্য পদার্থ গুলো থেকে দুর্গন্ধ ছড়ানো সহ বায়ু দূষণ ঘটায়, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ।
  • উপযুক্ত উপায়ে বর্জ্য অপসারন না করলে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
  • বর্জ্য ব্যাবস্থাপনা ভালো না হলে যে সকল বর্জ্যের আর্থিক মুল্য আছে সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বর্জ্য ব্যাবস্থাপনার সময় সম্ভাব্য জরুরী অবস্থায় করনীয়ঃ 
কারখানায় যে সকল বর্জ্য সমূহ উৎপন্ন হবে তার শ্রেণিবিভাগ অনুযায়ী জরুরী অবস্থায় করনীয় পদক্ষেপগুলো নিশ্চিত করতে হবে। সাধারন বা অ-ক্ষতিকারক বর্জ্য সমূহ সংগ্রহ বা অপসারণের সময় সাধারণত জরুরী অবস্থার সৃষ্টি হয় না। তবে ক্ষতিকারক বর্জ্যসমূহ সংগ্রহ বা অপসারণের জন্য বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে এবং যদি জরুরী অবস্থা সৃষ্টি হয় তবে তা নিন্মোক্ত উপায়ে মোকাবেলা করতে হবেঃ
ক্ষতিকারক বর্জ্য বা পরিত্যাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য পড়ে গেলে বা স্পিলেজ হলে অথবা কোন দুর্ঘটনা ঘটলে সর্বপ্রথম বর্জ্যটি শনাক্ত করতে হবে। শনাক্তকরণের জন্য ব্যাবহৃত লেবেল দেখতে হবে। 
দুর্ঘটনা হবার সাথে সাথে ঘটনাস্থলের আশে পাশের লোকজনকে সতর্ক করতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব ওই জায়গা থেকে সবাইকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিতে হবে। 
ক্ষতি হওয়া বর্জ্যটি অগ্নিদাহ্য হলে তৎক্ষণাৎ ওই এলাকার সব ধরনের বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে বা সুইচ অফ করতে হবে। আশে পাশের সকল অগ্নিদাহ্য পদার্থ যেমন ফেব্রিক, কাঠ, এয়ার কন্ডিশনার, রাসায়নিক দ্রব্য সহ অন্যান্য অগ্নিদাহ্য পদার্থ নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিতে হবে। 
বর্জ্যের ধরনের উপর নির্ভর করে ঘটনাস্থল মার্কিং করে দিতে হবে। এবং ওই যায়গায় সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষেধ (Restricted area/Lock Out) করে দিতে হবে। 
ওই সেকশনে কর্মরত সকল সদস্যদেরকে প্রযোজ্য পিপিই সমূহ পরিধান করে নিতে হবে। 
যদি সেটি ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্য (ডিজেল, মবিল, মেশিন অয়েল ইত্যাদি) হয় তবে এবসরবেন্ট ম্যাটেরিয়াল যেমন বালি দিয়ে স্পিলেজের স্থানটি ঘিরে দিতে হবে যাতে রাসায়নিক দ্রব্যটি ছড়িয়ে না পড়ে এবং স্পঞ্জ বা বালি দিয়ে কেমিক্যাল চুষে নিতে হবে। ব্যাবহৃত স্পঞ্জ অবশ্যই নির্দিষ্ট পাত্রে রাখতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে এবজরবেন্ট ম্যাটেরিয়ালটি যেন কোনভাবেই ক্ষতিকারক না (Non-Hazardous) হয়।
যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটে তবে দ্রুত শরীফ গ্রুপের নিজস্ব হেলথ সেফটি এবং সিকিউরিটি সার্ভিসকে অবহিত করতে হবে। বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা থাকলে পাবলিক হেলথ এবং সেফটি সার্ভিসকে অবহিত করতে হবে।
যদি কেউ আহত হয় তবে তাকে প্রয়োজন অনুসারে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে। প্রয়োজনে কারখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অধিক প্রয়োজনে আহত ব্যাক্তিকে হাসপাতালে প্রেরণ করতে হবে। 
বর্জ্য ব্যবস্থা (Wastage) সংরক্ষণ ও অপসারণ নীতিমালা

১. কারখানার সকল সেকশন থেকে উৎপাদিত বর্জ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষনঃ
  • উৎপাদিত বর্জ্যরে ধরন অনুযায়ী একটি তালিকা প্রস্তুত করে তা প্রদর্শন করতে হবে।
  • ঝুঁকিমূক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য আলাদা করে রাখতে হবে এবং এগুলো মিক্স করে রাখা যাবে না।
  • বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম প্রসিডিউর মোতাবেক সম্পন্ন হচ্ছে কিনা তা তদারকির জন্য একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তি নিযুক্ত করতে হবে।
  • কেন্দ্রিয় বর্জ্য অপসারণ স্টোরে জমাকৃত বর্জ্য নির্দিষ্ট সময় পর পর তালিকাভুক্ত ভেন্ডরের মাধ্যমে অপসারণ করতে হবে। ভেন্ডর উক্ত বর্জ্য পরিবহন এবং ব্যবস্থাপনা দ্বারা পরিবেশের কোন ক্ষতি করবে না এই মর্মে চুক্তি থাকতে হবে এবং তা নিশ্চিত করতে হবে।
  • কত দিন পর পর বর্জ্য অপসারণ করা হয় এবং অপসারিত বর্জ্যরে পরিমান, তারিখ ইত্যাদি বিষয় একটি রেজিষ্টারে সংরক্ষণ করতে হবে।
  • কারখানার ভেতরে কোথাও উন্মুক্ত স্থানে আবর্জনা ফেলা, পোঁড়ানো বা অস্বাস্থকর অবস্থায় রাখা সম্পুর্ণ নিষেধ।

২. বর্জ্য পানি শোধন প্রক্রিয়া ও টয়লেট ধৌতকরন প্রক্রিয়াঃ
  • সংশ্লিষ্ট সকলকে স্বাস্থ্যসম্মত ও পদ্ধতিগতভাবে টয়লেট ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা ও নির্দেশনা দিতে হবে।
  • প্রত্যেক টয়লেটে ব্যবহৃত টিস্যু, ন্যাপকিন, ক্লিনিং ম্যাটেরিয়ালস জমা রাখার জন্য বিন রাখতে হবে।
  • টয়লেটের বর্জ্য সমূহ একজন ক্লিনার দ্বারা নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর অপসারণ করে কেন্দ্রিয় অপসারণ স্টোরে জমা করতে হবে।
  • বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম প্রসিডিউর মোতাবেক সম্পনড়ব হচ্ছে কিনা তা তদারকির জন্য একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তি নিযুক্ত করতে হবে।
  • ইটিপি সার্বক্ষনিক চালু রেখে বর্জ্য পানি বাংলাদেশ পরিবেশ আইন এবং পরিবেশ সংরক্ষন বিধিমালা মোতাবেক ডিসচার্জকৃত পানির গুনাগুন বজায় রাখতে হবে।
  • সুবিধামত নির্দিষ্ট সময় পর পর তরল বর্জ্যে গুনগতমান ল্যাবে পরিক্ষা পুর্বক রিপোর্ট সংরক্ষন করা।
  • কেন্দ্রিয় বর্জ্য অপসারণ স্টোরে জমাকৃত বর্জ্য নির্দিষ্ট সময় পর পর তালিকাভুক্ত ভেন্ডরের মাধ্যমে অপসারণ করতে হবে। ভেন্ডর উক্ত বর্জ্য পরিবহন এবং ব্যবস্থাপনা দ্বারা পরিবেশের কোন ক্ষতি করবে না এই মর্মে চুক্তি থাকতে হবে এবং তা নিশ্চিত করতে হবে।
  • অপসারিত বর্জ্যরে পরিমান, তারিখ ইত্যাদি বিষয় একটি রেজিষ্টারে সংরক্ষণ করতে হবে।
৩. মেডিক্যাল সেকশনের বর্জ্য অপসারণ প্রক্রিয়াঃ
  • মেডিক্যাল সেন্টারের বর্জ্য সমূহ তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করতে হবে। যথাঃ –
ক. সাধারন বর্জ্য, যেমন-কাগজ, টিস্যু পেপার,ওষুদের প্যাকেট ইত্যাদি,
খ. সংক্রামক বর্জ্য, যেমন- ব্যান্ডেজের কটন, গজ, সুতা ইত্যাদি এবং
গ. সার্প মেটারিয়াল/ ধারালো বর্জ্য, যেমন- সুঁচ, সিঁরিঞ্জ, ভাঙ্গা কাঁচের বোতল ইত্যাদি ।
  • তিনটি আলাদা আলাদা বিনে তিন প্রকার বর্জ্যরে নাম লিখা লেবেল দ্বারা মার্ক করে দিতে হবে।
  • মেডিক্যাল বর্জ্য যেমন: বোতল/স্ট্রিপ, কটন/ ব্যান্ডেজ এবং সিঁরিঞ্জ/ নিডেল ইত্যাদি ধরণ অনুযায়ী আলাদা আলাদা বিনে জমা রাখতে হবে।
  • সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক ওয়ার্কার ও স্টাফকে নির্দিষ্ট বর্জ্য নির্দিষ্ট পাত্রে ফেলার জন্য নির্দেশনা দিতে হবে।
  • মেডিক্যাল সেন্টারে জমাকৃত বর্জ্য ১ (এক) দিনের বেশি মেডিক্যাল সেন্টারে জমা রাখা যাবে না। মেডিক্যাল সেন্টারে জমাকৃত বর্জ্য একজন তালিকাভুক্ত নির্ধারিত হা¯পাতাল অথবা অন্য কোন ডায়াগনস্টিক সেন্টার (যার মেডিক্যাল বর্জ্য অপসারণে লাইসেন্স আছে) দ্বারা নিয়মিত অপসারণ করতে হবে।
  • মেডিক্যাল বর্জ্য অপসারণের জন্য একটি রেজিষ্টার মেইনটেইন করতে হবে।
 
৪. ক্যান্টিন কক্ষের বর্জ্য অপসারণ প্রক্রিয়াঃ 
  • সংশ্লিষ্ট সকলকে স্বাস্থ্যসম্মত ও পদ্ধতিগতভাবে ক্যান্টিন কক্ষের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা ও নির্দেশনা দিতে হবে। 
  • ক্যান্টিন কক্ষের বর্জ্য জমা রাখার জন্য একাধিক কনটেইনার অথবা বিন রাখতে হবে। 
  • ক্যান্টিন কক্ষের বর্জ্যগুলো একজন ক্লিনার দ্বারা নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর অপসারন করে কেন্দ্রিয় অপসারণ স্টোরে জমা করতে হবে। 
  • বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম প্রসিডিউর মোতাবেক সম্পনড়ব হচ্ছে কিনা তা তদারকির জন্য একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তি নিযুক্ত করতে হবে। 
  • কেন্দ্রিয় বর্জ্য অপসারণ স্টোরে জমাকৃত বর্জ্য নির্দিষ্ট সময় পর পর তালিকাভুক্ত ভেন্ডরের মাধ্যমে অপসারণ করতে হবে। ভেন্ডর উক্ত বর্জ্য পরিবহন এবং ব্যবস্থাপনা দ্বারা পরিবেশের কোন ক্ষতি করবে না এই মর্মে চুক্তি থাকতে হবে এবং তা নিশ্চিত করতে হবে। 
৫. সার্প মেটারিয়াল অপসারণ প্রক্রিয়াসমূহঃ
  • সার্প মেটারিয়ালস জাতীয় বর্জ্য অন্যান্য বর্জ্য হতে আলাদা রাখতে হবে। 
  • ছিদ্রহীন শক্ত কনটেইনারে সার্প মেটারিয়ালস জাতীয় বর্জ্য রাখতে হবে । 
  • কনটেইনারের গায়ে অবশ্যই 'Sharp Only' লেখা থাকতে হবে। 
  • সার্প মেটারিয়ালস ব্যবহার করা হয় এমন প্রতিটি সেকশনে কনটেইনার রাখতে হবে। 
  • খালি হাতে সার্প মেটাল নাড়াচাড়া করা যাবে না, গøাভস, ডাস্ট প্যান এবং ঝাড়– ব্যবহার করতে হবে। 
  • কন্টেইনারের ঢাকনা ভালভাবে বন্ধ করে তা কেন্দ্রিয় ডিসপোজাল স্টোরে আলাদা করে রাখতে হবে। 
  • বর্জ্য জাতীয় সার্প মেটালের ব্র্যান্ড নেম সহ সঠিক পরিমান ইত্যাদি রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করতে হবে। বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম প্রসিডিউর মোতাবেক সম্পন্ন হচ্ছে কিনা তা তদারকির জন্য একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তি নিযুক্ত করতে হবে। 
  • কেন্দ্রিয় বর্জ্য অপসারণ স্টোরে জমাকৃত বর্জ্য নির্দিষ্ট সময় পর পর তালিকাভুক্ত ভেন্ডরের মাধ্যমে নিরাপদ অপসারণ নিশ্চিত করতে হবে। ভেন্ডর উক্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা দ্বারা কোন ক্ষতি করবে না এই মর্মে চুক্তি থাকতে হবে এবং তা নিশ্চিত করতে হবে। 
  • কত দিন পর পর বর্জ্য অপসারণ করা হয় এবং অপসারিত বর্জ্যরে পরিমান, তারিখ ইত্যাদি বিষয় একটি রেজিষ্টারে সংরক্ষণ করতে হবে। 
৭. কেমিক্যাল বর্জ্য অপসারণের প্রক্রিয়াসমূহঃ
  • অন্যান্য বর্জ্য হতে কেমিক্যাল বর্জ্য আলাদা রাখতে হবে। 
  • প্রতি সেকশনে পাত্রের গায়ে পঁচনশীল ও অপঁচনশীল, বিপজ্জনক, সাধারন বর্জ্য লিখে চিহ্নিত করে বিপজ্জনক চিহৃ সহ রাখতে হবে। প্রত্যেক ওয়ার্কার ও স্টাফকে সাধারন বর্জ্য যেমন কাপড়ের টুকরা, বস্তার বাধার সুতা বা রশি ইত্যাদি সাধারন বর্জ্য নির্দিষ্ট সাধারন বর্জ্য রাখার পাত্রে ফেলা এবং ঝুকিপূর্ন রাসায়নিক বর্জ্য যেমন কেমিক্যাল মিশ্রিত কাপড়, পলিথিন, সুতা, ইত্যাদি কেমিক্যালের সংস্পর্শে আসা বর্জ্য সমূহগুলো অবশ্যই “Hazardous Waste Bin” বা ঝুকিপূর্ন রাসায়নিক বর্জ্য রাখার পাত্র রাখতে হবে। 
  • ছিদ্রহীন কনটেইনারে কেমিক্যাল বর্জ্যসমূহ রাখতে হবে । 
  • কনটেইনারের গায়ে অবশ্যই ''Hazardous Waste Bin” বা ঝুকিপূর্ন রাসায়নিক বর্জ্য রাখার পাত্র লেখা থাকতে হবে। 
  • কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় এমন প্রতিটি সেকশনে কনটেইনার প্রদান করতে হবে। 
  • দূর্ঘটনা ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে অনুমোদি পলিসি বা এম এস ডি এস অনুসরণ করতে হবে। 
  • কেমিক্যাল কনটেইনার সিল করে তা কেন্দ্রিয় কেমিক্যাল বর্জ্য এলাকায় পাঠাতে হবে। 
  • বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম প্রসিডিউর মোতাবেক সম্পনড়ব হচ্ছে কিনা তা তদারকির জন্য একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তি নিযুক্ত করতে হবে। 
  • কেন্দ্রিয় বর্জ্য অপসারণ স্টোরে জমাকৃত বর্জ্য নির্দিষ্ট সময় পর পর তালিকাভুক্ত ভেন্ডরের মাধ্যমে অপসারণ করতে হবে। ভেন্ডর উক্ত বর্জ্য পরিবহন এবং ব্যবস্থাপনা দ্বারা পরিবেশের কোন ক্ষতি করবে না এই মর্মে চুক্তি থাকবে হবে এবং তা নিশ্চিত করতে হবে। 
  • অপসারিত বর্জ্যরে নাম, পরিমান, তারিখ ইত্যাদি বিষয় একটি রেজিষ্টারে সংরক্ষণ করতে হবে।
 
৮. ইটিপি স্লাজ অপসারনের প্রক্রিয়াঃ
  • ইটিপি স্লাজ একটি বিপজ্জনক বর্জ্য কারণ এটি কেমিক্যাল সহ বিভিন্ন ভারী ধাতব পদার্থের সমন্বয়ে তৈরী একপ্রকার অপদ্রব্য যা মানুষ সহ খোরা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। সুষ্ঠভাবে এর অপসারণ না হলে তা বিপজ্জনক হবে।
  • বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষন বিধিমাল ১৯৯৭ অনুযায়ী ৩-৬ মাস (ধরন অনুযায়ী) এ স্লাজ শুষ্ক, মাটি থেকে উঁচুতে, খোলা জায়গায় না রেখে সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সংরক্ষন করতে হবে। এর পরে তা যদি পরিবেশ বান্ধব হয় তা ল্যান্ডফিল, মাটি ভরাট বা সম্ভব হলে তা সার হিসাবে ব্যবহার করা হবে।
  • সাপ্তাহিক বা মাসিক ভিত্তিতে ইটিপির স্লাজ বেড থেকে প্রাপ্ত শুষ্ক স্লাজ সঠিক পিপিই পরিধান সহ বস্তা বন্দী করে প্রাথমিক স্লাজ সংরক্ষনাগারে সংরক্ষন করতে হবে।
  • অবশ্যই নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়া কেউ প্রবেশ করবে না।
  • মাস শেষে শরীফ গ্রুপের আসওয়াদ কম্পোজিট মিলস ইউনিট-১ এর সেন্ট্রাল বর্জ্য সংরক্ষনাগার ও অপসারনাগারে গেইট-পাশের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবে যা পরবর্তীতে মেসার্স কেয়া ব্রীকস এর নির্ধারিত সময়ে ডিসপোজ করা হবে।

৯. পি.পি.ই (PPE) ব্যবহার ,সংরক্ষণ ও ডিসপোজাল সিস্টেমঃ 

স্পট রিমুভিং রুমে কর্মরত সকল শ্র্রমিক ও স্টাফ  এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও কারখানার ঊর্জ্য অপসারণের কাজে নিয়োজিত সকল ক্লিনার, সুইপার ও ইনচার্জ সহ প্রত্যেককে কর্ম পরিবেশ উপযোগী সরবরাহকৃত পি.পি.ই (PPE) পরিধান করতে হবে। ব্যবহৃত সকল পি.পি.ই  নিজ দ্বায়িত্বে সংরক্ষণ ও যত্ন নিতে হবে। দীর্ঘ সময় ব্যবহারের পর নষ্ট হয়ে যাওয়া পি.পি.ই (চচঊ) নির্ধারিত সেকশন ইনচার্জ / সুপারভাইজারদের কাছে জমা দিয়ে নতুন পি.পি.ই (PPE) সংগ্রহ করতে হবে। এবং অব্যবহৃত পি.পি.ই (PPE) একটি নির্দিষ্ট স্থানে জমা করে নির্দিষ্ট সময় পর পরিবেশবান্ধব নিয়মে ডিসপোজ করা হবে যথা পচনশীল দ্রব্য হলে মাটি গর্ত করে পুঁতে রাখা এবং পচনশীল না হলে পুড়িয়ে ফেলা অথবা রিসাইক্লিং যোগ্য হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে চুক্তির মাধ্যমে হস্তান্তর করা সহ চালানের মাধ্যমে রেকর্ড সংরক্ষণ করা হবে।

১০. সৃষ্ট বর্জ্যসমুহ হ্রাসকরন পদ্ধতিঃ

হ্রাস করনঃ
কারখানা হতে উৎপাদিত বর্জ্যরে উৎস চিহিৃত করে পরিকল্পনা করতে হবে যেন বর্জ্য উৎপাদন কমানো যায় সেটা হতে পারে সচেতনা বৃদ্ধি করে অথবা ইঞ্জিনিয়ারিং পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে।
  • ওয়াশিং কারখার জন্য পানির ব্যবহার হ্রাস সব থেকে বড় উৎস যা আমরা হ্রাস করতে পারি।
  • সকলের মাঝে পানির ব্যবহারে সচেতন করা এবং ভবিষ্যতে এর বিরুপ প্রভাব সম্পর্কে জানিয়ে এই পানির ব্যবহার হ্রাস করতে পারি।
  • কেমিক্যাল ড্রাম আরো একটি বর্জ্য উৎপাদনের বড় উৎস। কেমিক্যালের যথাযত ব্যবহার ই পারে এর উৎস কমাতে এজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে।
  • কেমিক্যাল ব্যবহারে সচেতন হওয়া। কারন ওয়াশিং ফ্লোরে যেন কেমিক্যালের যথাযথ ব্যবহার হয় সেদিকে খেয়াল রাখা কারন কেমিক্যালের ব্যবহার সাসটেইনেবল হলেই আমরা কেমিক্যালে খালি ড্রাম বর্জ্যরে পরিমান হ্রাস করতে পারবো।
  • এমন আরো সেকশন আছে যেগুলো পর্যায়ক্রমে রুট কজ বের করে তার পরিমান কমাতে হবে।

পুনঃব্যবহারঃ
কারখানা থেকে উৎপাদিত বর্জ্য সমুহের মধ্যে কিছু বর্জ্য আছে যেগুলোকে সুষ্ঠভাবে পরিকল্পনার সাথে কাজ করলে তা পুনরায় ব্যবহার করা যায়। 
  • পেপারঃ এক পাশ ব্যবহার করা কাগজ ফেলে না দিয়ে তার অপর পৃষ্ঠা ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • ফেলে দেয়া পিভিসি পাইপ, জি আই পাইপ এগুলো হালকা মেরামত করে তা অন্যকাজে লাগানো যেতে পারে।
  • খালি কেমিক্যাল ড্রাম (ভালো ভাবে ধুয়ে ) যা কারখানায় ও পরিবেশের জন্য বৃক্ষরোপনে অগ্রনী ভুমিকা রাখতে পারে।
  • ইটিপি স্লাজ যদি স্বাস্থসম্মত হয় তবে আমরা জমিতে সার হিসাবে ব্যবহার করতে পারি।

পুনঃপ্রক্রিয়া জাত করনঃ
কারখানা হতে প্রাপ্ত বর্জ্য যদি এমন হয় যে তা আবার পুনরায় ঐ একই রকম পন্য বানানো যায় তবে তার সকল প্রকার পরিকল্পনা এবং তদারকি নেয়া যাতে করে এক দিকে যেমন তা পুনরায় ব্যবহার হলো, অন্যদিকে কম খরচে তা কারখানায় ব্যবহার হবে। 

কারখানার সকলের সাথে এ বিষয়ে পুনঃপ্রক্রিয়া পুনঃব্যবহার ও হ্রাস করণ পলিসি নিয়ে আলোচনা করা হয়।

===0===0===0===

No comments

Powered by Blogger.